স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন

মামলা
Spread the love

স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন

মামলা

যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৮২ সনের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সনের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারীকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১ তে সুপ্রীমকোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবংযেহেতু ২০১৩ সনের ৭ নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়; এবংযেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবংযেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Acquisition and Requisition of Immovable Property Ordinance, 1982 (Ordinance No. II of 1982) রহিতক্রমে যুগোপযোগী করিয়া পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল : –

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন

১। (১) এই আইন স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন, ২০১৭ নামে অভিহিত হইবে।

(২) এই আইন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা

২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে -(১) ‘‘অধিগ্রহণ’’ অর্থ ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন বা উভয়ের বিনিময়ে প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থার জন্য কোনো স্থাবর সম্পত্তির স্বত্ব ও দখল গ্রহণ;(২) ‘‘আরবিট্রেটর’’ অর্থ ধারা ২৯ এর অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো আরবিট্রেটর;(৩) ‘‘কমিশনার’’ অর্থে বিভাগীয় কমিশনার এবং অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন;(৪) ‘‘জাতীয় গুরত্বপূর্ণ প্রকল্প’’ অর্থ সরকার কর্তৃক জাতীয় গুরত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসাবে ঘোষিত কোনো প্রকল্প;(৫) ‘‘জেলা প্রশাসক’’ অর্থে জেলা প্রশাসক এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা, ক্ষেত্রমত, জেলা প্রশাসক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো কর্মকর্তাও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন;(৬) ‘‘দেওয়ানি কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Civil Procedure, 1908 (Act V of 1908);(৭) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;(৮) ‘‘প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা’’ অর্থ স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ বা হুকুম দখলের জন্য প্রস্তাবকারী সরকারি বা বেসরকারি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা;(৯) ‘‘মালিক’’ অর্থে কোনো স্থাবর সম্পত্তির স্বত্বাধিকারী ও বৈধ দখলকারও অন্তর্ভুক্ত হইবেন;(১০) ‘‘যৌথ তালিকা’’ অর্থ অধিগ্রহণ বা হুকুম দখলের জন্য প্রস্তাবিত ভূমির উপর বিদ্যমান স্বত্ব বা অধিকার এবং উহার উপরিস্থিত অবকাঠামো, ফসল ও বৃক্ষরাজিসহ সকল বিষয়ের বিবরণ সংবলিত তালিকা;(১১) ‘‘স্থাবর সম্পত্তি’’ অর্থ কোনো ভূমি এবং উহাতে স্থায়ীভাবে সংযুক্ত যে কোনো কিছুর স্বত্ব বা অধিকার;(১২) ‘‘স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি’’ অর্থ স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ বা হুকুম দখলের কারণে প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন বা উভয়ের দাবিদার বা দাবি করিবার যোগ্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান; এবং(১৩) ‘‘হুকুম দখল’’ অর্থ প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থার জন্য ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে সাময়িকভাবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোনো স্থাবর সম্পত্তির দখল গ্রহণ।

আইনের প্রাধান্য

৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।

দ্বিতীয় অধ্যায়

অধিগ্রহণ

স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণের জন্য প্রাথমিক নোটিশ জারি

৪। (১) জেলা প্রশাসকের নিকট কোনো স্থাবর সম্পত্তি জনপ্রয়োজনে বা জনস্বার্থে আবশ্যক মর্মে প্রতীয়মান হইলে তিনি উক্ত সম্পত্তি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হইয়াছে উল্লেখ করিয়া উক্ত সম্পত্তির উপর বা সম্পত্তির নিকটবর্তী সুবিধাজনক স্থানে, নির্ধারিত ফরম ও পদ্ধতিতে, নোটিশ জারি করিবেন।(২) বেসরকারি ব্যক্তি বা সংস্থার জন্য স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে, স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ যাহাই হউক না কেন, অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া আরম্ভের পূর্বে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।(৩) জেলা প্রশাসক, উপ-ধারা (১) এর অধীন -(ক) নোটিশ জারির পূর্বে, নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে, অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তির প্রকৃত অবস্থা ও প্রকৃতি এবং উপরিস্থিত অবকাঠামো, ফসল ও বৃক্ষরাজিসহ সকল কিছুর ভিডিও ও স্থিরচিত্র অথবা অন্য কোনো প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ধারণ করত উহাদের বিবরণী প্রস্তুত করিবেন; এবং(খ) নোটিশ জারির পর, নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে, প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সহিত যৌথভাবে একটি যৌথ তালিকা প্রস্তুত করিবেন।(৪) বাস্তবে কোনো জমির রেকর্ডিয় শ্রেণি পরিবর্তিত হইলে জেলা প্রশাসক, যৌথ তালিকা প্রস্তুতকালে, উক্ত শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন।(৫) অবৈধভাবে লাভবান হইবার নিমিত্ত অধিগ্রহণাধীন বা অধিগ্রহণ হইতে পারে এমন ভূমির উপর জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্যে কোনো ঘরবাড়ি বা অবকাঠামো নির্মাণ করা হইয়াছে কিনা বা নির্মাণাধীন কিনা তাহা, জেলা প্রশাসক, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, যৌথ তালিকায় উল্লেখ করিবেন।(৬) উপ-ধারা (৩) এর দফা (খ) এর অধীন প্রস্তুতকৃত যৌথ তালিকা স্থানীয় ভূমি অফিসের নোটিশ বোর্ডে এবং প্রকল্পের সুবিধাজনক স্থানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করিতে হইবে।(৭) অধিগ্রহণাধীন বা অধিগ্রহণ হইতে পারে এমন ভূমির উপর, উপ-ধারা (৩) এর দফা (ক) এর অধীন কার্যক্রম গ্রহণের পর, অসদুদ্দেশ্যে নির্মিত বা নির্মাণাধীন ঘরবাড়ি বা অবকাঠামোর দ্বারা সংশ্লিষ্ট ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করা হইলে, উক্তরূপ পরিবর্তন জেলা প্রশাসক যৌথ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করিবেন না।(৮) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (৭) এর অধীন জেলা প্রশাসক কর্তৃক গৃহীত কোনো সিদ্ধান্তের দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইলে, পরবর্তী ৭(সাত) কার্যদিবসের মধ্যে, কমিশনারের নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবেন।(৯) কমিশনার, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উপ-ধারা (৮) এর অধীন প্রাপ্ত আপিল শুনানি করিবেন এবং পরবর্তী ১৫(পনের) কার্যদিবস অথবা, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে, ১০(দশ) কার্যদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন।(১০) উপ-ধারা (৯) এর অধীন কমিশনার কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।(১১) উপ-ধারা (৯) এর অধীন কোনো আপিল নিষ্পত্তি হইলে অথবা উপ-ধারা (৮) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে আপিল করা না হইলে, পরবর্তী ২৪(চব্বিশ) ঘণ্টার মধ্যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তি হইতে সকল অবৈধ ঘরবাড়ি বা অবকাঠামো নিজ খরচে অপসারণ করিবেন; অন্যথায় জেলা প্রশাসক প্রচলিত বিধি-বিধান মোতাবেক উহা উচ্ছেদের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।(১২) জেলা প্রশাসক, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থান নির্বাচনের পর, আদেশ দ্বারা, সংশ্লিষ্ট এলাকার জমি ক্রয় বিক্রয় ও জমিতে অবকাঠামো তৈরির বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করিতে পারিবেন।(১৩) সাধারণভাবে ধর্মীয় উপাসনালয়, কবরস্থান এবং শ্মশান হিসাবে ব্যবহৃত কোনো ভূমি অধিগ্রহণ করা যাইবে না:তবে শর্ত থাকে যে, জনপ্রয়োজনে বা জনস্বার্থে একান্ত অপরিহার্য হইলে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রত্যাশিত ব্যক্তি বা সংস্থার অর্থে স্থানান্তর ও পুনঃনির্মাণ সাপেক্ষে কেবল উক্ত সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা যাইবে।ব্যাখ্যা।- এই ধারায় ‘‘জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্য’’ বলিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা প্রদান, বিঘ্ন সৃষ্টি বা বিলম্বিত করিবার লক্ষ্যে কোনো কাজ বা ব্যবস্থা গ্রহণক্রমে ক্ষতিপূরণ হিসাবে বা অন্য কোনোভাবে আর্থিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যকে বুঝাইবে।

মামলা

অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আপত্তি

৫। (১) ধারা ৪ এর অধীন নোটিশ জারির ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের নিকট আপত্তি দাখিল করিতে পারিবেন।(২) জেলা প্রশাসক, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত আপত্তি, আপত্তিকারী বা তদ্‌কর্তৃক মনোনীত প্রতিনিধির উপস্থিতিতে, দ্রুত শুনানি করিবেন, এবং উক্ত শুনানি বা প্রয়োজনে পুনরায় অনুসন্ধানের পর, উক্ত আপত্তি সম্বন্ধে তাহার মতামতসহ একটি প্রতিবেদন, সাধারণ ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়সীমা অতিক্রান্ত হইবার পর ৩০(ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে এবং জাতীয় গুরত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ১৫(পনের) কার্যদিবসের মধ্যে, প্রস্তুত করিবেন।(৩) জেলা প্রশাসক, -(ক) স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৫০(পঞ্চাশ) বিঘার (১৬.৫০ একর) ঊর্ধ্বে হইলে তাহার মতামত সংবলিত প্রতিবেদনসহ নথি ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের জন্য প্রেরণ করিবেন; এবং(খ) স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৫০(পঞ্চাশ) বিঘার (১৬.৫০ একর) নিম্নে হইলে তাহার মতামত সংবলিত প্রতিবেদনসহ নথি কমিশনারের নিকট সিদ্ধান্তের জন্য প্রেরণ করিবেন:তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো আপত্তি দাখিল করা না হইলে, জেলা প্রশাসক, সাধারণ ক্ষেত্রে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত সময়ের পরবর্তী ১০(দশ) কার্যদিবসের মধ্যে অথবা কমিশনারের লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে ৩০(ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে এবং জাতীয় গুরত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ১৫(পনের) কার্যদিবসের মধ্যে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন, এবং এতদ্বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

আইন

অধিগ্রহণ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

৬। (১) ধারা ৫ এর উপ-ধারা (৩) এর অধীন জেলা প্রশাসক কর্তৃক প্রেরণকৃত প্রতিবেদন বিবেচনার পর, ক্ষেত্রমত, -(ক) সরকার উক্ত প্রতিবেদন দাখিলে অনূর্ধ্ব ৬০(ষাট) কার্যদিবসের মধ্যে, এবং(খ) কমিশনার উক্ত প্রতিবেদন দাখিলের ১৫(পনের) কার্যদিবসের মধ্যে অথবা এতদুদ্দেশ্যে লিখিতভাবে কারণ উল্লেখ করিয়া অনূর্ধ্ব ৩০(ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে –চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।(২) সরকার, কমিশনার বা, ক্ষেত্রমত, জেলা প্রশাসক কর্তৃক, উপ-ধারা (১) অথবা ধারা ৫ এর উপ-ধারা (৩) এর অধীন, স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণে গৃহীত সিদ্ধান্ত জনপ্রয়োজন বা জনস্বার্থে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নোটিশ প্রদান

৭। (১) সরকার, কমিশনার বা, ক্ষেত্রমত, জেলা প্রশাসক কর্তৃক, ধারা ৫ বা ধারা ৬ এর অধীন কোনো স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হইলে, জেলা প্রশাসক তদ্‌মোতাবেক দখল গ্রহণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করিয়া নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির উপর বা উহার নিকটবর্তী সুবিধাজনক ও দৃষ্টিগ্রাহ্য স্থানে একটি সাধারণ নোটিশ জারি করিবেন।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশে অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবকৃত স্থাবর সম্পত্তির বিবরণ এবং উক্ত সম্পত্তির স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অথবা তাহার মনোনীত প্রতিনিধিকে নোটিশ জারির ১৫(পনের) কার্যদিবস অথবা জাতীয় গুরত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ৭(সাত) কার্যদিবস পর জেলা প্রশাসকের নিকট নোটিশে বর্ণিত সময় এবং স্থানে হাজির হইতে হইবে এবং উক্ত সম্পত্তিতে তাহাদের প্রত্যেকের দাবির পরিমাণ এবং ক্ষতিপূরণে তাহাদের স্বত্বের অংশ উল্লেখ করিতে হইবে মর্মে বর্ণনা থাকিতে হইবে।(৩) অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবকৃত স্থাবর সম্পত্তির দখলকার, যদি থাকে, এবং জ্ঞাত বা বিশ্বাসযোগ্য সকল স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর নির্ধারিত ফরমে একই পদ্ধতিতে নোটিশ জারি করিতে হইবে।(৪) জেলা প্রশাসক নোটিশের মাধ্যমে, নোটিশ জারির ১৫(পনের) কার্যদিবস অথবা জাতীয় গুরত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ৭(সাত) কার্যদিবস পর, নোটিশে উল্লিখিত স্থানে সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তিতে অথবা উহার কোনো অংশে অংশীদার হিসাবে, বা বন্ধকগ্রহীতা হিসাবে অথবা অন্য কোনো উপায়ে কোনো দাবি থাকিলে এবং উক্ত দাবির প্রকার, দাবিদারগণের নাম এবং দাবির ফলে প্রাপ্ত বা প্রাপ্য লভ্যাংশ বর্ণনাসহ যথাসম্ভব বাস্তবভিত্তিক একটি বিবরণী যে কোনো স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে দাখিল বা হস্তান্তর করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।(৫) এই ধারায় বর্ণিত বিবরণী দাখিল বা হস্তান্তর করিবার জন্য আদেশপ্রাপ্ত প্রত্যেক ব্যক্তি Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860) এর section 175 এবং 176 এর মর্মানুযায়ী উক্ত বিবরণী দাখিল বা হস্তান্তর করিবার জন্য আইনত বাধ্য বলিয়া গণ্য হইবেন।

জেলা প্রশাসক কর্তৃক রোয়েদাদ প্রস্তুত

৮। (১) জেলা প্রশাসক, ধারা ৭ এর অধীন নোটিশে শুনানির জন্য কার্য তারিখে অথবা অন্য কোনো মুলতবি তারিখে, ধারা ৪ এর অধীন নোটিশ জারির সময় স্থাবর সম্পত্তির মূল্য এবং ক্ষতিপূরণের জন্য দাবিদারগণের পরস্পরের দাবি এবং দাবিকৃত অংশের বিষয়ে অনুসন্ধান করিবেন এবং নিম্নবর্ণিত বিষয়ে একটি রোয়েদাদ প্রস্তুত করিবেন, যথা :-(ক) স্থাবর সম্পত্তির জন্য যে পরিমাণ ক্ষতিপূরণ তাহার বিবেচনায় প্রদান করা হইবে; এবং(খ) অধিগ্রহণ প্রস্তাবাধীন মৌজার সর্বশেষ জরিপের রেকর্ড ও প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত সম্পত্তিতে সকল জ্ঞাত এবং আইনানুগ দাবিদারগণের ক্ষতিপূরণের অংশ।(২) জেলা প্রশাসক কর্তৃক উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রস্তুতকৃত রোয়েদাদ, এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধির বিধানাবলি সাপেক্ষে, চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।(৩) ক্ষতিপূরণের মঞ্জুরি (award) প্রস্তুতির তারিখ হইতে ৭(সাত) কার্যদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসক -(ক) স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মঞ্জুরির নোটিশ প্রদান করিবেন; এবং(খ) প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ মঞ্জুরির প্রাক্কলন প্রেরণ করিবেন।(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রাক্কলন প্রাপ্তির ১২০ (একশত বিশ) কার্যদিবসের মধ্যে প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ মঞ্জুরির অর্থ, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, জেলা প্রশাসকের নিকট জমা প্রদান করিতে হইবে।(৫) ধারা ৭ এর অধীন নোটিশ জারির পর ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবস অথবা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে প্রাক্কলন প্রস্তুতির কার্যক্রম সম্পন্ন করিতে হইবে।

ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়াবলি

৯। (১) এই আইনের অধীনে অধিগ্রহণযোগ্য কোনো স্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করিবার সময় জেলা প্রশাসক নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করিবেন, যথা :-(ক) ধারা ৪ এর অধীন নোটিশ জারির সময় সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির বাজার মূল্য :তবে শর্ত থাকে যে, বাজার মূল্য নির্ধারণের সময় উক্ত স্থাবর সম্পত্তির পারিপার্শ্বিক এলাকার (vicinity) সমশ্রেণির এবং সমান সুবিধাযুক্ত স্থাবর সম্পত্তির ধারা ৪ এর অধীন নোটিশ জারির পূর্বের ১২ (বার) মাসের গড় মূল্য নির্ধারিত নিয়মে হিসাব করিতে হইবে;(খ) যৌথ তালিকা প্রস্তুতের সময় স্থাবর সম্পত্তির উপর দণ্ডায়মান যে কোনো ফসল বা বৃক্ষের জন্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ক্ষতি;(গ) অধিগ্রহণের কারণে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিদ্যমান অপর স্থাবর সম্পত্তি হইতে প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তি বিভাজনের ফলে সৃষ্ট ক্ষতি;(ঘ) অধিগ্রহণের কারণে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অন্যান্য স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বা উপার্জনের উপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাবের ফলে সৃষ্ট ক্ষতি; এবং(ঙ) অধিগ্রহণের কারণে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাহার আবাসস্থল বা ব্যবসা কেন্দ্র স্থানান্তর করিতে বাধ্য করা হইলে উক্তরূপ স্থানান্তরের জন্য যুক্তিসংগত খরচাদি।(২) সরকারি কোনো প্রয়োজনে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) তে বর্ণিত বাজারদরের উপর অতিরিক্ত শতকরা ২০০ (দুইশত) ভাগ ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে:তবে শর্ত থাকে যে, বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে উক্ত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে বাজারদরের উপর অতিরিক্ত শতকরা ৩০০(তিনশত) ভাগ।(৩) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ), (গ), (ঘ) এবং (ঙ) তে বর্ণিত ক্ষতির ক্ষেত্রে বাজারমূল্যের উপর অতিরিক্ত শতকরা ১০০ (একশত) ভাগ ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।(৪) এই ধারায় উল্লিখিত ক্ষতিপূরণ প্রদান ব্যতীত, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, অধিগ্রহণের কারণে বাস্তচ্যুত পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।

ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে যে সকল বিষয় বিবেচ্য নয়

১০। এই আইনের অধীন অধিগ্রহণযোগ্য কোনো স্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করিবার সময় জেলা প্রশাসক নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করিবেন না, যথা :-(ক) অধিগ্রহণের আবশ্যকতার মাত্রা;(খ) অধিগ্রহণযোগ্য স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করিবার ক্ষেত্রে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনিচ্ছা;(গ) বেসরকারি কোনো ব্যক্তির দ্বারা সাধিত এইরূপ কোনো ক্ষতি যাহার কারণে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না এবং তিনি নিজেই উহা পূরণ করিতে পারেন;(ঘ) ধারা ৭ এর অধীন নোটিশ জারির পর ব্যবহারের ফলে অধিগ্রহণযোগ্য স্থাবর সম্পত্তির কোনো ক্ষতি;(ঙ) ধারা ৭ এর অধীন নোটিশ জারির পর অধিগ্রহণযোগ্য স্থাবর সম্পত্তি ব্যবহারের সুবিধার জন্য মূল্য বৃদ্ধি; অথবা(চ) ধারা ৪ এর অধীন নোটিশ জারির পর জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ব্যতীত অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তির কোনোরূপ পরিবর্তন, উন্নয়ন বা বিক্রয়।

বর্গাদারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান

সম্পত্তি

১২। এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বর্গাদার কর্তৃক আবাদকৃত বিদ্যমান ফসলসহ কোনো স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা হইলে ফসলের জন্য জেলা প্রশাসক যেরূপ ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করিবেন সেইরূপ ক্ষতিপূরণ বর্গাদারকে প্রদান করিতে হইবে।ব্যাখ্যা।- এই ধারায় ‘‘বর্গাদার’’ বলিতে এইরূপ কোনো ব্যক্তিকে বুঝাইবে, যিনি আধি, বর্গা বা ভাগ বলিয়া সাধারণভাবে পরিচিত কোনো পদ্ধতিতে অপর কোনো ব্যক্তির জমি চাষ করেন এবং শর্তানুযায়ী উৎপন্ন ফসলের একটি অংশ উক্ত ব্যক্তিকে প্রদান করেন।

অধিগ্রহণ এবং দখল গ্রহণ

১৩। (১) ধারা ১১ অনুসারে রোয়েদাদকৃত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হইলে বা প্রদান করা হইয়াছে মর্মে বিবেচিত হইলে অধিগ্রহণকৃত স্থাবর সম্পত্তি দায়মুক্ত হইয়া সম্পূর্ণরূপে সরকারের নিকট ন্যস্ত হইবে এবং জেলা প্রশাসক উক্ত সম্পত্তির দখল গ্রহণ করিবেন।(২) কোনো স্থাবর সম্পত্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন অধিগ্রহণের পর জেলা প্রশাসক নির্ধারিত ফর্মে ৯০ (নব্বই) কার্যদিবসের মধ্যে সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিবেন।

অধিগ্রহণ কার্যক্রম বাতিল অথবা প্রত্যাহার

১৪। (১) এই আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ৬ এর অধীন অনুমোদনকৃত কোনো স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণের জন্য প্রাক্কলিত অর্থ প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা কর্তৃক ধারা ৮ এর উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে জমা প্রদান না করিলে উক্ত মেয়াদান্তে অধিগ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম বাতিল হইবে এবং তদ্‌মর্মে জেলা প্রশাসকের একটি ঘোষণা সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিতে হইবে।(২) জেলা প্রশাসক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, ক্ষতিপূরণ প্রদানের পূর্বে যে কোনো সময়, সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে, যে কোনো স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম বাতিল করিতে পারিবেন।(৩) কোনো অধিগ্রহণ কার্যক্রম বাতিল হইলে অথবা প্রত্যাহার করা হইলে জেলা প্রশাসক অধিগ্রহণের কার্যক্রম গ্রহণ করা বাবদ তাহার যুক্তিসঙ্গত খরচসহ উদ্ভূত ক্ষতির জন্য ক্ষতিগ্রস্ত মালিকের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ ধার্য করিয়া উহা প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থার নিকট হইতে আদায়পূর্বক যথাযথভাবে প্রদানের ব্যবস্থা করিবেন।

বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ

১৬। কোনো বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তহবিল হইতে অধিগ্রহণ বাবদ আনুষঙ্গিক খরচাদি নির্বাহ হইবে।

অধিগ্রহণকৃত জমি বেসরকারি প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থার নিকট হস্তান্তর

১৮। এই আইনের অধীন কোনো স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণের কারণে কোনো ব্যক্তিকে প্রাপ্য অর্থের অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হইলে অথবা প্রকৃত মালিক ব্যতীত অন্য ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হইলে উক্ত অর্থ সরকারি দাবি হিসাবে পুনরুদ্ধার করিতে হইবে।

অধিগ্রহণকৃত স্থাবর সম্পত্তি ব্যবহার

সম্পদ

১৯। (১) যে উদ্দেশ্যে কোনো স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা হইবে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে, উক্ত উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনোভাবে উক্ত সম্পত্তি ব্যবহার অথবা বিক্রয়, লিজ, এওয়াজ বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর করা যাইবে না।(২) কোনো প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা উপ-ধারা (১) এর বিধানের পরিপন্থিভাবে কোনো অধিগ্রহণকৃত স্থাবর সম্পত্তি ব্যবহার করিলে অথবা যে উদ্দেশ্যে অধিগ্রহণ করা হইয়াছে সেই উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করিলে, জেলা প্রশাসক নির্দেশ প্রদান করিলে, তিনি উক্ত সম্পত্তি জেলা প্রশাসকের নিকট সমর্পণ করিতে বাধ্য থাকিবেন।(৩) কোনো প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা উপ-ধারা (১) বা (২) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে জেলা প্রশাসক, কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদানপূর্বক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি পুনঃগ্রহণ (resume) করিবেন এবং সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উহা খাস খতিয়ানভুক্ত করিবেন।

তৃতীয় অধ্যায়

হুকুম দখল

স্থাবর সম্পত্তি হুকুমদখল

২০। (১) জেলা প্রশাসক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, লিখিত আদেশ দ্বারা, জনপ্রয়োজন ও জনস্বার্থে, যে কোনো স্থাবর সম্পত্তি সাময়িকভাবে হুকুমদখল করিতে পারিবেন:তবে শর্ত থাকে যে, যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণে হুকুমদখলের পূর্বে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করা সম্ভবপর না হইলে, ভূতাপেক্ষভাবে সরকারের অনুমোদন গ্রহণ করা যাইবে :আরও শর্ত থাকে যে, কেবল পরিবহন বা যোগাযোগ ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণ কাজে জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত, মালিক বা তাহার পরিবারের প্রকৃত আবাসস্থল, ধর্মীয় উপাসনালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এতিমখানা, হাসপাতাল, গণগ্রন্থাগার, কবরস্থান বা শ্মশানের স্থাবর সম্পত্তি হুকুমদখল করা যাইবে না।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো আদেশ জারি করা হইলে, জেলা প্রশাসক(ক) পরিবহন বা যোগাযোগ ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণ কাজে জরুরি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে আদেশ জারির তারিখ হইতে যে কোনো সময়, এবং(খ) অন্যান্য ক্ষেত্রে আদেশ জারির তারিখের পর ৩০(ত্রিশ) কার্যদিবস অতিক্রান্ত হইবার পর,হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তির দখল গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং যে উদ্দেশ্যে হুকুমদখল করা হইয়াছে সেই উদ্দেশ্যে উহা ব্যবহার করিতে পারিবেন।(৩) সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত, দখল গ্রহণের তারিখ হইতে ২(দুই) বৎসর অতিক্রান্ত হইবার পর, কোনো হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি হুকুম দখলের আওতায় রাখা যাইবে না।

আদেশ সংশোধন

২১। সরকার স্ব-উদ্যোগে অথবা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে ধারা ২০ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ সংশোধন করিতে পারিবে :তবে শর্ত থাকে যে, আদেশ জারির তারিখ হইতে ৩০(ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে আবেদন করা না হইলে উহা বিবেচনা করা হইবে না।

জেলা প্রশাসক কর্তৃক রোয়েদাদ প্রস্তুত

২২। (১) কোনো স্থাবর সম্পত্তি হুকুমদখল করা হইলে এই ধারায় বর্ণিত পদ্ধতি এবং নীতি অনুসারে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া উহা প্রদান করিতে হইবে।(২) জেলা প্রশাসক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তিতে তাহার স্বার্থ এবং ক্ষতিপূরণের দাবির পরিমাণ ও বিবরণ সম্পর্কে শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া এবং উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী-(ক) নির্ধারিত পদ্ধতিতে ক্ষতিপূরণ, এবং(খ) উক্ত সম্পত্তিতে জ্ঞাত বা বিশ্বাসযোগ্য সকল স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ক্ষতিপূরণের অংশ অথবা দাবি সংবলিত তথ্য -সম্পর্কে একটি রোয়েদাদ প্রস্তুত করিবেন।(৩) জেলা প্রশাসক কর্তৃক উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রস্তুতকৃত রোয়েদাদ, এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধির বিধানাবলি সাপেক্ষে, চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।(৪) জেলা প্রশাসক উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রস্তুতকৃত রোয়েদাদ সম্পর্কে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণকে অবিলম্বে নোটিশ প্রদান করিবেন।(৫) হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তির প্রদেয় ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচিত হইবে, যথা:―(ক) সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি হুকুমদখলকালীন সময়ে দখল বা ব্যবহারজনিত কারণে ভাড়া বা লিজ বাবদ প্রাপ্য অর্থের আবর্তক ক্ষতিপূরণ; এবং(খ) নিম্নবর্ণিত কারণে প্রদেয় যে কোনো পরিমাণ অর্থ, যথা:―(অ) হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি খালি করা বাবদ যাবতীয় ব্যয়;(আ) হুকুমদখল মুক্ত হইবার পর পুনরায় দখল গ্রহণ বাবদ যাবতীয় ব্যয় ; এবং(ই) স্বাভাবিক ক্ষয়ক্ষতি ব্যতীত স্থাবর সম্পত্তি হুকুমদখলের পূর্বাবস্থায় আনয়নে সম্ভাব্য ব্যয়সহ হুকুমদখল অবস্থায় সংঘটিত যে কোনো ক্ষতি।(৬) কোনো স্থাবর সম্পত্তি ২ (দুই) বৎসরের অধিক সময় হুকুমদখল করিয়া রাখিবার প্রয়োজন হইলে জেলা প্রশাসক, উপ-ধারা (৫) এর দফা (ক) এর বিধান অনুযায়ী প্রদেয়, ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত রোয়েদাদ সংশোধন করিবেন।

ক্ষতিপূরণ প্রদান

২৩। (১) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত কোন কারণ উদ্ভব না হইলে, জেলা প্রশাসক ধারা ২২ এর অধীন ক্ষতিপূরণের জন্য ধার্যকৃত রোয়েদাদ অনুযায়ী প্রাপ্য অর্থ উহার দাবিদারকে প্রদান করিবেন।(২) ক্ষতিপূরণের দাবিদার ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করিতে অসম্মত হইলে অথবা ক্ষতিপূরণের কোনো দাবিদার না থাকিলে অথবা ক্ষতিপূরণ দাবিদারের মালিকানা বিষয়ে কোনো আপত্তি থাকিলে অথবা ক্ষতিপূরণের অংশ নির্ধারণে কোনো আপত্তি থাকিলে, জেলা প্রশাসক ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবে জমা রাখিবেন যাহা, কোনো পক্ষের আরবিট্রেটর কর্তৃক নির্ধারিত দাবিকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, স্থাবর সম্পত্তি হুকুমদখলের ক্ষেত্রে পরিশোধিত বলিয়া গণ্য হইবে:তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তি স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিসাবে গৃহীত হইলে তিনি, ক্ষতিপূরণের পরিমাণের বিষয়ে আপত্তিসহ, উক্ত অর্থ গ্রহণ করিতে পারিবেন:আরও শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তি আপত্তি ব্যতিরেকে ক্ষতিপূরণের অর্থ গ্রহণ করিলে তিনি ধারা ৩০ এর অধীন দরখাস্ত করিবার জন্য যোগ্য হইবেন না।(৩) এই অধ্যায়ের অধীন ঘোষিত রোয়েদাদ অনুযায়ী সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিপূরণ গ্রহণকারী ব্যক্তি উক্ত সম্পত্তির আইনানুগভাবে বৈধ দাবিদারকে ক্ষতিপূরণের সংশ্লিষ্ট অর্থ ফেরত প্রদানে বাধ্য থাকিবেন এবং জেলা প্রাশাসক তাহার নিকট হইতে উক্ত অর্থ আদায় করিয়া বৈধ দাবিদারকে প্রদানের ব্যবস্থা করিবেন।

হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তির বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তির নিকট হইতে অর্থ আদায়

সম্পত্তি

২৪। জেলা প্রশাসক, কোনো ব্যক্তির অনুকূলে হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তির বরাদ্দ প্রদান ও দখল হস্তান্তর করিবার পর, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, তাহার নিকট হইতে ধার্যকৃত অর্থ আদায় করিবেন।

হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ

২৫। (১) জেলা প্রশাসক, হুকুমদখলকালীন সময়ে, হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়ী থাকিবেন।(২) বিনষ্ট হইতে রক্ষার জন্য হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি সংস্কারের প্রয়োজন মর্মে সন্তুষ্ট হইলে জেলা প্রশাসক, স্বয়ং মালিককে তাহার স্থাবর সম্পত্তি সংস্কারের জন্য সুযোগ প্রদান করিবার পর, ক্ষতিপূরণের অর্থের অনূর্ধ্ব এক ষষ্ঠাংশ অর্থ ব্যয়ে উহার সংস্কার করিবেন এবং ব্যয়িত অর্থ ক্ষতিপূরণের অর্থের সহিত সমন্বয় করিবেন।

হুকুমদখল অবমুক্তকরণ

সম্পত্তি

২৬। (১) কোনো হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি হুকুমদখল মুক্ত করা হইলে জেলা প্রশাসক, যাহার নিকট হইতে উক্ত সম্পত্তি হুকুমদখল করা হইয়াছিল তাহাকে বা তাহার উত্তরাধিকারীকে অথবা উক্ত সম্পত্তি হস্তান্তরের জন্য তদ্বিবেচনায় যোগ্য কোনো ব্যক্তির নিকট ফেরত প্রদান করিবেন।(২) হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন দখল হস্তান্তর করা হইলে জেলা প্রশাসক উক্ত সম্পত্তি হইতে সম্পূর্ণরূপে দায়মুক্ত হইবেন, তবে উক্তরূপ দখল হস্তান্তরের কারণে, উক্ত সম্পত্তিতে কোনো ব্যক্তির কোনো আইনগত অধিকার থাকিলে, অথবা যাহার অনুকূলে স্থাবর সম্পত্তির দখল হস্তান্তর করা হইয়াছে তাহার নিকট কোনো বৈধ দাবি থাকিলে, উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাহার উক্ত দাবি প্রতিষ্ঠার অধিকার ক্ষুণ্ণ হইবে না।(৩) হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি কোনো ব্যক্তির অনুকূলে ফেরত প্রদানের জন্য অবমুক্ত করিবার পর, উক্ত সম্পত্তির দখল গ্রহণ করিবার জন্য জেলা প্রশাসক কর্তৃক লিখিতভাবে অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে উক্ত সম্পত্তি দখল গ্রহণ না করিলে অথবা দখল গ্রহণ করিতে অস্বীকার করিলে, জেলা প্রশাসকের লিখিত আদেশে বর্ণিত সময় ও তারিখের পর সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি উক্ত ব্যক্তির অনুকূলে হস্তান্তরিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।(৪) যাহার অনুকূলে হুকুমদখলমুক্ত স্থাবর সম্পত্তির দখল হস্তান্তরিত হইবে তাহাকে পাওয়া না গেলে অথবা তাহার কোনো প্রতিনিধি বা তাহার পক্ষে দখল গ্রহণ করিবার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি উপস্থিত না থাকিলে, জেলা প্রশাসক উক্ত সম্পত্তির প্রকাশ্য কোনো স্থানে ‘‘স্থাবর সম্পত্তিটি হুকুমদখল মুক্ত হইয়াছে’’ মর্মে বিজ্ঞপ্তি লটকাইবেন এবং, উক্ত বিজ্ঞপ্তির ৯০ (নববই) কার্যদিবসের মধ্যে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তদ্‌মর্মে একটি নোটিশ প্রদান করিবেন।(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন সরকারি গেজেটে কোনো নোটিশ প্রকাশিত হইলে, উক্ত নোটিশ প্রকাশের তারিখ ও সময় হইতে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি হুকুমদখলের আওতামুক্ত হইবে এবং আইনত দখল পাইবার যোগ্য ব্যক্তিকে দখল হস্তান্তর করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত তারিখের পর হইতে উক্ত সম্পত্তির বিপরীতে কোনো ক্ষতিপূরণ বা অন্য কোনো দাবির বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কোনো দায় থাকিবে না।

বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে উচ্ছেদ

মামলা

২৭। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যে উদ্দেশ্যে কোন স্থাবর সম্পত্তি হুকুমদখল করা হইবে, উক্ত উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে উক্ত সম্পত্তি ব্যবহৃত হইলে অথবা বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি উক্ত সম্পত্তি বাবদ প্রদেয় অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হইলে অথবা ধারা ২৬ অনুযায়ী অবমুক্তির কারণ উদ্ভব হইলে, জেলা প্রশাসক, যে কোনো সময় লিখিত আদেশ দ্বারা, উক্ত আদেশে উল্লিখিত তারিখ ও সময়ের মধ্যে উক্ত সম্পত্তির দখল পরিত্যাগের জন্য উক্ত বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা দখলদারকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত জেলা প্রশাসকের আদেশ নির্ধারিত সময়ে প্রতিপালন করা না হইলে অথবা অমান্য করা হইলে, তিনি সংশ্লিষ্ট বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা দখলদারকে উচ্ছেদ করিতে পারিবেন এবং এতদুদ্দেশ্যে প্রয়োজন অনুসারে বল (force) প্রয়োগ করিতে পারিবেন।

ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় প্রযোজ্য নয়

২৮। এই অধ্যায়ের কোনো কিছুই ক্যান্টনমেন্ট এলাকার সীমানার মধ্যে অবস্থিত কোনো স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।

চতুর্থ অধ্যায়

আরবিট্রেশন

আরবিট্রেটর নিয়োগ

২৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যুগ্ম জেলা জজ পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন একজন বিচার বিভাগীয় কর্মচারীকে, উক্ত প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্ট কোনো এলাকার জন্য, আরবিট্রেটর নিয়োগ করিবে।

আরবিট্রেটরের নিকট আবেদন

৩০। (১) কোনো স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এই আইনের অধীনে জেলা প্রশাসক কর্তৃক ধার্যকৃত রোয়েদাদ গ্রহণ করিতে সম্মত না হইলে তাহা সংশোধনের জন্য রোয়েদাদের নোটিশ জারির ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) কার্যদিবসের মধ্যে আরবিট্রেটরের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদনে রোয়েদাদের বিরুদ্ধে আপত্তির কারণ উল্লেখ করিতে হইবে।(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীনে দাখিলকৃত আবেদনে জেলা প্রশাসকের সহিত প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থাকেও পক্ষভুক্ত করিতে হইবে।
শুনানির নোটিশ

৩১। (১) আরবিট্রেটর, ধারা ৩০ এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর, শুনানির তারিখ উল্লেখ করিয়া উক্ত তারিখে তাহার আদালতে উপস্থিত হইবার জন্য নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিবর্গের উপর নোটিশ জারি করিবেন, যথা:―(ক) দরখাস্তকারী;(খ) আপত্তিতে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ;(গ) জেলা প্রশাসক; এবং(ঘ) প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা।(২) আরবিট্রেটর অনধিক ৯০ (নববই) কার্যদিবসের মধ্যে প্রাপ্ত আবেদনের উপর শুনানি গ্রহণ করিয়া তাহার আদেশ প্রদান করিবেন।

কার্যধারার পরিধি

৩২। আরবিট্রেটর কর্তৃক গৃহীতব্য কার্যধারায় অনুসন্ধানের পরিধি কেবল দাখিলকৃত আবেদনে উল্লিখিত আপত্তির বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকিবে।

ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে আরবিট্রেটরের কর্মপদ্ধতি

৩৩। আরবিট্রেটর, অধিগ্রহণকৃত অথবা হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে, ধারা ৯, ১০ ও ২২ এর বিধান অনুসরণ করিবেন:তবে শর্ত থাকে যে, জেলা প্রশাসকের রোয়েদাদে উল্লিখিত অংকের শতকরা ১০ (দশ) ভাগের অধিক ক্ষতিপূরণ কোনো মালিকের জন্য নির্ধারণ করা যাইবে না।

আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত রোয়েদাদ

৩৪। (১) এই অধ্যায়ের অধীন আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত প্রত্যেক রোয়েদাদ লিখিত ও স্বাক্ষরিত হইতে হইবে এবং, ক্ষেত্রমত ধারা ৯ এর উপ-ধারা (১) বা ধারা ২২ এর উপ-ধারা (৫) এর বিধানাবলির আলোকে নির্দিষ্টকৃত রোয়েদাদের পরিমাণ, কারণসহ, জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে অবহিত করিবেন।(২) আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ জেলা প্রশাসক কর্তৃক ধার্যকৃত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ অপেক্ষা অধিক হইলে, আরবিট্রেশন আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে, যতদিন পর্যন্ত উক্ত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান বা প্রদানের প্রস্তাব করা না হইবে, ততদিন পর্যন্ত প্রত্যেক বৎসর শতকরা ১০ (দশ) ভাগ অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।(৩) এই ধারায় উল্লিখিত প্রত্যেক রোয়েদাদ এবং রোয়েদাদের কারণ সংবলিত বর্ণনা দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ২ এর দফা (২) ও (৯) এর মর্মানুযায়ী, যথক্রমে, ডিক্রি ও রায় হিসাবে গণ্য হইবে।

মামলার ব্যয়

৩৫। এই আইনের অধীন অনুষ্ঠিত কার্যধারায় খরচের পরিমাণ কোন পক্ষ কী পরিমাণে বহন করিবে তাহা রোয়েদাদে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে।

আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত রোয়েদাদের বিরুদ্ধে আপিল

৩৬। (১) আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত ক্ষতিপূরণের রোয়েদাদের বিরুদ্ধে উপ-ধারা (২) অনুযায়ী গঠিত আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যাইবে।(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো নির্দিষ্ট এলাকার জন্য এক বা একাধিক আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল গঠন করিতে পারিবে।(৩) একজন সদস্যকে লইয়া একটি আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল গঠিত হইবে যিনি, জেলা জজ হিসাবে কর্মরত ছিলেন বা আছেন এইরূপ ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে, সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন।(৪) আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।(৫) আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ধার্যকৃত ক্ষতিপূরণের রোয়েদাদ আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত রোয়েদাদ অপেক্ষা অধিক হইলে রায় প্রদানের তারিখ হইতে উক্ত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান অথবা প্রদানের প্রস্তাব করা পর্যন্ত বার্ষিক শতকরা ১০ (দশ) ভাগ অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে:তবে শর্ত থাকে যে, আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রত্যেক ভূমির মালিকের জন্য নির্ধারিত ক্ষতিপূরণের রোয়েদাদ আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত রোয়েদাদ অপেক্ষা শতকরা ১০ (দশ) ভাগের অধিক হইবে না।(৬) আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক অনধিক ৬০ (ষাট) কার্যদিবসের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করিয়া উহা লিখিতভাবে জেলা প্রশাসককে অবহিত করিতে হইবে।

অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান

৩৭। (১) আরবিট্রেটর বা, ক্ষেত্রমত, আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত রোয়েদাদের প্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণ বাবদ অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের প্রয়োজন হইলে, জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট রোয়েদাদের ১(এক) মাসের মধ্যে প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থাকে উক্ত অতিরিক্ত অর্থ জমা প্রদানের জন্য নোটিশ প্রদান করিবেন, এবং প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা উক্ত নোটিশ প্রাপ্তির অথবা রোয়েদাদের ১(এক) মাসের মধ্যে, যাহা অপেক্ষাকৃত কম, উক্ত অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করিবেন।(২) আরবিট্রেটর বা, ক্ষেত্রমত, আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনালের রোয়েদাদের ফলে প্রদেয় অতিরিক্ত অর্থ প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা কর্তৃক জমা প্রদানের অব্যবহিত পরে জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট দাবিদারকে উক্ত অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করিবেন।(৩) আরবিট্রেটর বা, ক্ষেত্রমত, আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত রোয়েদাদ অনুসারে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধের জন্য প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা দায়ী থাকিবে।

২০০১ সনের ১ নং আইনের অপ্রযোজ্যতা

৩৮। সালিস আইন, ২০০১ (২০০১ সনের ১নং আইন) এর কোনো কিছুই এই আইনের অধীন আরবিট্রেশনের ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য হইবে না।

পঞ্চম অধ্যায়

বিবিধ

জেলা প্রশাসক এবং আরবিট্রেটরের দেওয়ানি আদালতের কতিপয় ক্ষমতা

৩৯। নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে দেওয়ানি কার্যবিধির অধীন দেওয়ানি আদালতের যে ক্ষমতা রহিয়াছে এই আইনের অধীনে কোনো কার্যধারা গ্রহণকালে জেলা প্রশাসক এবং আরবিট্রেটরের অনুরূপ ক্ষমতা থাকিবে, যথাঃ-(ক) সমন জারিপূর্বক কোনো ব্যক্তিকে হাজির হইতে এবং শপথ গ্রহণপূর্বক সাক্ষ্য প্রদানে বাধ্য করা;(খ) কোনো রেকর্ড বা দলিল উপস্থাপন করিতে বাধ্য করা;(গ) হলফনামার মাধ্যমে সাক্ষ্য-প্রমাণ গ্রহণ করা;(ঘ) সাক্ষ্য গ্রহণ করিবার জন্য কমিশন নিয়োগ করা; এবং(ঙ) কোনো অফিস বা আদালত হইতে কোনো সরকারি রেকর্ড তলব করা।

প্রবেশ এবং পরিদর্শনের ক্ষমতা

৪০। (১) কোনো স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ অথবা হুকুমদখল করিবার অভিপ্রায়ে অথবা উক্ত সম্পত্তি অধিগ্রহণ বা হুকুমদখলের জন্য ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের উদ্দেশ্যে অথবা এই আইনের অধীনে কোনো আদেশ পালনের জন্য জেলা প্রশাসক বা তদ্‌কর্তৃক সাধারণ বা বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী এবং যে কোনো সহকারী বা কর্মী―(ক) যে কোনো স্থাবর সম্পত্তিতে প্রবেশ করিয়া জরিপ করিতে ও লেভেল গ্রহণ করিতে পারিবেন;(খ) যে কোনো স্থাবর সম্পত্তি বা উহার অভ্যন্তরীণ সকল কিছু পরিদর্শন করিতে পারিবেন;(গ) যে কোনো স্থাবর সম্পত্তির সীমানা চিহ্নিতকরণ ও পরিমাপসহ উহার নকশা প্রস্তুতকরণ এবং উক্ত উদ্দেশ্যে যতদূর প্রয়োজন হইবে ততদূর পর্যন্ত প্রবেশ করিতে পারিবেন;(ঘ) চিহ্ন স্থাপন করিয়া এবং গর্ত খুঁড়িয়া লেভেল, সীমানা ও লাইন চিহ্নিত করিতে পারিবেন এবং যে স্থানে অন্য কোনোভাবে জরিপ কার্য সম্পাদন করা, লেভেল সংগ্রহ করা এবং সীমানা ও লাইন চিহ্নিত করা সম্ভবপর হইবে না, সেই স্থানে যে কোনো দণ্ডায়মান ফসল, বৃক্ষ বা জঙ্গলের যে কোনো অংশ কাটিয়া পরিষ্কার করিতে পারিবেন:তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট সম্পত্তিতে প্রবেশ করিবার ইচ্ছা ব্যক্ত করিয়া কমপক্ষে ২৪ (চবিবশ) ঘন্টা পূর্বে লিখিতভাবে নোটিশ প্রদান ব্যতিরেকে, উক্ত সম্পত্তির দখলদারের বিনা অনুমতিতে, কোনো স্থাবর সম্পত্তিতে প্রবেশ করা যাইবে না।(২) জেলা প্রশাসক অথবা উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কোনো স্থাবর সম্পত্তিতে প্রবেশ করিবার সময় উক্ত সম্পত্তির সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবেন অথবা প্রদানের জন্য প্রস্তাব করিবেন এবং উক্ত ক্ষতিপূরণের পর্যাপ্ততা সম্বন্ধে কোনো আপত্তি উত্থাপিত হইলে, উক্ত বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।(৩) জেলা প্রশাসক, উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণের অর্থ, প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থার নিকট হইতে ঘটনাস্থলে অথবা সুবিধাজনক নিকটবর্তী দ্রুততম সময়ে আদায় করিবেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা সংস্থাকে প্রদান করিবেন।

তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা

৪১। জেলা প্রশাসক, কোনো স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ বা হুকুমদখল করিবার উদ্দেশ্যে অথবা অধিগ্রহণকৃত স্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করিবার উদ্দেশ্যে, এই আইনের অধীন অধিগ্রহণকৃত বা হুকুমদখলকৃত অথবা অধিগ্রহণের বা হুকুমদখলের উদ্দেশ্যে কোনো স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য নির্দিষ্ট কোনো কর্মচারী বা কর্তৃপক্ষকে প্রদান করিবার জন্য যে কোনো ব্যক্তিকে লিখিতভাবে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।

নোটিশ ও আদেশ জারি

৪২। (১) এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধিতে ভিন্নরূপ কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনের অধীন জারীকৃত বা প্রস্তুতকৃত সকল নোটিশ বা আদেশ, ঠিকানায় উল্লিখিত ব্যক্তির উপর অথবা যাহার উপর জারি করা প্রয়োজন তাহার উপর জারি নিশ্চিত করিতে হইবে।(২) নোটিশ বা আদেশ জারির জন্য উপযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে উহা প্রদান করা সম্ভবপর না হইলে, উক্ত ব্যক্তির পক্ষে যে কোনো নিযুক্ত ব্যক্তি অথবা তাহার সহিত বসবাসরত পরিবারের কোনো প্রাপ্তবয়ষ্ক সদস্যকে উক্ত নোটিশ বা আদেশ প্রদান করিতে হইবে, অথবা কোনো নিযুক্ত ব্যক্তি বা পরিবারের সদস্যকে নোটিশ প্রদান করা সম্ভবপর না হইলে, উক্ত নোটিশ বা আদেশের অনুলিপি বাহিরের দরজা বা উক্ত ব্যক্তি সাধারণত যে স্থানে বসবাস করেন কিংবা ব্যবসা করেন অথবা ব্যক্তিগতভাবে লাভজনক কাজ করেন, উক্ত স্থানের সংলগ্ন কোনো অংশে লটকাইয়া জারি করিতে হইবে এবং অন্য একটি অনুলিপি জারিকারক কর্মকর্তার কার্যালয়ে লটকাইতে হইবে এবং সম্ভব হইলে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি সংলগ্ন কোনো বিশেষ অংশেও লটকাইতে হইবে:তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা কর্মচারীর নিকট হইতে নির্দেশপ্রাপ্ত হইলে, নোটিশ বা আদেশ প্রাপকের ঠিকানায় অথবা, ক্ষেত্রমত, শেষ জ্ঞাত আবাসস্থল, ব্যবসাকেন্দ্র বা কর্মস্থলের ঠিকানায় রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রেরণ করা যাইবে।

দণ্ড

৪৩। কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ অমান্য করিলে বা বিরোধিতা করিলে অথবা অমান্য বা বিরোধিতা করিবার চেষ্টা করিলে অথবা বিরোধিতা বা অমান্য করিবার জন্য প্ররোচনা প্রদান করিলে অথবা এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি দ্বারা অনুমোদিত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির কাজে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা প্রদান করিলে, তিনি ৬(ছয়) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা ১০ (দশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

দখল সমর্পণের ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগ

৪৪। এই আইনের অধীন কোনো স্থাবর সম্পত্তির দখল প্রদানে কেহ অসম্মতি জ্ঞাপন করিলে অথবা কোনোরূপ বাধা প্রদান করিলে, জেলা প্রশাসক উক্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি হস্তান্তরে বাধ্য করিতে পারিবেন এবং উক্ত উদ্দেশ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী বল (Force) প্রয়োগ করিতে পারিবেন।

স্ট্যাম্প ডিউটি ও ফিস হইতে অব্যাহতি

৪৫। আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন প্রস্তুতকৃত রোয়েদাদের উপর স্ট্যাম্প ডিউটি এবং উহার অনুলিপির জন্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা দাবিদারের উপর কোনো প্রকার ফি আরোপ করা যাইবে না।

মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ

৪৭। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ বা গৃহীত কোন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, এই আইনের অধীন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ ব্যতীত, অন্য কোন আদালতে কোন প্রকার মামলা দায়ের বা আরজি পেশ করা যাইবে না এবং কোন আদালত উক্তরূপ কোন আদেশ বা ব্যবস্থা সম্পর্কে কোন প্রকার আদেশ বা নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে না।

ক্ষমতা অর্পণ

৪৮। সরকার, সরকারি গেজেটে আদেশ দ্বারা, আদেশে বর্ণিত কারণ ও পরিস্থিতিতে, যে কোনো কর্মচারী বা কর্তৃপক্ষকে, আদেশ অনুযায়ী, এই আইনের অধীন উহার কোনো ক্ষমতা বা দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৪৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।(২) উপ-ধারা (১) এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোনো বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করা যাইবে, যথা:-(ক) এই আইনের অধীনে অধিগ্রহণকৃত বা হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তির দখল গ্রহণের পদ্ধতি;(খ) আরবিট্রেটর এবং আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনালের কার্যপদ্ধতি;(গ) ধারা ৪৪ এ বর্ণিত স্থাবর সম্পত্তি সমর্পণের ক্ষেত্রে বল (Force) প্রয়োগের পদ্ধতি;(ঘ) অধিগ্রহণ বা হুকুমদখলের জন্য নথি সৃজন ও ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে বিবেচ্য বিষয় ও কার্যপদ্ধতি; এবং(ঙ) প্রয়োজনীয় অন্য যে কোনো বিষয়।

রহিতকরণ ও হেফাজত

৫০। (১) Acquisition and Requisition of Immovable Property Ordinance, 1982 (Ordinance No. II of 1982), অতঃপর উক্ত অধ্যাদেশ বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত হইবে।(২) উক্ত অধ্যাদেশ রহিতকরণ সত্ত্বেও উহার অধীন -(ক) কৃত কোন কাজ-কর্ম ও গৃহীত কোন ব্যবস্থা বা কার্যধারা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত বলিয়া গণ্য হইবে;(খ) প্রদত্ত সকল নোটিশ, বিজ্ঞপ্তি, আদেশ, ক্ষতিপূরণ বা রোয়েদাদ এই আইনের অধীন প্রদত্ত নোটিশ, বিজ্ঞপ্তি, আদেশ, ক্ষতিপূরণ বা রোয়েদাদ বলিয়া গণ্য হইবে; এবং(গ) কোনো কর্তৃপক্ষ, আরবিট্রেটর এবং আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল সমীপে কোনো কার্যধারা নিষ্পন্নাধীন থাকিলে, নিষ্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত, উহা এমনভাবে চলমান থাকিবে যেন উক্ত অধ্যাদেশ রহিত হয় নাই।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

৫১। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে কোনো বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।


Spread the love

Join The Discussion

Compare listings

Compare