খুলনা: মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অন্যের জমির জাল বায়না-দলিল করে মূল মালিক রহিমা খাতুনের পরিবারকে হত্যার হুমকি ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী রহিমা খাতুনের মেয়ে হোসনে আরা এহসান শনিবার (২০ মার্চ) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার মায়ের (রহিমা খাতুন) মালিকানাধীন খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার চক-আসানখালী মৌজাধীন কিছু জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেই। জমি বিক্রি করতে গেলে জানতে পারি খুলনার কুখ্যাত ভূমিদস্যু বেনু গাজী এবং তার এক সহযোগী ভূমিদস্যু হাবিবুল্লাহ আমার মাকে মৃত ঘোষণা করে মিথ্যা ওয়ারিশ ক্যাম বের করে মো. সাইফুল ইসলাম নামে খুলনার এক লোকের কাছে জমি বিক্রি করেছেন।
এই জালিয়াতি সম্পর্কে আমার মা কিছুই জানতেন না।
হোসনে আরা এহসান আরও বলেন, আমার মা ঢাকার রামপুরার মনির হোসেন নামে এক দূরসম্পর্কের আত্মীয়কে জমি বিক্রি করার জন্য একজন মধ্যস্থতাকারী ব্যক্তি হিসেবে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলার সুবিধার্থে তাকে একটা অ-রেজিস্ট্রি স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র সম্পাদন করে দেন, যার মেয়াদ ছয় মাস।
যে মেয়াদ শেষ হবে ১০ এপ্রিল। চুক্তির পর থেকে প্রায় ২ মাস তিনি কোনো ক্রেতা ঠিক করতে পারেননি।হঠ্যাৎ করে তিনি নামমাত্র দামে ক্রেতা ঠিক করে আমার মাকে জানান এবং জমি বিক্রি করার জন্য তাকে জোর করেন। এত অল্প টাকায় জমি বিক্রি করবেন না বলে মা মনিরকে জানিয়ে দেন। এরপর তিনি অতি অল্প দিনের মধ্যে ৬ থেকে ৭ জন ক্রেতা ঠিক করে বিভিন্ন দরদাম একাই ঠিক করেন। তিনি এমন অবস্থার সৃষ্টি করেন যে, তিনিই জমির মালিক। আমার মা জানতে পারেন মনির ওই ভূমিদস্যু হাবিবুল্লাহ ও বেনু গাজীর লোক। আমার মা মনিরকে জানিয়ে দেন যে, তিনি আর তাকে জমির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে রাখতে রাজি নন এবং চুক্তিপত্রের শর্ত অনুযায়ী ওই চুক্তিপত্র ভঙ্গ হয়েছে। এটা জানানোর পর ফোনের মাধ্যমে মাসহ আমার ভাই-বোনদের হুমকি দেওয়া শুরু করে দেন মনির। এ কারণে আমরা পুরো পারিবার নিরাপত্তাহীনতায় মধ্যে রয়েছি। এ অবস্থায় ২১ জানুয়ারি মনির মায়ের বিনা অনুমতিতে এস এম সুজাউদৌলা নামে এক ক্রেতার সঙ্গে ৩০০ টাকার একটি স্ট্যাম্পে জমির দরদাম ঠিক করে একটি চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। এই খবর আমার মা জানতে পেরে খুলনার একটি স্থানীয় দৈনিকে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এর পর থেকে মনির আরও ক্ষিপ্ত হন। তিনি ১৪ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞ মহানগর হাকিমের ৪ নং আমলি আদালত খুলনাতে আমার মাকে ১ নং আসামি করে আমি সহ আমার দুই বোন মোট (০৪) চার জনকে আসামি করে দালাল মনির মামলা দায়ের করেন।
তিনি বলেন, মনিরের বিরুদ্ধে আমরা রাজধানীর পল্লবী থানায় তিনটি অভিযোগ দায়ের করি। এরপর তিনি ঢাকার বাসায় সরাসরি হাজির হন এবং আমার মাসহ আমাদের সব ভাই-বোনদের হুমকি দিয়ে আসেন। এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি পল্লবী থানায় মনির একটি অভিযোগ দায়ের করেন, যেখানে ২০ লাখ টাকার একটি অ-রেজিস্ট্রি বায়না দলিলের কপি দাখিল করেন। সেখানে তদন্ত করে পুলিশ মনিরকে প্রতারক ও জালিয়াত হিসেবে উল্লেখ করে।