ব্লগ

ভূমি সম্পর্কিত সকল তথ্য পেতে অনুসন্ধান করুন

সাম্প্রতিক খবরা-খবর

খুলনা: মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অন্যের জমির জাল বায়না-দলিল করে মূল মালিক রহিমা খাতুনের পরিবারকে হত্যার হুমকি ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী রহিমা খাতুনের মেয়ে হোসনে আরা এহসান শনিবার (২০ মার্চ) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার মায়ের (রহিমা খাতুন) মালিকানাধীন খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার চক-আসানখালী মৌজাধীন কিছু জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেই। জমি বিক্রি করতে গেলে জানতে পারি খুলনার কুখ্যাত ভূমিদস্যু বেনু গাজী এবং তার এক সহযোগী ভূমিদস্যু হাবিবুল্লাহ আমার মাকে মৃত ঘোষণা করে মিথ্যা ওয়ারিশ ক্যাম বের করে মো. সাইফুল ইসলাম নামে খুলনার এক লোকের কাছে জমি বিক্রি করেছেন।

এই জালিয়াতি সম্পর্কে আমার মা কিছুই জানতেন না।  

হোসনে আরা এহসান আরও বলেন, আমার মা ঢাকার রামপুরার মনির হোসেন নামে এক দূরসম্পর্কের আত্মীয়কে জমি বিক্রি করার জন্য একজন মধ্যস্থতাকারী ব্যক্তি হিসেবে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলার সুবিধার্থে তাকে একটা অ-রেজিস্ট্রি স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র সম্পাদন করে দেন, যার মেয়াদ ছয় মাস।

যে মেয়াদ শেষ হবে ১০ এপ্রিল। চুক্তির পর থেকে প্রায় ২ মাস তিনি কোনো ক্রেতা ঠিক করতে পারেননি।হঠ্যাৎ করে তিনি নামমাত্র দামে ক্রেতা ঠিক করে আমার মাকে জানান এবং জমি বিক্রি করার জন্য তাকে জোর করেন। এত অল্প টাকায় জমি বিক্রি করবেন না বলে মা মনিরকে জানিয়ে দেন। এরপর তিনি অতি অল্প দিনের মধ্যে ৬ থেকে ৭ জন ক্রেতা ঠিক করে বিভিন্ন দরদাম একাই ঠিক করেন। তিনি এমন অবস্থার সৃষ্টি করেন যে, তিনিই জমির মালিক। আমার মা জানতে পারেন মনির ওই ভূমিদস্যু হাবিবুল্লাহ ও বেনু গাজীর লোক। আমার মা মনিরকে জানিয়ে দেন যে, তিনি আর তাকে জমির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে রাখতে রাজি নন এবং চুক্তিপত্রের শর্ত অনুযায়ী ওই চুক্তিপত্র ভঙ্গ হয়েছে। এটা জানানোর পর ফোনের মাধ্যমে মাসহ আমার ভাই-বোনদের হুমকি দেওয়া শুরু করে দেন মনির। এ কারণে আমরা পুরো পারিবার নিরাপত্তাহীনতায় মধ্যে রয়েছি। এ অবস্থায় ২১ জানুয়ারি মনির মায়ের বিনা অনুমতিতে এস এম সুজাউদৌলা নামে এক ক্রেতার সঙ্গে ৩০০ টাকার একটি স্ট্যাম্পে জমির দরদাম ঠিক করে একটি চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। এই খবর আমার মা জানতে পেরে খুলনার একটি স্থানীয় দৈনিকে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এর পর থেকে মনির আরও ক্ষিপ্ত হন। তিনি ১৪ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞ মহানগর হাকিমের ৪ নং আমলি আদালত খুলনাতে আমার মাকে ১ নং আসামি করে আমি সহ আমার দুই বোন মোট (০৪) চার জনকে আসামি করে দালাল মনির মামলা দায়ের করেন।

তিনি বলেন, মনিরের বিরুদ্ধে আমরা রাজধানীর পল্লবী থানায় তিনটি অভিযোগ দায়ের করি। এরপর তিনি ঢাকার বাসায় সরাসরি হাজির হন এবং আমার মাসহ আমাদের সব ভাই-বোনদের হুমকি দিয়ে আসেন। এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি পল্লবী থানায় মনির একটি অভিযোগ দায়ের করেন, যেখানে ২০ লাখ টাকার একটি অ-রেজিস্ট্রি বায়না দলিলের কপি দাখিল করেন। সেখানে তদন্ত করে পুলিশ মনিরকে প্রতারক ও জালিয়াত হিসেবে উল্লেখ করে।

দলিলঃ জমি কেনা-বেচার ক্ষেত্রে সাবধান না হলে পরবর্তীতে দীর্ঘদিন ভুগতে হয়। এমন বহু মানুষ রয়েছেন, জমি কেনা-বেচার ক্ষেত্রে আসল দলিল চিনতে না পারায় ঝামেলায় পড়েন। এজন্য দলিল চেনা খুবই জরুরি। আজকে প্রতিবেদনে থাকছে, কিভাবে চেনা যাবে জাল দলিল।

জাল দলিল চেনার উপায়:১. ভলিউডেমর তথ্য:
সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের প্রকৃতি অনুযায়ী চারটি রেজিস্ট্রার বা ভলিউমে লেখা হয়ে থাকে। কোনো দলিল নিয়ে সন্দেহ হলে রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষণ করা দলিলের সাল মিলিয়ে দেখতে হবে। এজন্য নির্দিষ্টভাবে দরখাস্ত করতে হবে। এতে দলিলটির যাবতীয় তথ্য দিতে হবে।

২. স্বাক্ষর যাচাই:
অনেক সময় স্বাক্ষর জালিয়াতি করে দলিলদাতা বা গ্রহীতার সাজা হয়। এক্ষেত্রে স্বাক্ষর বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে স্বাক্ষরের সত্যতা যাচাই করিয়ে নেয়া যেতে পারে। এছাড়া ভূমি অফিস থেকে বিভিন্ন সিল পরীক্ষা করেও জালিয়াতি নির্ণয় করা যায়।খেয়াল রাখতে হবে, অনেক আগের দলিলে আগের চিহ্নিত কিছু সিল ব্যবহারই থাকে। আগের দলিল কিন্তু সিল যদি নতুন হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে, দলিলটি জাল হতে পারে। একই সঙ্গে তারিখটিও ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। দলিল রেজিস্ট্রির তারিখ কোনো সরকারি বন্ধের দিন থাকলে সন্দেহের অবকাশ থাকবে। অনেক সময় অর্পিত সম্পত্তি বা মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি জীবিত দেখিয়ে জাল করা হয়।৩. মূল মালিক শনাক্ত:
এক জমির একাধিক মালিকের নামে করা থাকলে ধরে নিতে হবে দলিলটি জাল হতে পারে। এক্ষেত্রে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মূল মালিক কে, তা নির্ণয় করতে হবে।৪. নামজারি:
সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে জমির মিউটেশন বা নামজারি সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে। নামজারিতে ধারাবাহিকতা ঠিক আছে কি না, সেটা সুচারুভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি দেখা যায়, সিএস জরিপের সঙ্গে বিক্রেতার খতিয়ানের কোনো গরমিল আছে, তাহলে বুঝতে হবে, কোনো জটিলতা আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, জরিপ খতিয়ানে জমির পরিমাণ পরবর্তী সময়ে যতবার বিক্রি হয়েছে, তার সঙ্গে জমির পরিমাণ মিল আছে কি না, তা যাচাই করে দেখা। দাগ নম্বর, ঠিকানা এসব ঠিক আছে কি না, এসব যাচাই করতে হবে।

৫. আমমোক্তারনামা:
সম্প্রতি কোনো আমমোক্তারনামা দলিল থাকলে তাতে উভয় পক্ষের ছবি ব্যবহার হয়েছে কি না যাচাই করতে হবে।৬. তারিখ যাচাই:
কোনো দান করা জমি হলে দলিলে সম্পাদনের তারিখ দেখে কবে জমিতে গ্রহীতা দখলে গেছে তা যাচাই করতে হবে। দলিলটি রেজিস্ট্রি করা কি না এবং দলিলদাতার সঙ্গে গ্রহীতার সম্পর্ক কী, তা যাচাই করতে হবে।৭. লেখক যাচাই:
সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া কোনো বিক্রীত দলিলের দলিল লেখকের নাম ঠিকানা জেনে সরেজমিন কথা বলে নেয়া দরকার।৮. মালিকানা যাচাই:
জমির স্বত্ব কী বা মালিকানা যাচাই করতে হবে। বিক্রেতার কাছ থেকে সব দলিল, বিশেষ করে ভায়া দলিল চেয়ে নিতে হবে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জানতে হবে সব দলিলের ক্রমিক নম্বর, দলিল নম্বর ঠিক আছে কি না।৯. সিল-স্ট্যাম্প যাচাই:
দলিল সম্পাদনের সময় ব্যবহৃত স্ট্যাম্পের পেছনে কোন ভেন্ডার থেকে স্ট্যাম্প কেনা হয়েছে এবং কার নামে কেনা হয়েছে খেয়াল রাখুন। প্রতিটি স্ট্যাম্পের পেছনে একটি ক্রমিক নম্বর উল্লেখ থাকে। এ নম্বরটি ঠিক আছে কি না, প্রয়োজনে স্ট্যাম্প বিক্রেতার সঙ্গে দেখা করে যাচাই করে নিন।

বর্তমানে প্রায় সব ধরনের খতিয়ান অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। নিচের লিংকে ক্লিক করে এবং প্রয়োজনীয় অপশন গুলো পূরণ ও সার্চ করে আপনার খতিয়ান যাচাই করুন। সার্চ করার পূর্বে নিচে লিখিত সার্চ করার পদ্ধতি পড়ুন।


এখানে ক্লিক করে খতিয়ান যাচাই করুন।

যাচাই পদ্ধতিঃ

১। প্রথমে বিভাগ ঘর থেকে আপনার বিভাগ বাছাই করুন।

২। এরপর জেলা ঘরে ক্লিক করলে আপনার বিভাগের অধীন সকল জেলা দেখতে পাবেন, আপনার জেলায় ক্লিক করুন।

৩। উপজেলার ঘরে ক্লিক করলে আপনার জেলার সকল উপজেলার নাম দেখতে পাবেন, আপনার উপজেলার নামে ক্লিক করুন।

৪। এরপর মৌজা ঘরে ক্লিক করলে আপনার উপজেলার যে সকল মৌজার খতিয়ান চুড়ান্ত হয়েছে, সে সকল মৌজার নাম দেখতে পাবেন। আপনার জমিটি যে মৌজায় অবস্থিত সেই মৌজার নামে ক্লিক করুন।

মোট চার ভাবে সার্চ করে আপনার জমির খতিয়ান যাচাই করতে পারবেনঃ

১। খতিয়ান নম্বর জানা থাকলে খতিয়ান নাম্বার দিয়ে সার্চ করে,

২। দাগ নম্বর জানা থাকলে দাগ নম্বর দিয়ে সার্চ করে,

৩। জমির মালিকের নাম জানা থাকলে জমির মালিকের নাম দিয়ে সার্চ করে এবং

৪। জমি মালিকের পিতা বা স্বামীর নাম জানা থাকলে জমি মালিকের পিতা/স্বামীর নাম দিয়ে সার্চ করে।

এই চার মাধ্যমের প্রত্যেকটির বাম পার্শ্বে একটি ছোট গোল ঘর বা বৃত্ত রয়েছে। উপরের চার পদ্ধতির যে পদ্ধতিতে আপনি সার্চ করতে চান, তা বাম পার্শ্বের গোল ঘরে মাউস দিয়ে ক্লিক করুন। এরপর উপরের চার পদ্ধতির মধ্যে আপনি যে পদ্ধতিতে ক্লিক করেছেন তার ঠিক নিচে একটি ছোট বক্সটি আসবে, বক্সটি পূরণ করুন। অর্থাৎ খতিয়ান নম্বর সিলেক্ট করে থাকলে খতিয়ান নম্বরটি বক্সে লিখুন, দাগ নম্বর সিলেক্ট করে থাকলে দাগ নম্বরটি বক্সে লিখুন, মালিকের নাম সিলেক্ট করে থাকলে মালিকের নাম বক্সে লিখুন, মালিকের পিতা/স্বামীর নাম সিলেক্ট করে থাকলে পিতা/স্বামীর নাম বক্সে লিখুন।

এরপর নিচে দুটি সংখ্যা যোগ করতে বলা হবে। সংখ্যা দুটি যোগ করে যোগফল নিচের বক্সে লিখুন। সর্বশেষ ‘খুজুন’ অপশনে ক্লিক করুন।

এভাবে আপনি আপনার পছন্দের খতিয়ান দেখতে বা যাচাই করতে পারবেন।

আরও নিউজ পেতে ক্লিক করুন 

জমির দলিল জালিয়াতি করে মালিককে হয়রানি!

জাল দলিল চেনার ৯ উপায়

নারীরা সম্পত্তিতে সমানাধিকার কি আদৌ পাবেন? সম্পত্তিতে ভাগ পাওয়ার অধিকার নেই হিন্দু নারীদের৷ মুসলিম নারীদের ক্ষেত্রে শরিয়া আইনে তাঁদের ভাগ পুরুষের অর্ধেক, সেটাও ভাগ্যে জোটে না অধিকাংশের৷ এভাবে যুগ যুগ ধরে ভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন বাংলাদেশের নারীরা৷

এমন প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারীদের সমান অধিকার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তাঁর এই আহ্বান অনেকের মধ্যে আশা জাগালেও সেটা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকের মধ্যে৷

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)-এর নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সমানাধিকার পাওয়া, উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে প্রচলিত আইনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সমস্যাজনক৷ কারণ, কোনো কোনো আইনে সমানাধিকারের ব্যবস্থাটা নেই৷ সেটা করতে হলে আইন সংশোধন করতে হবে৷’’

‘‘আইন সংশোধন তো হতে পারে, সাংসদদের হাতে৷ দায়িত্ব, অধিকার অথবা সুযোগ উনাদের৷ সেই রকম কোনো উদ্যোগ আমরা সাংসদদের কাছ থেকে দেখছি না৷’’সাম্প্রতিক কোনো গবেষণা পাওয়া না গেলেও ২০১৪ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে ৭০ ভাগ নারীর সম্পদের ওপর মালিকানা নেই৷ ফলে তাঁরা পরিবারের পুরুষ সদস্যদের ওপর যেমন নির্ভরশীল থাকেন, তেমনি নিজেরা কিছু করতে চাইলেও তা সম্ভব হয়ে ওঠে না৷

ওই গবেষণায় দেখা যায়, এক শতাংশের সম্পদ থাকলেও পরবর্তীতে তা হারিয়েছেন৷ ২৯ ভাগ নারী সম্পদের মালিক হয়েছেন উত্তরাধিকার সূত্রে৷ নারী উদ্যোক্তা ও শ্রমিকদের ৮২ শতাংশ জানান, তাঁদের সম্পদে নিজের অধিকার বা মালিকানা নেই৷ অধিকাংশ নারীই নিজের সম্পদ ব্যবহারে কোনো মতামতও দিতে পারেন না৷ মাত্র ২৬ শতাংশ নারী মতামত দেয়ার সুযোগ পান৷

সম্পত্তিতে নারীদের সমানাধিকার নিয়ে নানা সময় বিভিন্ন সংগঠন দাবি তুলে এলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি

১৯৯৭ সালে নারী উন্নয়ন নীতিতে ভূমির অধিকারে নারী-পুরুষের সমানাধিকারের কথা বলা হলেও, পরে তা স্পষ্টাক্ষরে সংযুক্ত হয়নি৷ এমনকি নতুন আইনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি ২১ বছরেও৷

এর মধ্যে শরিয়া আইন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে হেফাজত ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনগুলোর দিক থেকে বড় ধরনের বাধার আশঙ্কা রয়েছে৷

এমন প্রেক্ষাপটে গত ২৮ এপ্রিল ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিচারপতি এবং বিচারকদের উদ্দেশ্যে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে আমাদের সামনে বিচারপতি বা অন্য সবাই রয়েছেন, তাঁদের আমি অনুরোধ করব, হ্যাঁ, আমাদের ইসলাম ধর্ম বা মুসলিম আইন (শরিয়া আইন) মানতে হবে, এটা ঠিক৷

কিন্তু কেবল শরিয়া আইনের দোহাই দিয়ে মা-মেয়েকে বঞ্চিত করে বাবার সম্পদ যে তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়, তার কোনো সুরাহা করা যায় কিনা- আপনারা দয়া করে একটু দেখবেন৷ এটা করা দরকার৷’’

শরিয়া আইন মানলে সম্পত্তিতে নারীদের সমান ভাগ দেওয়ার সুযোগ থাকবে না বলেই মত দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. যুবাইর মুহাম্মদ এহসানুল হক৷

তিনি বলেন, ‘‘সংসদ চাইলে আইন পরিবর্তন করতে পারে৷ তবে মুসলমানদের জন্য করতে হলে আলেম সমাজের মতামত নিতে হবে৷’’

ইসলামের বিধান সম্পর্কে এহসানুল হক বলেন, ‘‘ইসলামের উত্তরাধিকার আইন নিয়ে আল্লাহ পাক পবিত্র কোরানে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন৷ তো সেক্ষেত্রে আল্লাহপাকের নির্দেশনা হচ্ছে, ‘লিজ্জাকারে মিসলু হাজ্জিল উন সাইয়াইন’ বা দুই মেয়ে সমান একজন ছেলে পাবেন৷ এবং কোরানে এই বিধান সমন্বয় করার পরে আয়াতের শেষে বলা হয়েছে, ‘তিলকা হুদুদুল্লাহ’ অর্থাৎ এগুলো আল্লাহর সীমারেখা, এগুলো তোমরা অতিক্রম করবে না৷

এজন্য আলীমগণ ইসলামের যে উত্তরাধিকার আইন তা পরিবর্তনের পক্ষে মত প্রদান করেন না৷ অর্থাৎ, ইসলামের উত্তরাধিকার আইনে পরিবর্তন আনা যাবে না৷’’

নারীদের জন্য পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তি রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে মহিলারাই সম্পত্তি পায়, পুরুষরা পায় না৷ কিন্তু শুধুমাত্র ছেলে-মেয়ের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, দুই মেয়ে সমান একজন ছেলে৷ তার পেছনে ইসলামের পারিবারিক কাঠামোর যুক্তি আছে৷ এক্ষেত্রে পরিবারের কর্তা হিসেবে পুরুষকে নির্ধারণ করেছে৷ একথা রাসুল (সা.) বিদায় হজ্জেও বলেছেন, ‘তোমাদের স্ত্রীদের দায়িত্ব তোমাদের উপর৷’ স্ত্রী-সন্তান-বৃদ্ধ পিতা-মাতা সবার দায়িত্ব পুরুষের ওপর৷ এই দৃষ্টিকোণ থেকে ইসলাম পৈত্রিক সম্পত্তি (ছেলেকে) দ্বিগুণ দিয়েছে৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমি একটা ভুল বোঝাবুঝি দূর করার জন্য বলতে চাই, সকল ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারের বিষয়ে ছেলের দ্বিগুণ, মেয়ের একগুণ, এমন নয়৷ সন্তান মারা গেলে, সন্তানের সম্পদ হতে পিতা-মাতা সমান ছয় ভাগের এক ভাগ পায়৷ তেমনি কোনো ব্যক্তি মারা গেলে, সন্তান বা পিতা-মাতা না থাকলে ভাই-বোন তাঁর সম্পদের ভাগ সমান অংশ পায়৷ এভাবে দেখা যায় ১০টি ক্ষেত্রে  নারীরা পুরুষের সমান অংশ পায়৷’’

প্রধানমন্ত্রীর ওই আহ্বানের পর হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানকে মূল্যায়ন করে আমাদের মধ্যেকার দৃষ্টিভঙ্গিরও আজকে পরিবর্তন প্রয়োজন৷’’

‘আইনি অধিকারও নারীরা পান না’

শরিয়া আইনে নারীদের ভাগ পুরুষদের অর্ধেক হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে নারীরা সেই সম্পত্তিও পান না বলে মন্তব্য করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন৷

তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির বিষয়টি বিভিন্ন আইনে বিভিন্নভাবে বলা আছে৷ যা বলা আছে, নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁদের যে প্রাপ্য, সেটাই পাচ্ছেন না৷

ভিন্ন কারণে৷ অধিকাংশ সময়ে সামাজিক কারণে৷ আমাদের সামাজিক অবস্থার কারণে অনেক নারীদকে তাঁদের আত্মীয়-স্বজনের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়৷ বাবার উপরে, ভাইদের উপরে, অনেক সময় সেই প্রেক্ষিত এবং পারিবারিক সমর্থন পাওয়ার জন্য অনেক সময় নারীরা উত্তরাধিকারের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন তোলেন না, দাবি তোলেন না আসলে৷ সেটাই হলো বাস্তবতা৷’’

মালয়া ইউনিভার্সিটির ‘দ্য রাইটস অফ উইমেন ইন প্রোপার্টি শেয়ারিং ইন বাংলাদেশ: ক্যান দ্য ইনহেরিটেন্স সিস্টেম এলিমিনেইট ডিসক্রিমিনেশন?’ শীর্ষক গবেষণায় নারীরা কীভাবে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সেটার চিত্র দেখানো হয়৷

এতে বলা হয়, বেশিরভাগ নারীই তাদের উত্তরাধিকার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন৷ যাঁরা সম্পত্তি পান, তাঁরা স্বাধীনভাবে ভোগ করতে কিংবা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না৷ যাঁরা ভাইদের কাছ থেকে সম্পত্তির অধিকার চান, তাঁদেরকে অনেক সময় একঘরে করে ফেলা হয়৷ এক্ষেত্রে আইনি অধিকার চাওয়া এবং না পাওয়ার প্রবণতা আছে৷প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে নারী সংগঠনগুলোকে জোরালো দাবি তোলার আহ্বান জানিয়ে সারা হোসেন বলেন, ‘‘এখন আশা করা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের ভিত্তিতে সাংসদরা যাঁরা আছেন, বা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের উচিত সমান অধিকারের ব্যাপারটি দেখা৷ যেমন আমাদের নারী ও শিশু মন্ত্রণালয় বলেন বা আইন মন্ত্রণালয় বলেন, তারা এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পারেন৷

শরিয়া আইন ঠিক রেখেও ‘আছে সমাধান’

শরিয়া আইনের ভেতরে থেকেও সম্পত্তিতে নারীদের সমান ভাগ নিশ্চিতের সুযোগ আছে বলে পথ বাতলে দিয়েছেন আইনজীবী সারা হোসেন৷ ওই আইনে হেবা বা দানের যে বিধান আছে, সেটাকে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে মন্তব্য তাঁর৷

ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, ‘‘সেটা সম্ভব এইভাবে যে, আজকাল অনেকে করছেন এমন, আরো অনেককে উদ্বুদ্ধ করা যায়, যাঁরা তাঁদের সম্পত্তি সমানভাবে তাঁদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ভাগ করে দেন৷ সেক্ষেত্রে বেঁচে থাকতে মা-বাবা বা পিতা-মাতা যদি তাঁদের সম্পত্তি হেবা করে দেন, তাঁদের সন্তানদের কাছে, সেখানে তাঁরা সমান ভাগ দিয়ে হেবাটা করতে পারেন৷ সেভাবে এক অর্থে অসম যে ব্যবস্থা আছে, সেটা সমাধান করা সম্ভব৷’’

তিনি বলেন, ‘‘ইদানীং আমরা দেখছি, অনেকে, বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের মধ্যে এক নারী সন্তান বা দুই নারী সন্তান, অথবা যাঁদের ছেলে-সন্তান মেয়ে-সন্তান দু’টোই আছে, তাঁরা চলে যাওয়ার পর ছেলে-মেয়েদের মধ্যে যাতে কোনো কোন্দল বা ভুল বোঝাবুঝি না হয়  তাই তারা আগে থেকে ঠিক করে যাচ্ছেন যে, কীভাবে তাদের সম্পত্তি ভাগ করা হবে৷ এভাবে সমাধান করা যায়৷ আমি যতদূর জানি, শরিয়া কোনো সমস্যাই হয় না, যেহেতু শরিয়া অনুযায়ী হেবা করা যায়৷’’

আরও নিউজ পেতে ক্লিক করুন 

Do women get equal rights in property at all? Hindu women have no right to share in property In the case of Muslim women, their share in Sharia law is half that of men, which is also not the fate of the majority Thus, the women of Bangladesh have been deprived of land rights for ages

In this context, Prime Minister Sheikh Hasina has recently called for ensuring equal rights of women in inherited property. While his call has raised hopes, many are skeptical about how it will be implemented.

Barrister Sara Hossain, executive director of the Bangladesh Legal Aid and Services Trust (BLAST), told Deutsche Welle: Because, there is no provision of equality in some laws To do that, the law needs to be amended. “

“The law can be amended in the hands of the MPs Responsibilities, rights or opportunities are theirs We do not see any such initiative from the parliamentarians. ” Although no recent study has been found, a 2014 study shows that 80% of women in Bangladesh do not own property. As a result, they are dependent on the male members of the family, even if they want to do something, but it is not possible

According to the study, one percent of the wealth, but later lost 7 29% of women have inherited property through inheritance 72% of women entrepreneurs and workers said that they do not have any rights or ownership in their property Most women can’t even comment on the use of their resources Only 26 percent of women get the opportunity to give an opinion

Although various organizations have raised demands for equal rights of women in property, no effective action has been taken

Although women’s rights policy in 1997 called for equal rights for men and women in land rights, it was not explicitly linked. Even the new law has not been initiated in 21 years

There are fears of major obstacles from various Islamic organizations, including Hefazat-e-Islam, to change Sharia law.

In this context, addressing the judges and judges present at the National Legal Aid Day on April 26, Prime Minister Sheikh Hasina said, “In this case, we have a judge or everyone else in front of us. Law) must be obeyed, it is exactly 6

But please see if there is any solution to the issue of deprivation of mother and daughter and deprivation of father’s property only on the pretext of Sharia law. It needs to be done. “

If Sharia law is obeyed, women will not have the opportunity to share equally in the property, said Dr. Associate Professor of the Department of Arabic, University of Dhaka. Zubair Muhammad Ehsanul Haque 6

“Parliament can change the law if it wants to,” he said But for Muslims to do that, they have to take the opinion of the scholarly community. “

Regarding the provisions of Islam, Ehsanul Haq said, “Allah has clearly stated in the Holy Qur’an about the law of inheritance of Islam. In that case, the instruction of Allah is, ‘Lijjakare mislu hajjil un sayain’ or two daughters will get one son. And after adjusting this provision in the Qur’an, it is said at the end of the verse, “Tilka Hududullah” means these are the limits of Allah, these you will not transgress.

বায়না নামা দলিল

জেলা-ঢাকা, থানা-পল্লবী অধীন, মৌজা-“দুয়ারীপাড়া” স্থিত, সাফ বিক্রয়ের বায়না নামা দলিল মোট মং-৬৫,০০,০০০/- (পঁয়ষট্টি লক্ষ) টাকা, বায়না বাবদ অগ্রীম মং-২,০০,০০০/= (দুই লক্ষ) টাকা মাত্র, বায়না কৃত সম্পত্তি-০৮২৫ অযুতাংশ বা /৫ (পাঁচ) কাঠা ভূমির উপর নির্মিত ৭ (সাত) তলা বিশিষ্ট ইমারতের ৭ম তলার দক্ষিন পার্শ্বের ১৪৫০ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট এবং মোট ভূমির কাতে অবিভক্ত ও অচিহ্নিত ০০৫৮.৯২ (আটান্ন দশমিক নয় দুই) অযুতাংশ ভূমি ও যাবতীয় হকহকুক সহ বায়নাকৃত বটে। বায়নার মেয়াদ-২ (দুই) মাস।

১। আব্দুল মান্নান, বয়স/জন্ম তারিখ-০১/০১/১৯৬২ ইং, জাতীয় পরিচিতি নম্বরঃ-২৬৯৩০১৬০৮৩৭০৪, ২। রেবেকা সুলতানা, জন্মতারিখ-২১/১১/১৯৭২ ইং, জাতীয় পরিচিতি নম্বরঃ-২৬৯৩০১৬০৮৩৬৮৮, স্বামী-আব্দুল মান্নান, উভয়ের সাকিন—————————  জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম-ইসলাম, পেশা-চাকুরী ও গৃহিনী।

***** বায়না নামা দলিল গ্রহিতা ও গ্রহিত্রী।

১। মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, বয়স/জন্ম তারিখ-২৮/০৮/১৯৭১ ইং, পিতা-মরহুম মেহের আলী বিশ্বাস, মাতা-মরহুমা হামিদা খাতুন,  ঠিকানা-গ্রাম ও ডাকঘর-আনন্দবাস, থানা-মুজীব নগর, জেলা-মেহেরপুর, ২। মোঃ নজরুল ইসলাম, জন্মতারিখ-০৩/০৮/১৯৬০ ইং, পিতা-মরহুম নূর মোহাম্মদ বিশ্বাস, মাতা-ছপুরা খাতুন, ঠিকানাঃ-গ্রাম-মুন্সীপুর, ডাকঘর-পিরপুর কুল্লা, থানা-মামুড়হুদা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা। ৩। মোঃ শাহজাদা হোসেন, জন্মতারিখ-২৬/০৭/১৯৮২ ইং, পিতা-মোঃ আখতার হোসেন জোয়ার্দ্দার, মাতা-মোসাম্মৎ আশরাফী আখতার, ঠিকানাঃ-গ্রাম-হাজীপুর, থানা ও জেলা-মাগুরা, ৪। মোঃমাইনুল ইসলাম, জন্মতারিখ-২৯/১১/১৯৮২ ইং, পিতা-মরহুম মুন্সী গোলাম ইউসুফ, মাতা-মরহুমা আনোয়ারা বেগম, ঠিকানা-গ্রাম ও ডাকঘর-হাজীপুর, থানা ও জেলা-মাগুরা, ৫। নাছির মিয়া, বয়স-৪০ বৎসর, পিতা-মান্নান মিয়া, মাতা-জরিনা বেগম, ঠিকানাঃ-গ্রাম-আলেপুর, ডাকঘর-উমেদপুর, থানা-শিবচর, জেলা-মাদারীপুর, ৬। মোঃ মাহ্তাব উদ্দিন সরকার, জন্মতারিখ-০১/০১/১৯৬৩ ইং, পিতা-মোঃ ময়েন উদ্দিন সরকার, মাতা-মতি বেগম, ঠিকানাঃ-গ্রাম-দোগাছি, ডাকঘর-লক্ষী চামারী, থানা-বড়াইগ্রাম, জেলা-নাটোর, ৭। মোঃ মুসা আল গনী, জন্মতারিখ-৩১/১২/১৯৫৮ ইং, পিতা-মরহুম আব্দুল গনী আকন্দ, মাতা-জমিলা খাতুন, ঠিকানাঃ-গ্রাম-কাজীপুরা, ডাকঘর-পেছর পাড়া, থানা-কামার খন্দ, জেলা-সিরাগঞ্জ, ৮। মোঃ আবু হানিফ, জন্মতারিখ-১৫/০১/১৯৬০ ইং, পিতা-মৃত সাইজ উদ্দিন মাতা-মৃত মরিয়ম বেগম, ঠিকানা-গ্রাম-জাঙ্গালীয়া, ডাকগর-নয়নাবাদ, থানা-আড়াই হাজার, জেলা-নারায়নগঞ্জ, ৯। মোঃ আবুল বাশার, জন্মতারিখ-১৮/০১/১৯৫২ ইং, পিতা-মরহুম আব্দু রাজ্জাক, মাতা-মরহুমা হাজেরা খাতুন, ঠিকানাঃ-১৬৫/এ, পশ্চিম আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ১০। মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, জন্মতারিখ-০১/০৩/১৯৬২ ইং, পিতা-মুহাম্মদ মফিজ উদ্দিন, মাতা-মনোয়ারা খাতুন, স্থায়ী ঠিকানাঃ-গ্রাম-ধানাইদহ, ডাকঘর-পাঁচবাড়ীয়া, থানা-বড়াইগ্রাম, জেলা-নাটোর, বর্তমান ঠিকানাঃ-৯/২, রূপনগর আ/এ, থানা-পল্লবী, জেলা-ঢাকা। জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম-ইসলাম, পেশা-চাকুরী ও ব্যবসা।

*** বায়না নামা দলিল দাতাগণ

পরম করুনাময় মহান আল্লাহ তায়ালার নাম স্মরণ করিয়া অত্র বায়না নামা দলিলের বয়ান আরম্ভ করিলাম, যেহেতু নিম্ন তফসলি বর্ণিত সম্পত্তি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নির্বাহী প্রকৌশলী, হাউজিং এন্ড সেটেলমেন্ট, মিরপুর বিভাগ, সেগুনবাগিচা ঢাকা এর সহিত বিগত ২২/০৩/১৯৮০ ইং তারিখে রেজিস্ট্রীকৃত ১১১৭৫ নং একখন্ড এওয়াজ বদল দলিল বলে ইষ্টার্ণ হাউজিং কোম্পানী লিঃ নিম্ন তফলি বর্নিত সম্পত্তি এওয়াজ সূত্রে মালিক বিদ্যমান হইয়া তফসিল বর্নিত সম্পত্তিতে কোম্পানী কর্তৃক সৃজিত নক্সা অনুযাযী বিভিন্ন সাইজের প্লট তৈরী করিয়া বিক্রয়ের প্রস্তাব করিলে তৎপর তাহার নিকট হইতে এ. বি. এম হাফিজুর রহমান বিগত ইংরেজী ১৩/০৫/১৯৮২১৪/০৫/১৯৮২  তারিখে তেজগাঁও সাব-রেজিস্ট্রী অফিসে রেজিস্ট্রীকৃত ৩৪৩৬ নং সাফ কবলা দলিল মুলে উক্ত ইষ্টার্ণ হাউজিং লিঃ এর নিকট হইতে খরিদ করিয়া খরিদা সূত্রে স্বত্ববান মালিক নিয়ত হইয়া উক্ত এ. বি. এম হাফিজুর রহমান এর নামে নামজারী ও জমাভাগ করাইয়া ভোগ দখলে থাকাবস্থায় বিগত ইংরেজী ২০/০৯/২০০৮ সন তারিখে মিরপুর সাব-রেজিস্ট্রী অফিসে রেজিস্ট্রীকৃত ৯৩২০ নং সাফ কবলা দলিল দ্বারা আমরা অত্র দলিল দাতাগণের বরাবরে সাফ বিক্রয় করিয়া বিক্রীত সম্পত্তি হইতে উক্ত এ. বি. এম হাফিজুর রহমান চিরতরে নিঃস্বত্ববান ও দখলত্যাগী হন।

অতঃপর আমরা অত্র দলিল দাতাগণ উল্লেখিত সাফ কবলা দলিল মুলে যৌথভাবে খরিদ করিয়া খরিদা সূত্রে স্বত্ববান মালিক নিয়ত হইয়া বিগত ইংরেজী-২৪/১১/২০০৮ তারিখে নামজারী ও জমাভাগ মোকদদমা নং-২৮৫৪/২০০৮-০৯ এর বলে ৩২২ নং জোতে সরকারের ধার্য্যকৃত বার্ষিক খাজনাদি পরিশোধক্রমে নিম্ন তফসিল বর্ণিত ভূমির উপর রাজউক অনুমোদিত নকশা মোতাবেক ০৭ (সাত) তলা বিশিষ্ট ইমারত নির্মান করিয়া উহাতে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি সংযোগ দিয়া এযাবৎকাল অন্যের বিনা ওজর আপত্তিতে ও নির্বিবাদে পরম সুখে ভোগ দখল করিয়া আসিতেছি।বর্তমান সময়ে আমরা অত্র দলিল দাতার সাংসারিক ও অন্যান্য প্রযোজনে নগদ টাকার একান্ত আবশ্যক হওয়ায় নিম্ন তফসিল বর্ণিত জমি বিক্রয় করার কথা প্রকাশ্যে ঘোষনা করিলে পর আপনারা অত্র দলিল গ্রহিতা ও গ্রহিত্রী উক্ত সংবাদ অবগত হইয়া নিম্ন তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি খরিদ করিতে ইচ্ছুক হইয়া মোট মূল্য মং-৬৫,০০,০০০/- (পঁয়ষট্টি লক্ষ) টাকা মাত্র ধার্য্য করিলে পর সেমতে আমরা অত্র দলিল দাতাগণ বর্তমান বাজার দর যাচাই পূর্বক আপনাদের ধার্য্যকৃত মূল্যই বর্তমান বাজারের সর্বোচ্চ মূল্য বিবেচনা করিয়া অদ্য রোজ হাজিরান মজলিশের স্বাক্ষীগনের মোকাবেলায় বায়না বাবদ মং-২,০০,০০০/= (দুই লক্ষ) টাকা আপনারা অত্র দলিল গ্রহিতা ও গ্রহিত্রীর নিকট হইতে নগদ হাতে হাতে বুঝিয়া পাইয়া নিয়া স্বীকার ও অঙ্গীকার করিতেছি যে, অদ্য তারিখ হইতে ০২ (দুই) মাস বায়না বাদে বাকী-৬৩,০০,০০০/= (তেষট্টি লক্ষ) টাকা বুঝিয়া নিয়া আপনারা অত্র দলিল গ্রহিতা ও গ্রহিত্রীর বরাবরে মূল সাফ কবলা দলিল স¤পাদন ও রেজিষ্ট্রি করিয়া দিতে ওয়ারিশানগনক্রমে বাধ্য রহিলাম। যদি না দেই বা টাল বাহানা করিয়া উক্ত মেয়াদ অতিক্রম করার চেষ্টা করি তাহা হইলে আপনারা অত্র দলিল গ্রহিতা ও গ্রহিত্রী বাকী টাকা উপযুক্ত আদালতে জমা দিয়া অত্র বায়না নামা দলিল আদালতে দাখিল করতঃ আমার অনুপস্থিতিতে আদালত কর্র্তৃক মূল সাফ কবলা দলিল রেজিষ্ট্রি করিয়া নিতে পারিবেন। তাহাতে আমরা অত্র দলিল দাতাগণ ও আমাদের অলি ওয়ারিশনগন ক্রমে কাহারো কোন প্রকার ওজর আপত্তি নাই বা রহিল না। যদি আমরা অত্র দলিল  দাতাগণ বা আমাদের অলি ওয়ারিশগনক্রমে কেহ কোন প্রকার ওজর আপত্তি করে তাহা হইলে সর্ব আদালতে অগ্রাহ্য বা বাতিল বলিয়া গন্য হইবে। এতদ্বার্থে স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে, সুস্থ্য শরীরে অত্র বায়না নামা দলিল লিখাইয়া নিজে পাঠ করিয়া ও অনের দ্বারা পাঠ করিয়া উহার মর্ম ও ফলাফল অবগত হইয়া নিম্ন লিখিত স্ব্ক্ষাীগনের মোকাবেলায় বায়না বাবদ টাকা গ্রহন করিয়া সহি সম্পাদন করিয়া দিলাম। ইতি তারিখঃ-

বায়নাকৃত সম্পত্তির তফসিল পরিচয়

জিলা-ঢাকা, থানা-সাবেক মিরপুর হালে পল্লবী ও সাব-রেজিষ্ট্রী অফিস মিরপুর অধীন, ঢাকা কালেক্টরীর তৌজিভুক্ত, জে, এল নম্বরঃ- সি,  এস-২১৯ নং, এস,এ-৪৪ নং, আর,এস-১৮ নং, মৌজা-“দুয়ারীপাড়া” স্থিত।

খতিয়ান নম্বরঃ-সি, এস ১৩ নং ও ২ নং, এস, এ-২ নং, আর, এস-১ নং খতিয়ানভুক্ত। খারিজা ৩২২  নং জোতভুক্ত।

দাগ নম্বরঃ-সি, এস  ও এস, এ-৬০ (ষাট) ও ৭৫ (পঁচাত্তর) নং, আর, এস ৯০ (নব্বই) নং, ৯১ (একানব্বই) নং ও ১২০ (একশত বিশ) নং দাগের কাতে ০৮২৫ অযুতাংশ বা /৫ (পাঁচ) কাঠা ভূমির উপর নির্মিত ৭ (সাত) তলা বিশিষ্ট ইমারতের ৭ম তলার দক্ষিন পার্শ্বের ১৪৫০ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট এবং মোট ভূমির কাতে অবিভক্ত ও অচিহ্নিত ০০৫৮.৯২ (আটান্ন দশমিক নয় দুই) অযুতাংশ ভূমি ও যাবতীয় হকহকুক যেমন-কমন করিডোর, কমন লিফট/সিঁড়ি, পয়ঃনিস্কাশন প্রণালী, সাধারন চলাচলের রাস্তা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, লাইন, ভূ-গর্ভস্থ পানির ট্যাংক, ছাদের উপরিস্থিত পানির ট্যাংক, ছাদের ব্যবহার গেইট ইত্যাদি সুবিধাদি এজমালিতে ভোগের অধিকার প্রদান সমেত অত্র দলিল দ্বারা বায়নাকৃত সম্পত্তি বটে।  যাহা ইষ্টার্ণ হাউজিং কোম্পানী লিঃ এর লে-আউট প্ল্যান মোতাবেক প্লট নং-এইচ/৫, ব্লক-এইচ বটে। যাহা ঢাকা সিটি জরীপ দাগ নং-২২৬৬। যাহার চৌহুদ্দিঃ-উত্তরে-কোম্পানীর লে-আউট রাস্তা, দক্ষিনে-কোম্পানীর লে-আউট প্লট নং-এইচ/১৭, ব্লক-এইচ, পূর্বে-কোম্পানীর লে-আউট প্লট নং-এইচ/৪, ব্লক-এইচ, এবং রাস্তা, পশ্চিমে-কোম্পানীর লে-আউট প্লট নং-এইচ/৬, ব্লক-এইচ।অত্র বায়না নামা দলিল (৩) ফর্দে কম্পোজকৃত এবং ( ) জন স্বাক্ষী রহিয়াছে।    মুসাবিধাকারক

কম্পোজকারক

(সোহেল হোসেন)

তেজগাঁও শি/এ, ঢাকা।

স্বাক্ষীগনের স্বাক্ষরঃ-

১।

২।

৩।

হলফনামা

মাননীয়

সাব-রেজিষ্ট্রার সাহেব সমীপে

এস, আর, অফিস গুলশান, ঢাকা।

তাসলিমা আক্তার, বয়স/জন্ম তারিখ-০৬/০৬/১৯৬৬ ইং, স্বামী-মোঃ কামরুজ্জামান ভুইয়া, পিতা-আবদুল খালেক, মাতা-আনোয়ারা বেগম, সাকিন-১৭০/বি, তেজকুনিপাড়া, থানা-তেজগাঁও, জেলা-ঢাকা, জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম-ইসলাম, পেশা-গৃহিনী। রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সনের ১৪২ নং আদেশ মোতাবেক অত্র শপথ/হলফ নামা দ্বারা প্রতিজ্ঞা পুর্বক এই মর্মে ঘোষনা করিতেছি যে,

১। আমি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দা।

২। সংযুক্ত দলিলে যে স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করা হইয়াছে তাহা বাংলাদেশ দালাল আইন ১৯৭২ সনের রাষ্ট্রপতির ৮ নং আদেশ বলে আটক করা হয় নাই।

৩। হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত সম্পত্তি বাংলাদেশ পরিত্যাক্ত সম্পত্তি আইন ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির ১৬ নং আদেশের সংগানুযায়ী পরিত্যাক্ত সম্পত্তি নহে।

৪। হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত সম্পত্তি বাংলাদেশ প্রচলিত যে কোন আইন অনুসারে তাহা বাতিল যোগ্য নয় এবং প্রচলিত কোন আইনের কোন বিধানের পরিপন্থী নয়।

৫। হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত সম্পত্তি বাংলাদেশ প্রচলিত যে কোন আইনের পরিপন্থী নহে।

৬। হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত সম্পত্তি বাংলাদেশ ভূমি সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ আইন ১৯৭২ সনের রাষ্ট্র প্রধানের ৯৮ নং আদেশ এর ৫ “ক” ধারা অনুসারে তাহা বাতিল যোগ্য নহে এবং প্রচলিত কোন আইনের কোন বিধানের পরিপন্থী নয়।

৭। ঘোষনা করিতেছি যে, উপরোক্ত বর্ণনা আমার জ্ঞানমতে সম্পূর্ন সত্য এবং অদ্য রোজ সাব-রেজিষ্ট্রার সাহেবের সম্মুখে উপস্থিত হইয়া অত্র হলফনামা সহি সম্পাদন করিয়া দিলাম।

হলফকারী আমার পরিচিত। তিনি অত্র অফিসে হাজির আছেন এবং আমার সম্মুখে টিপ/স্বাক্ষর প্রদান করিলেন। অত্র হলফনামার ঘোষনা করিয়া যাহা বলিলাম তাহার জ্ঞানমতে সত্য এবং অদ্য সাব-রেজিষ্ট্রার সাহেবের সম্মুখে দস্তখত করিলাম। ইতি তাারিখঃ-

সনাক্তকারীর স্বাক্ষর                                                                           হলফকারীর স্বাক্ষর

ভূমি তথ্যসেবায় যোগ হলো নতুন একটি ইমেইল ঠিকানা। এই ইমেইল ঠিকানায় এখন থেকে ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত যেকোনও তথ্য পাওয়ার অনুরোধ করা যাবে। তথ্য প্রাপ্তির অনুরোধের পর তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী তথ্য সরবরাহ করবে ভূমি মন্ত্রণালয়। মেইল ঠিকানাটি হচ্ছে info@minland.gov.bd । ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভূমিবিষয়ক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান, ভূমিসেবা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শসহ দেশে বিদ্যমান ভূমি সংক্রান্ত আইন ও বিধিবিধান সম্পর্কে জানতে ভূমিসেবা হটলাইন ১৬১২২-এ ফোন করার পাশাপাশি info@minland.gov.bd-এ ইমেইল করা যাবে।

info@minland.gov.bd ইমেইল ব্যবস্থাপনার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আরও নিউজ পেতে ক্লিক করুন

ভূমি রেজিষ্ট্রেশনঃ

সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়কে স্থায়ী করেরাখবার একটি চমৎকার উপায় হইতেছে রেজিষ্ট্রেশন আইন। সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়মৌখিকভাবে হতে পারে। আবার লিখিত দলিল দ্বারাও হতে পারে। কিন্তু মৌখিকভাবেক্রয়-বিক্রয়ের বিপদ অনেক। প্রতারিত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সময়ের সাথেসাথে সম্পত্তির মূল্য বৃদ্ধি পায়। ফলে অনেকেই লোভ সম্বরণ করতে না পেরে ছলেবলে এবং কৌশলে কি করে অন্যের সম্পত্তি আত্মসাত করা যায় তার প্রচেষ্টাচালায়। যিনি সম্পত্তি বিক্রয় করেন তিনি লোভের বশবর্তী হয়ে বিক্রয়টিঅস্বীকার করিতে পারেন বা সম্পূর্ণ বিক্রয় মূল্য পান নাই বলে আপত্তিউপস্থাপন করতে পারেন। কাজেই দেখা যাচ্ছে সম্পত্তি মৌখিকভাবে ক্রয়-বিক্রয়েরবিপদ অনেক। কিন্তু লিখিত দলিল দ্বারা সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় করলে বিপদ অনেককম থাকে। এমনকি প্রতারিত হবার সম্ভাবনাও কম থাকে। কেননা লিখিত দলিল মৌখিকদাবীর চাইতে মূল্যবান এবং অনেক বেশি প্রাধান্য পায়। লিখিত দলিল থাকলেমিথ্যা দাবী তুলে ক্রয়-বিক্রয় অস্বীকার করিয়া সুবিধা করা যায় না। কিন্তুলিখিত দলিল কি সব সময় নিরাপদ? না তাও নয়। কেননা লিখিত দলিল দ্বারাওপ্রতারণার সম্ভাবনা থাকে। দলিল লিখিয়া তাহা দশ পনের বৎসর পূর্বে সম্পাদিতহয়েছিল। কাজেই দেখা যাচ্ছে যে সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় লিখিত দলিল দ্বারা হলেইযে বিপদের আশংকা থাকে না, তা নয়। এই আশংকা দূর করবার বিধান রেজিষ্ট্রেশনআইনে দেওয়া হয়েছে। যাহাতে লিখিত দলিলের পিছনের তারিখ দিয়া দলিল রেজিষ্ট্রিকরে নেওয়া সম্ভব না হয়। কারণ এই আইনে দলিল সম্পাদনের চার মানের মধ্যেইরেজিষ্ট্রির জন্য দলিল দাখিল করার বিধান দেওয়া হয়েছে। লিখিত দলিল হারিয়েযাইতে পারে, নষ্ট হয়ে যেতে পারে, অপাঠ্য বা অস্পষ্ট হয়ে পড়িতে পারে। কিন্তুদলিলখানি যদি রেজিষ্ট্রি হইয়া থাকে তা হলে সহজেই ঐ দলিলের নকল নেওয়া যেতেপারে। রেজিষ্ট্রেশন আইনের বলেই তা সম্ভব হয়েছে। বহু বৎসরের অতিকভজ্ঞতার ফসলএই রেজিষ্ট্রেশন আইন। ডোমার উপজেলা থেকে চিলাহাটির দুরত্ব ২০ কিঃমিঃ। ফলেদুরত্ব বিবেচনা করে চিলাহাটিতে একটি সাব রেজিষ্ট্রি অফিস রয়েছে যেখানেসপ্তাহে ৪ দিন জমি রেজিষ্ট্রেশন করা হয়। ডোমার উপজেলায় মোট ২ টি সাবরেজিষ্ট্রি অফিস রয়েছে। রেজিষ্ট্রেশনের ফি নিম্নে উলেস্নখ করা হলোঃ

রেজিষ্ট্রেশন আইনের প্রকৃতি

রেজিষ্ট্রেশন আইনের উদ্দেশ্য

রেজিষ্ট্রেশন আইনের ক্রম বিকাশ

রেজিস্ট্রেশন প্রশাসন

বিভিন্ন প্রকার দলিল

রেজিষ্ট্রি দলিলের আবশ্যকীয় শর্তাবলী

রেজিষ্ট্রেশন আইনের প্রকৃতিঃ

জেরিমি বেনথামের মতে সাবস্টেন্টিভঅথবা এ্যাডজেকটিভ ধরণের হইবে। প্রথমটি হচ্ছে মূল আইন এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছেপ্রথমটিকে বাস্তবায়ন করিবার পদ্ধতিগত আইন, দ্বিতীয়টি আদালত পরিচালনারপদ্ধতি, পক্ষগণের উপর সমন জারীর পদ্ধতি, সাক্ষী ও দলিলাদি হাজির করিবারইত্যাদি পদ্ধতির বিষয় বর্ণনা করে। এই আইনকে কার্যকরী করার জন্য বিধিমালাপ্রণয়নের বিধান এই আইনে রয়েছে। এই আইনটি রেজিষ্ট্রি দ্বারা দলিলের সত্যতাসম্পর্কে মানুষের মনে বিশ্বাস জন্মায়।

রেজিষ্ট্রেশন আইনের উদ্দেশ্যঃ

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-সম্পত্তি সম্পর্কিতস্বত্ত্বের জার দলিল প্রণয়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি করা এবং দলিলেরযথার্থতা সম্পর্কে চূড়ান্ত নিশ্চয়তা বিধান করাই রেজিষ্ট্রেশন আইনেরউদ্দেশ্য। জালদলিল ও মিথ্যা স্বাক্ষী দ্বারা সমর্থিত মিথ্যা দাবির উপরপ্রতিষ্ঠিত এরূপ সম্পত্তি বিষয়ক মামলা প্রতিরোধ করবার অভিপ্রায়েই এই আইনেরসৃষ্টি হয়েছে। রেজিষ্ট্রীকরণের অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হইল, স্থাবর-সম্পত্তির ক্রেতাদের স্বত্ত্বের অবস্থা নির্ণয়ের অবলম্বন প্রদানকরা। রেজিষ্ট্রীকরণের উদ্দেশ্য হইল-স্বত্ত্বের নিশ্চয়তা প্রদান করা ওজাল-জালিয়াতি ও গোপনীয় আদান-প্রদান প্রতিরোধ করা এবং একটি সম্পত্তিতে একজনব্যক্তির এরূপভাবে অর্জিত স্বত্ত্ব পরাভূত করা। রেজিষ্ট্রীকরণ পদ্ধতিস্বত্ত্বের নিশ্চয়তা প্রদান করছে। কারণ মূল দলিল হারিয়ে গেলে বা বিনষ্টহলেও স্বত্ত্ব হায়ায় না বা নিবষ্ট হয় না। রেজিষ্ট্রীকরণ আই স্বত্ত্ব প্রমাণকরবোর সুযোগের বিধান রেখেছে। রেজিষ্ট্রেশন আইন কর্তৃক দলিলের রেজিষ্ট্রীবাধ্যতামূলক করেছে। রেজিষ্ট্রীযোগ্য দলিল রেজিষ্ট্রী ব্যতীত বৈধ নয়, এরূপদলিলের বৈধতা নির্ধারণের প্রয়োজনে বা সাক্ষ্যে গ্রহণযোগ্যতা আণয়নের জন্যরেজিষ্ট্রীর আবশ্যক হয় না। একই সম্পত্তি সম্পর্কিত একটি রেজিষ্ট্রীকৃত এবংঅন্যটি রেজিষ্ট্রীবিহীন দলিলের মধ্যে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে প্রথমটিইশক্তিশালী হয়। তেমনি রেজিষ্ট্রীকৃত উইল ব্যতীত অন্য সকল প্রকারস্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত দলিল ঐ সম্পত্তি বিষয়ক অপর কোন মৌখিকচুক্তি বা ঘোষণা অগ্রাহ্য করে বলবৎ হবে। শুধুমাত্র যে সকল ক্ষেত্রে মৌখিকচুক্তির সঙ্গে সঙ্গে বা অব্যাবহিত পরেই সম্পত্তির দখল হস্তান্তরিত হয়, সেক্ষেত্রে এইরূপ ব্যবস্থা প্রচলিত বিধান অনুসারে আইনানুগ হবে। আইন আরো বিধানকরেছে যে, একটি দলিল অবশ্যই রেজিষ্ট্রীকরণের জন্য যথাযথ রেজিষ্ট্রী অফিসেএবং সম্পাদনের তারিখ হইতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দাখিল করতে হবে। ইহারপর প্রথমতঃ রেজিষ্ট্রারী কর্মকর্তাকে অনুসন্ধান ও নির্ণয় করতে হয় যে, প্রশেড়বাক্ত দলিল সম্পর্কে আইনের বিধানাবলী প্রতিপালিত হয়েছে কিন, এবংদ্বিতীয়তঃ দলিলটি সম্পাদিত হয়েছে কিনা। যদি এই দুইটি বিষয়ে, তিনি সন্তুষ্টহন, তবে তিনি দলিলটি গ্রহণ করে সঠিক বহি বাবালামে নকল করাবেন এবং দলিলেতাঁর অফিসের মোহরাঙ্কিত এবং তাঁর স্বাক্ষর যুক্ত পূর্বক তা রেজিষ্ট্রী করাহয়েছে এই প্রত্যায়ন প্রদান করে দাখিলকারক বা তাহার প্রতিনিধিকে দলিলটি ফেরতদিবেন। উইল ব্যতীত স্তাবর সম্পত্তি বিষয়ক দলিলের বহি বা বালামসর্ব-সাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত। সংক্ষেপে উপরোক্ত বিষয়াবলীরেজিষ্ট্রীকরণ আইনের প্রধান প্রধান বিধান। রেজিষ্ট্রীকৃত

দলিলের মাধ্যমেই স্থাবর সম্পত্তিরআদান প্রদান কার্যকর হবে। এই আইনে এমন কোন বিধান সৃষ্টি করে নাই। যাহাপ্রয়োজন হচ্ছে-স্থাবর-সম্পত্তি বিষয়ক কতক দলিল অবশ্রই রেজিষ্ট্রী করতে হবেএবং সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত একটি রেজিষ্টারে এরূপরেজিষ্ট্রীকৃত দলিলসমূহ নকল করে রাখতে হবে। উপরোক্ত আলোচনা হতেরেজিষ্ট্রেশন আইনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া সম্ভব-যাহারসার-সংক্ষেপ

এরূপঃ

(১) দলিলের যথার্থতা সম্পর্কে চূড়ান্ত নিশ্চয়তা বিধান করা;

(২) আদান-প্রদানের প্রচার প্রদান করা;

(৩) জাল-জালিযাতি প্রতিরোধ করা;

(৪) একটি সম্পত্তির ইতিপূর্বে কোন বিধি-ব্যবস্থা হয়েছে কিনা উহা নির্ণয়ের সুযোগ প্রদান করা; এবং

(৫) স্বত্ব-দলিলের নিরাপত্তা বিধান করা এবং মূল দলিল হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে স্বত্ব প্রমাণের সুযোগ বিধান করা।

রেজিষ্ট্রেশন আইন সৃষ্টির এইউদ্দেশ্যসমূহ যদি যথাযথভাবে উপলব্ধি করা সম্ভব হয়, তবে আইন প্রণয়নের দুইশতাব্দী কাল পরেও রেজিষ্ট্রেশন আইন আজ যে বিকশিত অবস্থায় আছে, সেই অবস্থায়উহা সঠিকভাবে অনুসরণ করলে, আইন সম্পর্কে আগ্রহী ব্যক্তিদের নিকট এই আইনেরবিভিনড়ব ধারার তাৎপর্য স্পষ্টভাবেই প্রতিভাত হবে।

রেজিষ্ট্রেশন আইনের ক্রম বিকাশঃ

১৭৮১ খৃষ্টাব্দে তৃতীয় জর্জের আমলেরেজিষ্ট্রেশন আইন সর্বপ্রথম বঙ্গীয় বিধিবদ্ধ আইন নামে প্রাদেশিক আইন হিসেবেজন্মলাভ করে। উক্ত আইনের ১৪ ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ত্রিবিধ ক্ষমতা নিযেযথা- দলিল, রেজিষ্ট্রীকরণ, জরীপকরণ ও নামজারীকরণের প্রথম রেজিষ্ট্রার মিঃএডওয়ার্ড টিরেটা নিয়োগ লাভ করেন। পরবতৃীকালে ইংরেজ শাসকদের স্বার্থেসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিস্তারিত আইন প্রণয়ন ও উক্ত ত্রিবিধ ক্ষমতা পৃথকীকরণেরতাগিদে ১লা মে, ১৭৯৩ খৃষ্টাব্দে প্রণীত আইন পূর্ববর্তী আইনের সাথে সঙযোজিতহয়। ১৭৯৩ খৃষ্টাব্দেই সর্বপ্রথম হিন্দুদের ‘দত্তক’গ্রহণ ও সম্পত্তি উইলকরার বিধান প্রণয়ন করা হয়। এই আইনের আওতায় সর্বপ্রথম কলকাতার বাইরে ঢাকা, মুর্শিদাবাদ ও পাটনায় তিনটি পৃথক রেজিষ্ট্রী অফিস স্থাপন করা হয় এবংঅফিসগুলোর তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব প্রদান করা হয় দেওয়ানী আদালতেররেজিষ্ট্রার এর উপর। প্রকৃতপক্ষে এই আইনের বিধানসমূহ রাণী এ্যানেররাজত্বকালে ইয়র্ক শ্যায়ারের রেজিষ্ট্রেশন আইনের অনুকরণে প্রণীত হয়।পরবর্তীকালে ১৭৯৩ সালের বিধানাবলীকে সমৃদ্ধ, স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সময়োপযোগীকরার জন্য বিভিনড়ব সময নতুন আইনের সংযোজন ও পুরাতনের সংশোধন করা হয। তখনইকাজিউল কাজ্জাত (Head Kazi of Bengal) -এর পদ সৃষ্টি করে বাংলা, বিহার ওঊড়িষ্যার বেশ কিছু সংখ্যক জেলায় নিয়োগ করে তাঁদের অধিক্ষেত্রভূক্তি দলিলাদিসংরক্ষণ ও অনুলিপি সরবরাহ করার দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ১৭৯৩ সালেরসামগ্রিক বিধানাবলী ১৮০৩ সালে পুনরায় বিধিকরণ করে সাধারণ আইনের অন্তর্ভূক্তকরা হয় যা ১৮০৫ সালে ঊড়িষ্যার কটক অবধি বিস্তৃতিলাভ করে। ১৮৩৮ সালেসর্বপ্রথম উপ-রেজিষ্ট্রার (Suv- Registrar) -এর অফিস প্রতিষ্ঠার আইন প্রণয়নকরা হয়। ১৮৪৩ সালে প্রণীত আইনের দ্বারা রেজিষ্ট্রীকৃত দলিলসমূহকেঅরেজিষ্ট্রীকৃত (Un-Registered) দলিলাদির তুলনায় অগ্রাধিকার দেয়ার সুস্পষ্টবিধান রাখা হয়। এরপর ১৮৪৭, ১৮৫১, ১৮৫৬, ১৮৫৯ সালে রেজিষ্ট্রেশন আইনেরধারাবাহিকতা বজায় রেখে বিভিনড়ব ক্ষেত্রে সময়োপযোগী করে

সংশোধন করা হয়। এরপর ১৮৬৪ Act XVI সালে দ্বারা সর্বপ্রথম ১৭৯৩ সালের প্রাদেশিক বিধানাবলীকে বাতিল করে General Registration Act প্রণয়নকরত ১লা জানুয়ারী, ১৮৬৫ সাল হতে কার্যকর করা হয়।১৯৬৬ সালে সংযোজিত নতুন আইন দ্বারা রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতির এক আমূল পরিবর্তনকরে দলিল দাখিল করার বিধান প্রবর্তন করা হয়। পরবর্তীতে ১৮৭১ সালে Registrar General -এর পদ বাতির করে নতুন ও বর্ধিত দায়িত্ব দিয়ে Inspector General of Registration -এর পদ সৃষ্টি করা হয়। এভাবে ১৮৬৫, ১৮৬৬,১৮৬৮, ১৮৭১, ১৮৭৭, ১৮৭৯, ১৮৮৩, ১৮৮৬, ১৮৮৮, ১৮৮৯, ১৮৯১ ও ১৮৯৯ সালে বিভিনড়ব আইন প্রণয়ন করেমূল আইনের পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে যুগের চাহিদা মেটানো হয়। সর্বশেষ ১৯০৮সালে পূর্বের সকল বিক্ষিপ্ত আইন ও বিধানগুলোকে সংকলিত করে বর্তমানরেজিষ্ট্রেশন আইন Act XVI প্রণয়ন করা হয়।

রেজিস্ট্রেশন প্রশাসন

রেজিষ্ট্রেশন কার্য পরিচালনার জন্যআইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি রেজিষ্ট্রেশন পরিদফতররয়েছে। সরকারকে রেজিষ্ট্রেশন পরিদফতরের প্রধান কর্মকর্তা হিসাবে একজনঅফিসার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যিনি ইন্সপেক্টর জেনারেল অবরেজিষ্ট্রেশন সংক্ষেপে আই.জি.আর. নামে অভিহিত হবেন। সরকারকে আরও ক্ষমতাদেওয়া হয়েছে যে সরকার ইন্সপেক্টর জেনারেলের নিয়োগের পরিবর্তে অন্য কোনঅপিসার নিয়োগ করতে পারবেন যিনি ইন্সপেক্টর জেনারেলের উপর অর্পিত ক্ষমতা ওকর্তব্যের সবগুলি বা যে কোন একটি নির্ধারিত সীমার মধ্যে থেকে পরিচালনাকরবেন। বর্তমানে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবন জেলাগুলিকে এইরেজিষ্ট্রেশন পরিদফতরের আওতার বাহিরে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশে একজনইন্সপেক্টর জেনারেল আছেন যিনি সাধারণতঃ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পর্যায়েরঅফিসারগণের মধ্য হতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। ইন্সপেক্টর জেনারেলের অধীনেবর্তমানে একজন সহকারী ইন্সপেক্টর জেনারেল, দুইজন রেজিষ্ট্রি অফিসসমূহেরপরিদর্শক, ঊনপঞ্চাশ জন জেলা রেজিষ্ট্রার, চারশত পঁচাত্তর জনসাব-রেজিষ্ট্রার, অবকাঠামোভূক্ত কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়ে রেজিষ্ট্রেশনকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

৯.১.১ সম্পত্তি ক্রয়পূর্ব প্রস্তুতি

মালিকানা স্বত্বের তদন্ত ও তল্লাশীঃ

সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রেক্রেতার অবশ্য কর্তব্য হচ্ছে ক্রয়েচ্ছু সম্পত্তির স্বত্বের তদন্ত ওতল্লাশী। স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে বিক্রেতার নিকট হতে প্রাপ্ত স্বত্বসম্পর্কীয় দলিলাদি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। বিক্রেতারবর্তমান মালিকানা স্বত্ব কিরুপে কবে এবং কতখানি বর্তাইয়াছে দেখতে হবে।বিক্রেতা যদি ওয়ারিশানসূত্রে সম্পত্তির মালিক হন তাহা হলে তার পূর্ববর্তীমালিকদের ধারাবাহিক ও বৎসরানুক্রমিক একটি তালিকা প্রস্ত্তত করা আবশ্যক।তদন্ত করে দেখতে হবে বিক্রেতার পুর্ববর্তী মালিকের এই সম্পত্তিতে বৈধমালিকানা স্বত্ব ছিল কিনা। কিংবা থাকলেও সময় প্রবাহে তাদের মালিকানা স্বত্বকোনরূপ খর্ব হয়েছে কিনা। ওয়ারিশানসূত্রে প্রাপ্ত বিক্রেতার সম্পত্তির উপরঅন্য কোন ওয়ারিশানের হক আছে কিনা এবং তাকলে ছাহাম বন্টন হয়েছে কিনা।বিক্রেতা খরিদসূত্রে বিক্রয়েচ্ছু সম্পত্তির মালিক হলে, সে যার নিকট হতেসম্পত্তি খরিদ করেছে তাহার বৈধ মালিকানা-স্বত্ব ছিল কিনা এবং থাকলে সঠিকরেজিষ্ট্রি করে স্বত্বান্তর করা হয়েছে কিনা। বিক্রেতার মালিকানা-স্বত্বসম্পর্কীয় চেক, পরচা, নকশা ইত্যাদি পরীক্ষার পর সম্পত্তিসম্পর্কীতইতিপূর্বে সম্পাদিত দলিল দস্তাবেজ যাহাকে ‘বায়া দলিল’বলে পরীক্ষা করতেহবে। ইতিপূর্বে দলিল দস্তাবেজ বলতে মূল দলিল, বন্টননামা, হেবা-নামা, সালিশীআদালতে হুকুমজারী, ট্রাস্ট দলিল, ওয়াকফ্নামা, স্বত্ব প্রত্যার্পণসম্পর্কিত কোন দলিলাদি, উইলের প্রবেট ইত্যাদি বোঝায়। বিক্রেতার স্বত্বেরপ্রমাণ হিসাবে দেওয়ানী আদালতের রায়ের কপি নামজারীর সইমোহরী কপি, সরকারী বাস্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রদত্ত কর বা খাজনার রসিদপত্র ইত্যাদি যাচাই

করে দেখা উচিত। 

দখলী স্বত্বঃ

দলখ মালিকানা স্বত্বের অবিচ্ছেদ্যঅংশ। বিক্রেতাকে সম্পত্তির উপর গিয়ে সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে বিক্রেতারসম্পত্তির উপর কার্যকরী দখল আছে কিনা। সম্পত্তিটি যদি অন্য কাহারও দখরেথাকে তাহা হলে দখলকাররা কেন, কতদিন ও কি সূত্রে দখলে আছে এবং তাহাবিক্রেতার স্বত্ব ক্ষুনড়বকারক কিনা যাচাই করা উচিৎ।

তল্লাশীঃ

ক্রেতার ক্রয়েচ্ছু সম্পত্তি তল্লাশীকরা একান্তভাবে আবশ্যক। যে রেজিষ্ট্রেশন অফিসের এখতিয়ারভূক্ত এবং রাজস্বদফতরে সম্পত্তিটির কাগজপত্র সংরক্ষিত হয়, এই উভয় স্থানে তল্লাশী করা উচিত।বিক্রেতা তার স্বত্ব প্রমাণের জন্য যে সকল কাগজ ও দলিলাদী উপস্থাপন করে তাসঠিক কিনা সে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে গিয়ে পরীক্ষা করেই নিশ্চিত হওয়াযায়।

রাজস্ব দফতরঃ

রাজস্ব দফতরে তল্লাশী বলতেকালেক্টরেট, রাজস্ব সার্কেল অফিস, সাব-ডিভিশনাল ম্যানেজার অপিস ও তহশিলঅফিসে, যেখানে সম্পত্তিটির খাজনা প্রদত্ত হয় অনুসন্ধান করা বোঝায়। এই সমস্তদফতর তদন্ত করে এবং সইমোহরী কপি নিয়ে দেখতেহবে সম্পত্তিটি বিক্রেতার নামেআছে কিনা। অবশ্য মনে রাখা আবশ্যক যে রাজস্ব দফতরে রক্ষিত কাগজপত্রেরভুলভ্রান্তি থাকতে পারে এবং মালিকের নামজারী করিয়াও চেক পরছা পাইতে অনেকসময় বিলম্ব হয়ে থাকে। এই ভুলভ্রান্তি বা বিলম্ব হেতু মালিকানা-স্বত্ব নালোপ পেয়েছে এরূপ ধারণা করা ঠিক হবে না, যদি পর্যায়ক্রমে মালিকানা-স্বত্ব ওদখল সঠিক বলিয়া গণ্য হয়ে থাকে।

রেজিষ্ট্রেশন অফিসঃ

বিক্রয়ে ইচ্ছুক সম্পত্তিটি যেরেজিষ্ট্রেশন অফিসের এখতিয়ারভূক্ত সেই অফিসে তললাশী দিয়ে পরীক্ষা করা যায়, সম্পত্তিটি ইতিপূর্বে একই বিক্রেতা বা অন্য কাহারও দ্বারা বিক্রয় হয়েছেকিনা। রেজিষ্ট্রেশন অফিসে তল্লাশী করবার নিমিত্ত লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিথাকে, এসব ব্যক্তিকে ‘সার্ভার’বলা হয়। দাগ নম্বর বা দলিলদাতার নামেরআদ্যক্ষর রেজিষ্ট্রেশন অফিসের যে ইনডেক্সে থাকা সম্ভব। একজন সার্চারতল্লাশী করে বুঝতে পারবে দাগটি বিক্রয় হয়েছে কিনা, হয়ে থাকলে কতবার, কারদ্বারা এবং বর্তমানে কার নামে আছে ইত্যাদি। তল্লাশী ইচ্ছানুযায়ী যে কোনবৎসরের জন্য করা যায়, তবে স্থাবর সম্পত্তির তল্লাশী অনধিক বার বৎসরের জন্যকরলে উত্তম হয়।

৯.১.২ বিভিন্ন প্রকার দলিল

সাফকবালাঃকোনব্যক্তি তাহার সম্পত্তি অন্যের নিকট বিক্রয় করে যে দলিল সম্পাদন ওরেজিষ্টারী করে দেন তাকে সাফাকবালা বা বিক্রয় কবলা বা খরিদা কবালা বলা হয়।এই কবালা নির্ধারিত দলিল ষ্ট্যাম্পে লিখার পর দলিল দাতা অর্থাৎ বিক্রেতাসাবরেজিষ্টারী অফিসে উপস্থিত হয়ে দলিল সহি সম্পাদন করে গ্রহিতা অর্থাৎখরিদ্দারের বরাবরে রেজিষ্টারী করে দিবেন। এই দলিল রেজিষ্টারী হওয়ার সঙ্গেসঙ্গে দলিলের তফছিলে লিখিত অর্থাৎ বিক্রিত ভূমির যাবতীয় স্বত্ব দলিল দাতাহতে বিলুপ্ত হয়ে দলিল গ্রহিতাতে অর্থাৎ খরিদ্দারের উপর অর্পিত হলো।দলিলদাতা ময় ওয়ারিশানক্রমে উক্ত জমি হতে নিঃস্বত্ববান হলেন।

দানপত্র দলিলঃযেকোন সম্প্রদায়ের যে কোন ব্যক্তি তার সম্পত্তি দান করতে পারেন। এই দানপত্রদলিলে শর্তবিহীন অবস্থায় সকল প্রকার ক্ষমতা প্রদানের দান করতে হবে। স্বত্বসম্পন্ধে দাতার কোন প্রকার দাবী থাকলে দানপত্র শুদ্ধ হবে না।

 হেবা দলিলঃমুসলিমসম্প্রদায়ের জন্য এই হেবা অর্থাৎ দানপত্র দলিল, এই দলিল কোনকিছুর বিনিময়েনয়, কেবলমাত্র সন্তুষ্ট হয়ে এইরূপ দান করা হয়। কিন্তু এই হেবা সর্তবিহীনঅবস্থায় দান বিক্রয়, কট রেহান ও রূপান্তর ইত্যাদি সকল ক্ষমতা প্রদানে দানবা হেবা করতে হবে। স্বত্ব সম্বন্ধে দাতার কোনরূপ দাবী থাকলে সেই দান বাহেবা শুদ্ধ হবে না এবং তা যে কোন সময় বাতিলযোগ্য। এরূপ দানপত্রে দাতার কোনস্বার্থ সংরক্ষিত থাকবে না।

হেবা বিল এওয়াজঃএইহেবা বিল এওয়াজ মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি দানপত্র দলিল এই দানও সন্তুষ্ট হয়েকরা হয় বটে। কিন্তু ইহা কোন কিছুর বিনিময়ে হয়ে থাকে, যেমন- পবিত্র কোরআন, জায়নামাজ, তছবিহ, মোহরানার টাকা, এমন কি যে কোন জিনিষের বিনিময়েও হতে পারে, যেমন আংটি ইত্যাদি। এই হেবা বিল এওয়াজ দলিল সম্পূর্ণ শর্তবিহীন অবস্থায়গ্রহিতা যাবতীয় হস্তান্তর ও রূপান্তরের সকল প্রকার ক্ষমতার অধিকারী হবে এবংদাতার যাবতীয় স্বত্ব গ্রহিতাতে অর্পিত হবে। দাতার স্বার্থে কোন

প্রকার স্বত্ব দাতার জন্য সংরক্ষিতথাকলে দলিল শুদ্ধ হবে না। এই হেবা বিল এওয়াজ অবশ্যই রেজিষ্টারী হতে হবে। এইহেবা বিল এওয়াজ যদি টাকা বিনিময়ে হয় এবং ক্রমিক ওয়ারিশী সূত্রে আগে পরেতিন ধাপের পরের ব্যক্তিকে বা তৃতীয় ব্যক্তিকে হেবা

বিল এওয়াজ মুলে দান করে থাকে তা হলে শরীক কর্তৃক জানার তারিখ হতে ৪ মাসের মধ্যে প্রিয়েমশান করতে পারে।

এওয়াজ দলিলঃযে কোনসম্প্রদায়ের বা একই সম্প্রদায়ের বা একই বংশের বা কোন ব্যক্তি যে কোনব্যক্তির সহিত তাহাদের লপ্ত ও সুবিধা মত একের ভূমি অপরকে দিতে পারেন অর্থাৎপরস্পর এওয়াজ পরিবর্তন সরতে পারেন। এই দলিল অবশ্যই রেজিষ্টারী হতে হবে।এওয়াজ পরিবর্তন দলিলের একটা ব্যাখ্যা দেওয়া হলো: ক এর জমি খ এর বাড়ীর নিকটএবং খ এর জমি ক এর বাড়ীর নিকট। উভয়ের জমিই উভয়ের বেলপ্ত। কাজেই ক তার জমি খকে এবং তার জমি ক কে দিয়ে উভয়ে একটি দলিল সম্পাদন করে রেজিষ্টারী করে নিল।একেই এওয়াজ পরিবর্তন দলিল বলে। এই দলিলের কেহ প্রিয়েমশান করতে পারে না।

বন্টননামা দলিলঃ শরিকগণমধ্যে সম্পত্তি ক্রমে নিজ নিজ ছাহাম প্রাপ্ত হয়ে উক্ত ছাহামের বাবদ যেদলিল করতে হয় তাকে বন্টননামা দলিল বলে। একই সম্পত্তিতে মালিক একই বংশেরলোককে সাধারণত শরিক বলা হয়। শরিক দুই প্রকারের, যথা- উত্তরাধিকার সূত্রেশরিক ও কোন শরিক হতে খরিদ সূত্রে শরিক। ইংরেজীতে বলা হয় কো-শেয়ারার বাইইনহেরিটেন্স এন্ড কো-শেয়ারার বাই পারচেজ। বন্টননামা দলিল করবার সময় সকলশরিকগণ দলিলে পক্ষভুক্ত থেকে ও দস্তখত করে বন্টননামা দলিল করতে হবে। কোন একজন শরিক বাদ থাকলে বন্টননামা শুদ্ধ হবেনা। বন্টননামা দলিল রেজিষ্টারীকরতে হবে কিন্তু ঘরোয়াভাবে বন্টন করে সকল পক্ষগণ যদি বন্টননামা দলিলেদস্তখত করে থাকেন তা হলেও বন্টননামা কার্যকরী হতে পারে। যদি শরিকগণ আপোষমতে বন্টন করতে রাজী না হন তাহলে যে কোন শরিক বন্টনের জন্য আদালতে নালিশকরতে পারেন।

অছিয়তনামা দলিলঃকোনব্যক্তি তার সম্পত্তি কাউকে বা তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে অছিয়তকারীব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের মদ্যে সকলকে না দিয়ে যদি একজনকে বা কোন তৃতীয়ব্যক্তিকে প্রদান করে থাকেন এবং অছিয়তকারীর মৃত্যুর পর যদি তাহারউত্তরাধিকারীগণ দাবী উত্থাপন করেন তাহলে যাকে সম্পত্তি অছিয়ত করা হলো সেইব্যক্তি উক্ত সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ পাবে এবং অবশিষ্ট দুই তৃতীয়াংশের মালিকউত্তরাধিকারীদের মধ্যে সকলেই হবেন।

উইল দলিলঃহিন্দুসম্প্রদায়ের লোক তাদের নিজস্ব সম্পত্তি তাদের আত্মীয়দের মধ্যে যাকে ইচ্ছাউইল করে দিতে পারেন। যিনি উইল করলেন তিনি জীবমানে একের অধিক উইল করতেপারেন। কিন্তু সর্বশেষ যে উইল করলেন কেবল ঐটাই কার্যকরী হবে।

না-দাবী দলিলঃকোনব্যক্তি সুনির্দিষ্ট কোন সম্পত্তিতে তার স্বত্ত্বাধিকার নাই মর্মে অথবাস্বত্ত্বাধিকার ত্যাগ করছেন মর্মে দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করে দিতেপারেন। এরূপ দলিলকে নাদাবী দলিল বলা হয়।

বায়নানামা দলিলঃ প্রজাদেরভূমি রাজস্ব বাকী পড়লে উপরস্থ মালিকগণ আদালতে খাজনার নালিশ করে ডিক্রিকরতেন। প্রজা উক্ত ডিক্রিকৃত টাকা জমিদারকে প্রদান না করলে উক্ত খাজনারডিক্রিজারী দিয়ে উক্ত ভূমি নিলাম করাতেন। উক্ত নিলাম উপরস্থ মালিকসহ সর্বসাধারণের খরিদ করবার অধিকার ছিল। যে ব্যক্তি অধিক টাকায় নিলামের ডাক উঠাতেনতিনি উক্ত নিলাম খরিদ্দার বলে গণ্য হতেন। খাজনার ডিক্রি ছাড়া আরও কয়েকপ্রকারের নিলাম হয়ে তাকে যেমন সরকার কর্তৃক বাকী ভূমি রাজস্বের নিমিত্তমানী মোকদ্দমার দাবীর ওদেওয়ানী মোকদ্দমার খরচের টাকার নিমিত্ত ও রেহানীঋণের দরুন। যিনি নিলাম খরিদ করতেন তাকে একটি নিদর্শন পত্র বা সার্টিফিকেটদেওয়া হতো, তাকে বয়নামা বলা হয়।

দখলনামা দলিলঃবন্টনেরমোকদ্দমা, স্বত্ব সাব্যস্ত পূর্বক খাস দখল, উৎপাত ও প্রিয়েমশান ইতা্যাদিমোকদ্দমায় ডিক্রির পর আদালত হতে বন্টনের মোকদ্দমায় কমিশনার ও অন্যান্যমোকদ্দমায় আদালতের পদাতিক বা নায়েব, নাজির যোগে ডিক্রির মর্মমতে দখলীপরওয়ানের ভিত্তিতে দখল গ্রহণ করিতে হয় এবং দখল দেওয়ার পর কমিশনার ও আদালতেরপদাতিক বা নায়েব নাজির রিপোর্টসহ উক্ত দখলী পরওয়ানা আদালতে দাখিল করেন।তাকে দখলনামা দলিল বলা হয়।

রায় দলিলঃকোনসম্পত্তি টাকা পয়সা কিংবা অন্যান্য যে কোন কারণে আদালতে নালিশ হলে বাদীরআরজি, বিবাদীর জবাব দৃষ্টে সাক্ষী প্রমাণ গ্রহণ করে একতরফা বা দোতরফাশুনানীর পর হাকিম বিচার করে উক্ত বিচার লিখিতভাবে জানিয়ে দেন তাকে

রায় বলা হয়।

ডিক্রি দলিলঃরায়েরমর্মমতে রায়ের আদেশাংশ সংযোজন করে বাদী ও বিবাদী পক্ষের নাম ঠিকানাসহসম্পত্তি সংক্রান্ত হলে সম্পত্তির তফসিল পরিচয়সহ একখানা দলিল আদালত কর্তৃকজারী করা হয় তাকে ডিক্রি বলে।

আরজি দলিলঃবাদীবিরোধীয় ভূমির জন্য বিবাদীগণের বিরুদ্ধে আদালতে যে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেনতাকে আরজি বলা হয়। এই আরজিতে বাদী তার স্বত্ব সম্বন্ধে যাবতীয় বিবরণলিপিবদ্ধ করেন এবং প্রতিকার প্রার্থনা করেন। কোন কোন দরখাস্ত আরজি গণ্যেবিচার হয় যেমন প্রিয়েমশান অভিভাবক নিযুক্তির দরখাস্ত উত্তরাধিকারনিদর্শনপত্র, প্রবেট ইত্যাদি।

আদালত যোগে সাফ-কবলা দলিলঃ

কোন ব্যক্তি তার সম্পত্তি বিক্রয়করবোর জন্য কারোও নিকট হতে বায়না বাবদ টাকা গ্রহণ করে বায়নাপত্র সম্পাদনকরে দিয়ে যদি দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্টারী করে না দেয় তাহলে যে ব্যক্তি বায়নাদিয়েছেন তিনি আদালতযোগে নালিশ করে আদালত কর্তৃক দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্টারীকরিয়ে নিতে পারেন। আদালতের বিচারে দলিল সম্পাদনের মোকদ্দমা ডিক্রি হলেউক্ত ডিক্রি ঐ আদালতে জারী দিয়ে দলিলের মুসাবিদা ও ষ্ট্যাম্প আদালতে দাখিলকরলে তম্মর্মে দলিললিপি করে আদালত দাতার পক্ষে দস্তখত করে দলিল রেজিষ্টারীকরে দিবেন।

বায়নাপত্র দলিলঃকোনসম্পত্তি বিক্রয়ের জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে যে চুক্তিপত্র সম্পাদনকরা হয় তাকে বায়নাপত্র বলে। বর্তমানে বায়না দলিল রেজিষ্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।বায়না পত্রের মাদ্যমেও স্বত্ব হস্তান্তরিত হতে পারে। যদি কোন ব্যক্তিবায়নাপত্র মারফত জমির দখল বুঝিয়ে দিয়ে থাকেন এবং মূল্যের টাকা গ্রহণ করেথাকেন এবং বিশেষ কারণে দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্টারী করে দেন নাই বা দিতেপারেন নাই। যেহেতু দখল বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং গ্রহীতা দখল বুঝিয়ে নিয়ে ভোগ দখলকরছেন সেহেতু সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫৩ ধারা মতে আংশিক বিক্রয় কার্যকরীহয়েছে। অতএব জমিতে খরিদ্দারের স্বত্ব হয়েছে বলে গণ্য হবে।

বেনামী দলিলঃকোনব্যক্তি বিশেষ কোন কারণে তার নিজের নামে সম্পত্তি খরিদ করতে অসুবিধারসম্মুখীন হওয়া বিবেচিত হলে ঐ ব্যক্তি নিজ অর্থে ও স্বার্থে সম্পত্তি খরিদকরে তার দলিল নিজের নামে না করে তার যে কোন আত্মীয়ের বা বিশ্বাসী বন্ধুবান্ধবের নামে বেনামী দলিল করতে পারেন বা নিজের সম্পত্তি ঋণের দায়ে বা অন্যকোন কারণে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ঐ ব্যক্তি তার নিজের সম্পত্তি কোনআত্মীয় স্বজনেবা বন্ধু বান্ধবের নামে দলিল করে দিতে পারেন। সেই দলিল অবশ্যইসাফকবালা ক্ষেত্র বিশেষে দানপত্র দলিল হবে।

৯.১.৩ রেজিষ্ট্রি দলিলের আবশ্যকীয় শর্তাবলী

একটি রেজিষ্ট্রি দলিলে নিমড়ববর্ণিত শর্তাবলী পালন করতে হয় অন্যথায় দলিলটি স্বয়ং সম্পূর্ণ হবেনা:

১।শিরোনামঃ দলিলটি কোন ধরণের দলিল তা প্রথম বর্ণনায় উল্লেখ করতে হবে। যেমনঃ সাফকবলা, বায়নাপত্র আম- মোক্তারনামা ইত্যাদি।

২।পক্ষগণের পরিচয়ঃ দানগ্রহীতা, প্রথম পক্ষ, দ্বিতীয় পক্ষ ইত্যাদি। নাম বা প্রতিষ্ঠানের নাম, পিতার নাম, পেশা, ধর্ম, জাতীয়তা বাসস্থান ইত্যাদি। অর্থাৎ কোন কোন পক্ষেরমধ্যে দলিলটি সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি হচ্ছে তার বর্ণনা।

৩।বিক্রীত স্বত্বের বর্ণনাঃ স্বত্বের ইতিহাস, পূর্বের দলিল নম্বর ইত্যাদি। অর্থাৎ বিক্রেতা সম্পত্তিটি কোনসূত্রে অর্জন করেছেন তার বিবরণ। তা নামে খতিয়ান ও জমা খারিজ আছে কিনা।

৪।পণঃপণ ব্যতিরেকে কোন চুক্তি বৈধ হয় না। মনে রাখা আবশ্যক পনের লেনদেন স্বাভাবিক রীতিঅনুযায়ী হতে হবে। অবাস্তর, অবিশ্বাস্য বা সন্দেহজনক পনের বিনিময়ে কোনসম্পত্তি হস্তান্তরিত হলে পরিনামে দলিলটি বাতিল হতে পারে।

৫।দখলঃবিক্রিত সম্পত্তির দখল বুঝে দেওয়া হলো কিনা তা দলিলে উল্লেখ করতে হবে। দখল না বুঝে দিলে দলিলের প্রধান শর্ত অপূর্ণ রয়ে গেল।

৬।রক্ষিত শর্তাবলীঃ দাতা গ্রহীতার অর্জিত সম্পত্তির অধিকারসমূহের কিয়দংশ সংরক্ষিত রেখে দলিল সম্পাদন করতে পারেন।

৭।দন্ড বিষয়ক অংশঃ জমিজমার ক্রয় বিক্রয়ের ব্যাপারে প্রতারণার নজির ভুরি ভুরি রয়েছে। তাইপ্রতারণামূলক কার্যের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসাবে দন্ড বিষয়ক ব্যবস্থাদিরদলিলে লিপিবদ্ধ রাখতে হয়।

৮।তারিখঃ দলিলে অবশ্যই তারিখ থাকতে হবে। দলিলে তারিখ না থাকলে উহা বাতিল বরে গণ্য হয়। বাংলা তারিখের সহিত ইংরেজি তারিখও দেওয়া উচিত।

৯।তফসিল বর্ণনাঃ বিক্রয়াধীনসম্পত্তির তফসিল বর্ণনা দলিলের নির্দিষ্ট অংশে উল্লেখ রাখা অত্যন্তগুরুত্বপূর্ণ। ইহাতে ভুল থাকলে সমস্ত দলিলের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হইতে বাধ্য।তফসিলে জমির পরিমাণ, মৌজা, থানা, রেজিষ্ট্রী অফিস, জেলা, খতিয়ান নম্বর, দাগনম্বর, জমির শ্রেণী, তৌজি, জমির চৌহদ্দি অর্থাৎ উত্তরে, দক্ষিণে, পূর্বে ও পশ্চিমে অবস্থানকারীম ব্যক্তি ও সম্পত্তির নাম, খাজনা ও করের পরিমাণ সম্পত্তির কোন হোল্ডিং নম্বর ও ওয়ার্ড নম্বর থাকলে তাহাও দলিলে উল্লেখ করতেহয়।

১০।দস্তখতঃ দলিলদাতা দলিলের উপরিভাগ দক্ষিণ পার্শ্বে ও শেষ পৃষ্ঠায় নীচে স্বাক্ষর করবেন।কোন কোন দলিলে একাধিক পক্ষের দস্তখত দিতে হয়। দলিলে পক্ষগণের স্বাক্ষর বাটিপ পর্ব শেষ হবার পর দলিল লেখকের নাম, সাকিন ও দুই তিন জন সাক্ষীর নাম ওসাকিন লিখতে হবে।

১১।কৈফিয়তঃ দলিললিখবার সময় কোন স্থানে ভূল, কাটা, মোছা বা অস্পষ্ট হলে উহার পৃষ্ঠা ও লাইনক্রম উল্লেখ করে দলিলের শেষাংশে কৈফিয়ত হিসাবে তাহা লিখে দলিল লিখক তাহারনীচে সহি করবেন।

১২।বিবিধঃ দলিলপরিস্কার ও পরিচ্ছন্নভাবে লিখিত হওয়া আবশ্যক। দলিল লিখতে ভাল কালি ব্যবহারকরা দরকার। তবে বর্তমানে কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহৃত হওয়ায় লিখিত দলিল খুবকমই রেজিষ্ট্রেশনের জন্য উপস্থাপিত হচ্ছে।

১৩। বিক্রেতার নামে খতিয়ান থাকতে হবে।বিক্রিত সম্পত্তির নক্শা ম্যাপ ইত্যাদি থাকলে তাহা অনুচ্ছেদ স্বরূপ মূলদলিলের সহিত যুক্ত করে দিতে হবে।

৯.১.৫ ভূমি বিষয়ক বিদ্যমান আইনে সর্বশেষ সংশোধন

রেজিষ্ট্রেশন (সংশোধন) আইন ২০০৪

(১) কোন সম্পত্তির মালিক মৃত্যুবরণকরলে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি তার ওয়ারিশদের মধ্যেরেজিষ্ট্রেশন (সংশোধন) আইনের ১৭(১) ধারার বিধান অনুসারে বাটোয়ারা বাআপোস-বন্টননামা রেজিস্ট্রি করতে হবে।

(২) স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় দলিল রেজিস্ট্রেশন (সংশোধণ) আইনের ১৭এ (১) ধারার বিধান অনুসারে অবশ্রই লিখিত এবং রেজিস্ট্রিকৃত হতে হবে।

(৩) বিক্রয় চুক্তি/বায়না চুক্তি সম্পাদনের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে চুক্তিপত্রটি রেজিস্ট্রির জন্য দাখিল করতে হবে {ধারা ১৭এ (২)।

(৪) প্রতিটি হস্তান্তর দলিল অবশ্যইরেজিস্ট্রি করতে হবে, রেজিস্ট্রি দলিলে বিক্রীত সম্পত্তির পূর্ণ বিবরণ এবংবিক্রয়ের প্রকৃতি বর্ণনা করতে হবে। {ধারা ২২এ(১)।

(৫) প্রতিটি দলিলে ক্রেতা-বিক্রেতাউভয় পক্ষের ছবি পেষ্ট করে সংযুক্ত করতে হবে, উক্ত ছবি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরস্বাক্ষর/বাম বৃদ্ধাঙ্গুলীর টিপসইযুক্ত হবে {ধারা ২২এ(২)।

(৬) সরকার এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে (দলিলের/চুক্তিপত্রের) নির্ধারিত ফরমেট জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে সরকারিগেজেটে প্রকাশ করবেন {ধারা ২২এ (৩)।

(৭) দলিল সম্পাদনের ৩ মাসের মধ্যে তা রেজিষ্ট্রির জন্য দলিল করতে হবে (যা পূর্বে ছিল ৪ মাস (ধারা ২৩)।

বিক্রয়ের বায়না চুক্তি, দান দলিল ও বন্ধক দলিল রেজিস্ট্রি ফিঃ

রেজিস্ট্রেশন (সংশোধন) আইন ২০০৪ এনতুন সংযোজিত ৭৮এ ধারা অনুসারে স্থাবর সম্পত্তি বিক্রির বায়না চুক্তি, দানদলিল ও বন্ধক দলিল রেজিস্ট্রি ফি হবে নিমড়বরূপঃ

(এ) স্থাবর সম্পত্তি বিক্রির বায়না চুক্তি রেজিস্ট্রেশনের জন্য ফি হবেঃ

(i) সম্পত্তি বিক্রয়ের বায়না/চুক্তিপত্রের জন্য ষ্ট্যাম্প শুল্ক মাত্র ১৫০ টাকা।

(ii) বিক্রয়তব্য সম্পত্তির বিক্রয় মূল্য পাঁচ লাখ টাকার বেশী না হলে ফি ৫০০ টাকা।

(iii) সম্পত্তির বিক্রয় মূল্য পাঁচ লাখ টাকার বেশি কিন্তু পঞ্চাশ লাখ টাকার বেশী না হলে ফি ১০০০ টাকা।

(iv) সম্পত্তির মূল্য পঞ্চাশ লাখ টাকার বেশী হলে ফি ২০০০ টাকা।

(বি) দান দলিল রেজিস্ট্রি ফিঃ

মুসলিম পারসোনাল ল’(শরীয়ত) অনুসারেস্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা ও সন্তান, দাদা-দাদী ও নাতি-নাতনী, সহোদরভাই-ভাই, সহোদর বোন-বোন এবং সহোদর ভাই ও সহোদর বোনের মধ্যে যে কোনো স্থাবরসম্পত্তির দান দলিল বা দান চুক্তি রেজিস্ট্রি ফি মাত্র ১০০ টাকা।

(সি) বন্ধক(Mortgage)চুক্তি রেজিস্ট্রি ফিঃ

সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২ এর ৫৯ ধারার বিধান অনুসারে-

(i) বন্ধবী অর্থের পরিমাণ পাঁচ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে না হলে ফি বন্ধকী অর্থের ১% তবে ২০০ টাকার নিমেড়ব নয় এবং ৫০০ টাকার ঊর্ধ্বে নয়।

(ii) বন্ধকী অর্থের পরিমাণ ৫ লাখটাকার উপরে কিন্তু বিশ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে না হলে ফি বন্ধকী অর্থের ০.২৫%(শূন্য দশমিক এক শূন্য শতাংশ) টাকা হারে তবে ৩০০০ টাকার কম নয় এবং ৫,০০০টাকার ঊর্ধ্বে নয়।

(iii) বন্ধকী অর্থের পরিমাণ বিশ লাখটাকার ঊর্ধ্বে হরে সে চুক্তি রেজিস্ট্রি ফি লাগবে বন্ধকী অর্থের ০.১০%(শূন্য দশমিক এক শূন্য শতাংশ) টাকা হারে তবে ৩০০০ টাকার কম নয় এবং ৫,০০০টাকার ঊর্ধ্বে নয়।

সম্পত্তি হস্তান্তর (সংশোধন) আইন ২০০৪-এ নতুন সংযোজিত ধারাসমূহ হলোঃ

বন্ধকী সম্পত্তি বিক্রয় করা যাবে নাঃএআইনের ৫৩ডি ধারার বিধান অনুসারে রেজিস্ট্রিকৃত বন্ধকভূক্ত সম্পত্তি বন্ধকগ্রহীতার লিখিত সম্মতি ব্যতীত পুনবন্ধক দেয়া যাবে না এবং বিক্রি করা যাবেনা। এরূপ করা হরে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।

বিক্রয় চুক্তি অবশ্যই রেজিস্ট্রিকৃত হতে হবেঃ

সম্পত্তি হস্তান্তর (সংশোধন) আইন ২০০৪এর ৫৪এ ধারা অনুসারে অস্থাবর সম্পত্তির বিক্রয় চুক্তি হবে লিখিত ওরেজিস্ট্রিকৃত। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার(সংশোধন) আইন ২০০৪ এর ২১এ ধারার বিধানঅনুসারে আদালতের মাধ্যমে চুক্তি বলবতের দুই শর্ত হলোঃ

(১) লিখিত ও রেজিস্ট্রিকৃত বায়না ব্যতীত চুক্তি প্রবলের মামলা আদালতের মাধ্যমে বলবৎ করা যাবে না।

(২) বায়নার অবশিষ্ট টাকা আদালতে জমা না করলে মামলা দায়ের করা যাবে না।

রেজিস্ট্রিকারে যে সকল বিষয় সাব-রেজিস্ট্রারের নিকট পেশ করতে হবেঃ

দলিল রেজিস্ট্রারিং অফিসার এ আইনে নতুন সংযোজিত ৫২এ ধারার বিধান অনুসারে বিক্রয়ের জন্য উপস্থাপিত কোন দলিল রেজিস্ট্রি করবেন না যদি দলিলের সাথে নিমেড়বাক্ত তথ্যাদি সংযুক্ত না থাকেঃ

(এ) রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্বআইন ১৯৫০ এর বিধান অনুসারে প্রস্ত্ততকৃত সম্পত্তির সর্বশেষ খতিয়ান, বিক্রেতার নাম যদি তিনি উত্তরাধিকারসূত্র ব্যতীত অন্যভাব সম্পত্তির মালিকহয়ে থাকেন।

(বি) প্রজাস্বত্ব আইনের বিধান অনুসারেপ্রস্ত্ততকৃত সর্বশেষ খতিয়ান, বিক্রেতার নাম বা বিক্রেতার পূর্বসূরীর নামযদি তিনি উত্তরাধিকারসূত্রে ঐ সম্পত্তি পেয়ে থাকেন।

(সি) সম্পত্তির প্রকৃতি।

(ডি) সম্পত্তির মূল্য।

(ই) চতুর্সীমা সহ সম্পত্তির নকশা।

(এফ) বিগত ২৫ বৎসরের মালিকানা সংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

(জি) দাতা কর্তৃক এ মর্মে একটিহলফনামা (Affidavit) সম্পাদন করতে হবে যে তিনি উক্ত সম্পত্তি ইতোপূর্বেকারো নিকট বিক্রি করেননি এবং তিনিই দলিলে উল্লেখিত

সম্পত্তির মালিক (He has Lawful Title)।

তামাদি (সংশোধন) আইন ২০০৪ঃ

তামাদি (সংশোধন) আইন ২০০৪ এর বিধানঅনুসারে এ আইনের প্রথম সিডিউল ১ মোতাবেক বায়না চুক্তি বলবৎ হওয়ার পর তা ১বৎসর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে অর্থাৎ পূর্বে যেখানে বায়না চুক্তি আদালতেরমাধ্যমে বলবৎ করার জন্য ৩ বৎসর পর্যন্ত সময় পাওয়া

যেত এখন সেখানে ১ বৎসর সময় পাওয়া যাবে। ১ বৎসর পর এরূপ চুক্তি আদালতের মাধ্যমে আর বলবৎ করা যাবে না।

দান এবং দান করার বিধানঃ

দানকে মুসলিম আইনে হেবা বলে। কারোনিকট হতে প্রতিদান ব্যতীত অর্থাৎ বিনিময় ছাড়া কোন কিছু গ্রহণ করাই হলো দান।সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২(টিপি এ্যাক্ট) এর ১২২ ধারা অনুসারে সম্পত্তিদাতা কোন ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করলে এবংগ্রহীতা বা গ্রহীতার পক্ষে কোন ব্যক্তি ঐ সম্পত্তি গ্রহণ করলে তাকে দানবলে।

দান বৈধ হওয়ার ৩ শর্তঃ

(১) দাতা কর্তৃক দানের (ইজাব) ঘোষণা প্রদান।

(২) গ্রহীতা তার পক্ষ হতে দান গ্রহণ করা বা স্বীকার করা।

(৩) দাতা কর্তৃক গ্রহীতাকে দানকৃত সম্পত্তির দখল প্রদান।

দানের উপাদান সমূহঃ

(১) দাতাকে সুস্থ মস্তিষ্কের সাবালক ব্যক্তি হতে হবে।

(২) দাতার জীবনকালের মধ্যে দান কার্য সম্পনড়ব হতে হবে।

(৩) দান গ্রহণের পূর্বে দাতার মৃত্যু হলে দান বাতিল বলে গণ্য হবে।

(৪) দানের সময় সম্পত্তিতে দাতার মারিকানা ও দখল থাকতে হবে।

(৫) দান স্বেচ্ছায় এবং পণবিহীন হতে হবে।

(৬) দান গ্রহীতা মানসিক ভারসাম্যহীন বা নাবালক হরে তার পক্ষে অভিভাবক দান গ্রহণ করতে পারবেন। দান যে কেউ গ্রহণ করতে পারেন।

(৭) মুসলিম আইন অনুযায়ী দাতা তারসমুদয় সম্পত্তি যে কাউকে দান করতে পারেন। দায়ভাগ মতে একজন হিন্দু যাদেরভরণপোষণে আইনত বাধ্য তাদের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখার পর বাকী সম্পত্তিদান করতে পারেন।

(৮) দখল হস্তান্তরের পূর্বে দান প্রত্যাহার করা যায়। দখল হস্তান্তরের পরে দান প্রত্যাহারের জন্য আদালতের ডিক্রি লাগবে।

(৯) দানকারী ঋণের দায় এড়ানোর বা অন্য কোন অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণামূলকভাবে দান করলে, পাওনাদারের আবেদনে ঐ দান বাতিলযোগ্য হতে পারে।

(১০) মৃত্যুশয্যাকালীন দান উইলেরন্যায় কার্যকরী হবে অর্থাৎ ঐ দান অনাত্মীয়ের অনুকূলে করা যাবে কিন্তু মোটসম্পত্তির ১/৩ ভাগের বেশী দান করা যাবে না। তবে উত্তরাধিকারীগণের সম্মতিথাকলে অআত্মীয়কে ১/৩ ভাগের অধিক সম্পত্তি দান করা যাবে। এ অবস্থায় কোনউত্তরাধিকারীকে দান করা যাবে না।

(১১) রেজিস্ট্রেশন (সংশোধন) আইন ২০০৪ এর ৭৮এ ধারা এবং সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১২৩ ধারা অনুযায়ী দান লিখিত ও রেজিস্ট্রিকৃত হতে হবে।

(১২) অজাত ব্যক্তি বরাবরে দান করলে দানের তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে সে জন্ম গ্রহণ কররে সে দান বৈধ হবে।

দান দলিলরেজিস্ট্রি করা বাধ্যতামূলকঃ

রেজিস্ট্রেশন (সংশোধন) আইন ২০০৪ এনতুন সংযোজিত ৭৮এ ধারা অনুসারে স্থাবর সম্পত্তির দানপত্র দলিল অবশ্যইরেজিস্ট্রি করতে হবে। দান দলিল রেজিস্ট্রেশন ফি হবে

নিমড়বরূপঃ

স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা-সন্তান, দাদা-দাদী ও নাতি-নাতনী, সহোদর ভাই-ভাই, সহোদর বো-বোন এবং সহোদর ভাই ওসহোদর বোনের মধ্যে যে কোনো স্থাবর সম্পত্তির দানপত্র দলিল রেজিস্ট্রি ফিদিতে হবে মাত্র ১০০ টাকা। তবে উলিলখিত সম্পর্কের বাইরের

ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সম্পাদিত দানপত্র দলিল রেজিস্ট্রির ফি হবে কবলা দলিল রেজিস্ট্রির জন্য প্রযোজ্য ফি’র অনুরূপ।

জীবন স্বত্ত্বে দান দলিল রেজিস্ট্রেশন ফিঃ

স্প্যাম্প এ্যাক্ট ১৯০৮ এর ৫৮ নংআর্টিক্যাল অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান (মুসলিম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান) এর জন্য জীবন স্বত্ত্বে দানের বিধানহলো-যে প্রতিষ্ঠানের নামে সম্পত্তি দান করা হবে সে প্রতিষ্ঠান ঐ সম্পত্তিশুধু ভোগ-দখল করতে পারবে, সম্পত্তি কোনরূপ হস্তান্তর করতে পারবে না। এরূপজমির ভূমি উনড়বয়ন কর পরিশোধ করতে হবে দানকারীর নামে। কোন কারণে ঐপ্রতিষ্ঠানটি কার্যকর না থাকলে সম্পত্তি দানকারীর মালিকানায় চলে যাবে এবংদান দলিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। জীবন স্বত্ত্বের দান দলিলরেজিস্ট্রির ক্ষেত্রে ২% স্ট্যাম্প ফি, ২.৫% রেজিস্ট্রেশন ফি এবং ই ফিসলাগবে।

হেবা-বিল এওয়াজঃ

মুসলিম আইন অনুসারে কোন কিছু বিনিময়নিয়ে দান করাকে বলে এওয়াজ বা হেবাবিল-এওয়াজ। সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২এর ১১৮ ধারা অনুসারে দু’জন ব্যক্তি যে ক্ষেত্রে পরস্পর নিজেদের মালিকানাধীনকোন জিনিসের মালিকানা হস্তান্তর করে সেক্ষেত্রে

কোন একটি জিনিস টাকা না হলে সেআদান-প্রদানকে বলে এওয়াজ বা বিনিময়। এতে বিক্রয় চুক্তির উপাদান বিদ্যমানথাকায় এটি মূলত এক ধরনের বিক্রয়। এওয়াজ দলিলে বর্ণিত সম্পত্তির একজন দাতাতার নিজের সম্পত্তি অপরজনকে দেওয়ার পর তার প্রাপ্য সম্পত্তি তিনি না পেলেতিনি তার প্রদত্ত সম্পত্তি ফেরত পাওয়ার অধিকারী হবেন। হেবা বিল এওয়াজঅগ্রক্রয়যোগ্য নয়।

হেবা-বিল-এওয়াজ এর উপাদানসমূহঃ

(১) গ্রহীতাকে হেবা গ্রহণের বিনিময়ে দাতাকে অবশ্যই কিছু দিতে হবে।

(২) দানের মাধ্যমে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে নিঃস্বত্বে পরিণত করতে হবে।

(৩) হেবা-বির এওয়াজের ক্ষেত্রে দখল দান আবশ্যক নয়।

(৪) হেবা-বিল-এওয়াজ প্রত্যাহারযোগ্য নয়।

উইল বা অছিয়তের বিধানঃউইলহলো ভবিষ্যৎ দান। কোন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি বাসম্পত্তির মুনাফা কিভাবে বিলি-বন্টন করা হবে তা তার মৃত্যুর পূর্বেই লিখিতবা মৌখিকভাবে নির্ধারণ করে যাওয়ার আইন সম্মত ঘোষণাই হলো উইল বা অছিয়ত।

উইলের শর্তঃ

(ক) মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান এ তিনসম্প্রদায়ের উত্তরাধিকার আইনেরই বিধান হলো যে, সুস্থা মস্কিষ্কসম্পনড়ব যেকোন সাবালক ব্যক্তি উইল করতে পারবেন।

(খ) উইলকারীর ইচ্ছা সুস্পষ্ট ও সঠিকভাবে নির্ণয়যোগ্য হতে হবে।

(গ) উইল, উইল দাতার মৃত্যুর পর কার্যকর হবে।

(ঘ) উইল যে কেউ গ্রহণ করতে পারেন।

উইলের উদ্দেশ্যঃউইলকরা যায় (ক) ব্যক্তির উদ্দেশ্যে এবং(খ) ধর্মীয় উদ্দেশ্যে। ব্যক্তিরউদ্দেশ্যে উইল আবার দু’প্রকার (১) ওয়ারিশের বরাবরে উইল এবং (২) ওয়ারিশ নয়এমন ব্যক্তির বরাবরে উইল।

ওয়ারিশের বরাবরে সম্পাদিত উইলের বিধানঃ

(ক) অন্য ওয়ারিশদের সম্মতি না থাকলে উইল বাতিল বলে গণ্য হবে।

(খ) অন্য ওয়ারিশদের সম্মতি থাকলে উইল সম্পূর্ণ কার্যকরী হবে।

(গ) ওয়ারিশদের সম্মতি কার্যকর হবে উইল দাতার মৃত্যুর পর।

ওয়ারিশ নয় এমন ব্যক্তি বরাবরে সম্পাদিত উইলের বিধানঃ

(ক) ওয়ারিশদের সম্মতি থাকলে উইল সম্পূর্ণ কার্যকরী হবে।

(খ) ওয়ারিশদের সম্মতি না থাকলে উইল দাতার নিট সম্পত্তির ১/৩ এর উপর উইল কার্যকরী হবে।

নিট সম্পত্তিঃউইলদাতারমোট সম্পত্তি হতে নিমড়বরূপ ব্যয় পরিশোধের পর অবশিষ্ট সম্পত্তি নিটসম্পত্তি বলে গণ্য হবে, উইল সর্বদা নিট সম্পত্তির উপর প্রযোজ্য হবেঃ

(ক) উইল দাতার মৃত্যুর অব্যবহিত ৩ মাস পূর্বের ভৃত্য বা চাকরের পাওয়ানাদি।

(খ) মৃত্যু শয্যাকালীন খরচাদি।

(গ) মৃত্যুর পর দাফন-কাফনের খরচ।

(ঘ) স্ত্রীর দেন-মোহরের পাওয়ানা পরিশোধ ব্যয়।

(ঙ) উইল প্রবেট এবং সাকসেশন সার্টিফিকেট ব্যয়।

(চ) ঋণ পরিশোধ (আগের ঋণ আগে পরিশোধ ভিত্তিতে)।

(ছ) ঋণ পরিশোধের আগে স্ত্রীর দেন-মোহর পরিশোধ করতে হবে।

ধর্মীয় উদ্দেশ্যে উইলঃধর্মীয়উদ্দেশ্যে উইল করা হলে তাতে ওয়ারিশদের সম্মতি থাকলে সে উইল সম্পূর্ণকার্যকর হবে, আর ওয়ারিশদের সম্মতি না থাকলে অছিতকারীর নিট সম্পত্তির ১/৩অংশের উপর উইল কার্যকরী হবে।

ধর্মীয় উইল ৩ প্রকার, যথা-

(১) ফরজ কাজের উদ্দেশ্যে, যেমন- হজ্জ্ব পালন, যাকাত প্রদান ইত্যাদি।

(২) ওয়াজিব কাজের উদ্দেশ্যে, যেমন- ফিতরা প্রদান, কোরবানী করা ইত্যাদি।

(৩) নফল কাজের উদ্দেশ্যে, যেমন- সরাইখানা, রাস্তা-পুল, এতিমখানা নির্মাণ ইত্যাদি।

উইলের উপাদানঃ

(১) একই সম্পত্তি নিয়ে একাধিক উইল করাহলে সর্বশেষ উইলটি সর্বপ্রথম কার্যকরী হবে এবং সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকাসাপেক্ষে পরবর্তী উইলগুলো কার্যকরী হবে।

(২) অজাত ব্যক্তি উইলের তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে জন্মগ্রহণ করলে তার বরাবরে করা উইল বৈধ হবে।

(৩) উইল মৌখিক ও লিখিত দু’ভাবেই করাযায়। এমনকি অসামর্থ্যের কারণে ইঙ্গিতেও করা যায়। তবে মৌখিক উইলের ক্ষেত্রে ২জন পুরুষ বা ১ জন পুরুষ ও ২ জন মহিলা সাক্ষীর উপস্থিতিতে হতে হবে।

(৪) নাবালক উত্তরাধিকারী সাবলকত্ব লাভের পর উইলে সম্মতি দিতে পারবেন।

(৫) উইল দাতা মৃত্যুর পূর্বে যে কোনসময় উইল বাতিল করতে পারেন। সম্পত্তি একবার উইল করার পর পুনরায় তা অন্য কারোঅনুকূলে উইল করলে পূর্বের উইলটি স্বয়ংক্রীয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। উইলবাতিলের জন্য মামলার প্রয়োজন হয় না।

(৬) ১৮৭০ সনের হিন্দু আইন অনুসারেএকজন হিন্দু তার সকল সম্পত্তি উইল করতে পারেন, তবে যাদের ভরণপোষনের জন্যতিনি আইনত বাধ্য তাদের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা রেখে বাকী সম্পত্তি উইল করতেহবে।

(৭) উইলকারীর কোন উত্তরাধিকারী না থাকলে তিনি তার সমস্ত সম্পত্তি যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে উইল করে দিতে পারেন।

(৮) উইল গ্রহণকারীকে দাতার মৃত্যুর সময় জীবিত থাকতে হবে।

(৯) উইলকারী মৃত্যুর মুহূর্ত হতে উইল কার্যকর হবে।

উইল বিলুপ্তিঃনিমেড়বাক্ত কারণে উইল বাতিল বলে গণ্য হবেঃ

(১) উইলের পর উইলদাতা বিকৃত মস্তিষ্ক হলে, মৃত্যুর পূর্বে তিনি সুস্থ হলেও।

(২) উইল গ্রহীতা দাতার আগে মারা গেলে।

(৩) উইল দাতা বা গ্রহীতা ধর্ম ত্যাগ করলে

(৪) উইল গ্রহীতা দাতাকে হত্যা করলে।

 (৫) উইলকৃত সম্পত্তির উপর অন্য কারো অধিকার সাব্যস্ত হলে।

(৬) উইলকারী উইলকৃত সম্পত্তি বিক্রি বা দান করলে বা তাতে বাড়ি তৈরি করলে।

উইল প্রবেটঃ

উইল বা অছিয়তের মাধ্যমে হিন্দুসম্প্রদায়ের কোন ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামেতার সম্পত্তি উইল করে গেলে উইলটি বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট এখতিয়ারবানদেওয়ানি আদালতের অনুমোদন লাগবে, এরূপ অনুমোদন নেয়াকেই বরে উইল প্রবেট।প্রবেট মুসলিম উইলে আবশ্যকীয় নয়। প্রবেটের জন্য আদালতে আবেদন করা হলেঅপরাপর ওযারিশদের মতামত জানার জন্য আদালত হতে নোটিশ দেয়া হয়, এ সময়ওয়ারিশগণ উইলের বিরুদ্ধে অসম্মতি জানাতে পারেন। এছাড়া আদালত কালেক্টরেরনিকট সম্পত্তির কোর্ট ফি সঠিক আছে কিনা, সম্পত্তিটি সরকারের কিনা, সম্পত্তিটি উইলদাতার কিনা এতে আর কারো স্বার্থ আছে কিনা ইত্যাদি জানতে চেয়েথাকেন।

দান ও উইলের পার্থক্যঃ

(১) দান সাথে সাথে কার্যকর হয়, উইল কার্যকর হয় অছিয়তকারীর মৃত্যুর পর।

(২) দান সম্পনড়ব হওয়ার পর আদালতের রায় ব্যতীত তা আর প্রত্যাহার করা যায় না। কিন্তু উইল ইচ্ছেমত বাতিল করা যায়।

(৩) দান করার সময় দানের সম্পত্তিতেদাতার মালিকানা ও দখল থাকতে হবে অন্যদিকে মৃত্যুর পূর্বে পাওয়া যাবে এরূপযে কোন সম্পত্তি উইল করা যাবে।

সম্পত্তি হস্তান্তরসম্পনড়ব হবেঃ

১। সম্পত্তি যখন কোন জীবিত ব্যক্তির বরাবরে হস্তান্তর হবে;

২। হস্তান্তর যখন টাকা বা কোন কিছুর বিনিময়ে হবে;

৩। দান চুক্তির হস্তান্তর বিনিময় ছাড়াও বৈধ হবে;

৪। সম্পত্তি হস্তান্তরের চুক্তি যখন রেজিস্ট্রি করা হবে;

৫। চুক্তি রেজিস্ট্রির পরপরই হস্তান্তর কার্যকর হবে।

হস্তান্তরের যোগ্যতা সপ্নন্ন ব্যক্তিঃ

১। চুক্তি সম্পাদনের যোগ্যতা সম্পনড়ব ব্যক্তি হস্তান্তরযোগ্য সম্পত্তির স্বাত্ত্বাধিকারী হরে তিনি সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন;

২। সম্পত্তিটি হস্তান্তরকারীর নিজের না হলে উক্ত সম্পত্তি হস্তান্তর করার অধিকার তার থাকতে হবে;

৩। হস্তান্তরের যোগ্যতা বলতে হস্তান্তরকারী সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পনড়ব ব্যক্তি হবেন;

হস্তান্তর বলবৎঃসম্পত্তি হস্তান্তরের সাথে সাথে ঐ সম্পত্তির দাতার সকল হস্তান্তরযোগ্য স্বার্থ গ্রহীতার উপর বর্তাবে।

বিক্রয় চুক্তি ও বিক্রয়ঃবিক্রয়ের চুক্তি ও বিক্রয় এক বিষয় নয়, বিক্রয়ের চুক্তি হচ্ছে

ক্রেতা ও বিক্রেতার মথ্যে একটি সমঝোতা। বিক্রয় ব্যতীত শুধু বিক্রয়ের চুক্তি দ্বারা কোন স্বত্ত্বের সৃষ্টি হয় না।

◊নাবালক ব্যক্তি সম্পত্তি বিক্রি করতে পারে না কিন্তু সম্পত্তি ক্রয়ের ক্ষেত্রে নাবালকের কোন বাধা নেই।

◊কোন হস্তান্তরের চুক্তির ফলেচুক্তির পক্ষসমূহ বা দাতা ও হস্তান্তর গ্রহীতা ব্যতীত অন্য কারো স্বার্থক্ষুনড়ব হলে উক্ত হস্তান্তর বাতিল বলে গণ্য হবে।

◊কোন বিক্রেতা একই সম্পত্তি একাধিকব্যক্তির নিকট বৈধ দলিল রেজিস্ট্রিমূলে বিক্রি করলেও দু’টি দলিলের মধ্যে প্রথম সম্পাদিত দলিলটি আইনত বলবৎ হবে।

কি সেবা কিভাবে পাবেন?

জরিপ কার্য়ক্রমের বিভিন্ন স্তরের নাম, সেবার বিবরণ,  ভূমি মালিকের করণীয়, ও সেবা প্রদানে নিয়োজিত কর্মকর্তা/কর্মচারি ১।  বিজ্ঞপ্তি: ভূমি জরিপ আরম্ভের পূর্বে ১৯৫০ সালের বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের ১৪৪(১) ধারা এবং বঙ্গীয় জরিপ আইনের ০৩ ধারায় ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়ে ………অফিসার কর্তৃক ……. আইনে ৫,৭ ধারার নোটিশ প্রদান। জরিপ শুরুর পূর্বে মাইকিং ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপনসহ ব্যাপক জনসংযোগ করা হয়। এসময় ভূমি মালিকগণকে নিজ নিজ জমির আইল/ সীমানা চিহ্নিত করে রাখতে হবে। জমির মালিকানায় সমস্ত দলিল/ কাগজপত্র হালনাগাদ অবস্থায় কাছে রাখতে হবে।  ২।  ট্রাভার্স  : কোন মৌজার নকশা সম্পূর্ণ নতুন করে প্রস্তুত করতে মৌজায় যে  কাঠামো স্থাপন করা হয় সেটাই ট্রাভার্স। অতঃপর পি ৭০ সিটের মাধ্যমে মৌজার নতুন  নকশা প্রস্ত্তত করা হয়। কোন মৌজার পুরোনো নকশা অর্থাৎ ব্লু-প্রিন্ট সিটের উপর জরিপ করার ক্ষেত্রে ট্রাভার্স করা হয় না। ট্রাভার্স পরিচালনা করেন একজন সার্ভেয়ারের নেতৃত্বে একদল জরিপ কর্মচারী।  ৩। কিস্তোয়ার : এই স্তরে আমিনদল প্রতি খন্ড জমির পরিমাপ করে তা  মৌজা  নকশায় প্রতিফলিত করে নতুন নকসা  অংকনের মাধ্যমে কিস্তোয়ার সম্পন্ন করে  অথবা ব্লু-প্রিন্টে পুরোনো নকশা সংশোধন করেন। এ স্তরের কাজ একজন উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার(কানুনগো) এ তত্বাবধানে আমিনদল করে থাকেন।

 ৪। খানাপুরী : কিস্তোয়ার স্তরে অঙ্কিত নকশার প্রত্যেকটি দাগের জমিতে উপস্থিত হয়ে আমিনদল জমির দাগ নম্বর প্রদান করেন এবং মালিকের রেকর্ড, দলিলপত্র ও দখল যাচাই  করে মালিকের নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য খতিয়ানে লিপিবদ্ধ (খানাপুরী) করেন। এ স্তরে ভূমি মালিকদের কাজ হচ্ছে আমিনদলকে জমির মালিকানা ও দখল সংক্রান্ত প্রমাণাদি উপস্থাপন করা।এ স্তরের কাজ একজন উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার(কানুনগো) এর তত্বাবধানে আমিনদল করে থাকেন।   ৫।  বুঝারত : অর্থ জমি বুঝিয়ে দেয়া। এ স্তরে আমিনদল কর্তৃক প্রস্তুতকৃত খাতিয়ান বা পর্চা জমির মালিককে সরবরাহ (বুঝারত) করা হয়, যা মাঠ পর্চা নামে পরিচিত। পর্চা বিতরণের তারিখ নোটিশ/ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার/ এলাকায় মাইকিং-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। ভূমি মালিকগণ প্রাপ্ত পর্চার সঠিকতা যাচাই করে কোনরূপ সংশোধন বা পরিবর্তন আবশ্যক হলে নির্দিষ্ট (Dispute) ফরম পূরণ করে তা আমিনের নিকট জমা দেবেন। একজন উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার( কানুনগো) হল্কা অফিসার হিসাবে সংশ্লিষ্ট পক্ষগণের শুনানির মাধ্যমে দ্রুত ঐসকল বিবাদ-নিস্পত্তি করবেন। ৬।খানাপুরী ও বুঝারত :  যখন কোন মৌজা ট্রাভার্স এবং কিস্তোয়ারের মাধ্যমে  ব্লু-প্রিন্ট সীটে জরিপ করা হয় সে সময়  উপরে বর্ণিত খানাপুরী ও বুঝারত স্তরের কাজ একসাথে করা হয়। সরদার আমিন/হল্কা অফিসার বা কানুনগো/ক্যাডাস্ট্রাল সার্কেল অফিসার।   ৭।তসদিক বা এটাস্টেশন  : ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে তসদিক স্তরের কাজ সম্পাদিত হয় তসদিক স্তরের কাজ সম্পাদন করেন একজন কানুনগো বা রাজস্ব অফিসার। জমির মালিকানা সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র ও প্রমাণাদি যাচাই করে প্রতিটি বুঝারত খতিয়ান সত্যায়ন করা হয়। এ স্তরেও ভূমি মালিকগণ পর্চা ও নকশার কোন সংশোধন প্রয়োজন মনে করলে বিবাদ (Dispute) দাখিল করতে পারেন এবং উপযুক্ত প্রমান উপস্থাপন করে তা সংশোধনের সুযোগ নিতে পারেন। তসদিককৃত পর্চা জমির মালিকানায় প্রাথমিক আইনগত ভিত্তি  (primary Legal Document) হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই এ স্তরের কাজটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।   ৮। খসড়া প্রকাশনা   (ডিপি) ও আপত্তি দায়েরঃ তসদিকের পর জমির প্রণীত রেকর্ড  সর্বসাধারণের প্রদর্শনের জন্য ৩০ দিন উম্মুক্ত রাখা হয়। এর সময়কাল উল্লেখপূর্বক ক্যাম্প অফিস হতে বিজ্ঞপ্তিও প্রচার করা হয়। ভূমি মালিকগণের নামের অদ্যাক্ষর অনুযায়ী খতিয়ান বা পর্চা বর্ণনাক্রমিক ক্রমবিন্যাস করে খতিয়ানে নতুন নম্বর অর্থাৎ ডিপি নম্বরটি সংগ্রহের জন্য ও ভূমি মালিকগণকে নিজ নিজ পর্চাসহ খসড়া প্রকাশনা (ডিপি) ক্যাম্পে উপস্থিত হতে হয়। ডিপিতে প্রকাশিত খতিয়ান সম্পর্কে কারো কোন আপত্তি বা দাবি থাকলে সরকার ১০ (দশ) টাকার কোর্ট ফি দিয়ে নির্দিষ্ট ফরম পূরণের মাধ্যমে প্রজাস্বত্ব বিধিমালার ৩০ বিধি অনুযায়ী আপত্তি দায়ের করা যাবে। তসদিক অফিসার/ খসড়া প্রকাশনা অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন (উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার)

  ৯। আপত্তি শুনানীঃ ডিপি চলাকালে গৃহীত আপত্তি মামলাসমূহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে নোটিশ মারফত জ্ঞাত করে নির্দিষ্ট তারিখ, সময় ও স্থানে শুনানী গ্রহন করে নিস্পত্তি করা হয়। পক্ষগণ নিজে অথবা মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে নিজ নিজ দাবি আপত্তি অফিসারের নিকট উপস্থাপন করতে পারেন। আপত্তি অফিসার পক্ষগণকে শুনানী দিয়ে, রায় কেস নথিতে লিপিবদ্ধ করে তার সিদ্ধান্ত জানাবেন এবং সিদ্ধান্তের আলোকে খতিয়ান বা রেকর্ড প্রয়োজনীয় সংশোধন আনবেন। আপত্তি অফিসার/ সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার, উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসার  ১০। আপীল শুনানীঃ   আপত্তির রায়ে সংক্ষুদ্ধ পক্ষ ৩১ বিধিতে আপীল দায়ের করতে পারেন। নির্ধারিত কোর্ট ফি এবং কার্টিজ পেপারসহ সেটেলমেন্ট অফিসার বরাবর আবেদন দাখিলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আপত্তি মামলার রায়ের ঐ নকলসহ আপীল দায়ের করতে হবে। সংশ্লিষ্ট পক্ষকে নোটিশ মারফত জ্ঞাত করে নির্দিষ্ট তারিখ, সময় ও স্থানে শুনানী গ্রহন করে আপীল নিস্পত্তি করা হয়। সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার/ চার্জ অফিসার, জোলাল সেটেলমেন্ট অফিসার

বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় দুই ধরনের মামলা রয়েছে। একটি হলো দেওয়ানি অপরটি ফৌজদারি মামলা। নিজের অধিকার আদায়ে সম্পত্তির ওপর স্বত্ব ও দখলের জন্য যে মামলার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয় তাকে সাধারণত দেওয়ানি মামলা বলা হয়। এ ছাড়া মানহানির কারণে বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করলেও তা দেওয়ানি মামলার অন্তর্ভুক্ত হয়।

দেওয়ানি মামলার ধরন  

দেওয়ানি মামলার অনেক ধরন রয়েছে। আর্থিক ক্ষতিপূরণের মামলা, সব ধরনের স্বত্ব, মানবিক সম্পর্ক (পিতা-পুত্র, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক) নিয়ে বিরোধ, মসজিদ, মন্দির, গীর্জায় প্রার্থনা করার অধিকার, ভোটাধিকার ইত্যাদি।

আর্থিক ক্ষতিপূরণের মামলা

কোনো ব্যক্তি অন্য কারো দ্বারা শারীরিকভাবে বা অন্য কোনো ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তিনি আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন। এ ছাড়া মানহানিকর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেও মামলা দায়ের করা যায়। 

সম্পত্তির অধিকারের মামলা  

নিজের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হলে তিনি সম্পত্তির অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে আদালতের এখতিয়ার অনুযায়ী মামলা দায়ের করতে হবে।

সব ধরনের স্বত্ব

কোনো ব্যক্তি ব্যবসা-বাণিজ্য বা ট্রেড লাইসেন্স এবং বইয়ের স্বত্ব কাউকে দেওয়ার পর যদি ওই ব্যক্তি এসব স্বত্বাধিকার থেকে বঞ্চিত হোন তাহলে তিনি এ অধিকার ফিরে পেতে আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন।   

ভরণপোষণের অধিকার

মা-বাবা বৃদ্ধ হলে ছেলে যদি তাঁদের জন্য কোনো ভরণপোষণ না দেয় তাহলে আদালতে ভরণপোষণ চেয়ে মামলা দায়ের করা যায়। এ ছাড়া স্ত্রীর ভরণপোষণ না দিলে স্ত্রী ভরণপোষণ চেয়ে মামলা দায়ের করতে পারেন।   

প্রার্থনার অধিকার

কোনো ব্যক্তি মসজিদে নামাজ পড়তে না পারলে এবং মন্দিরে পূজা করতে না পারলে এবং গীর্জায় প্রার্থনা করার অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে সে অধিকার চেয়ে তিনি মামলা দায়ের করতে পারেন।

ভোটাধিকার

দেশের নাগরিক হিসেবে ভোট দেওয়ার অধিকার সবারই রয়েছে। কোনো ব্যক্তিকে সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করলে তিনি সে অধিকার ফিরে পেতে আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন। যা দেওয়ানি আদালতের মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে।  

যেসব আদালতে দেওয়ানি মামলায় করা যায়

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে ও দেওয়ানি মামলা পরিচালিত হয়। তবে নিম্ন আদালতে মামলার রায়ের পর কেবল উচ্চ আদালতে আপিল অথবা রিভিশনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা পরিচালিত হয়।

জেলা জজ আদালতের এখতিয়ার

জেলা জজ আদালতে দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় মামলা পরিচালিত হয়। এ আদালতে দেওয়ানি মামলা পরিচালিত হলে তাকে দেওয়ানি আদালত এবং ফৌজদারি মামলা পরিচালিত হলে তাকে ফৌজদারি আদালত বলে। সাধারণত এক লাখ টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা মূল্যমানের মামলার আপিল জেলা জজ আদালতে দায়ের করতে হয়। জেলা জজ আদালত তাঁর নিম্ন আদালতের মোকদ্দমা স্থানান্তর সম্পর্কিত দরখাস্ত, রিভিশন শুনানি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে পারেন। পারিবারিক আদালতের রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আপিল গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করে থাকেন।

অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত

অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের বিচারিক ক্ষমতা জেলা জজের সমান। তবে কোনো মোকদ্দমা বা আপিল এ আদালতে সরাসরি দায়ের করা যায় না। জেলা জজ আদালতে দাখিল করলে জেলা জজ আবেদনটি নিষ্পত্তির জন্য এ আদালতে প্রেরণ করেন। অতিরিক্ত জেলা জজের কোনো প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই।

যুগ্ম জেলা জজ আদালত

প্রত্যেক জেলায় এক বা একাধিক যুগ্ম জেলা জজ থাকেন। তিনি দেওয়ানি মোকদ্দমার সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচারক। এ আদালত চার লাখ এক টাকা থেকে অসীম মূল্যমানের বিষয় বস্তুর মূল মোকদ্দমা গ্রহণ ও বিচার নিষ্পত্তি করতে পারেন।

সিনিয়র সহকারী জজ আদালত  

দেশের প্রতিটি জেলায় এক বা একাধিক সিনিয়র সহকারী জজ আদালত রয়েছে। সম্পত্তি, অফিস, ব্যক্তিগত অপকার, ক্ষতিপূরণ ও ধর্মীয় অধিকারসংক্রান্ত যাবতীয় মোকদ্দমা সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজ আদালতে দায়ের করা হয়। এ আদালত দুই লাখ এক টাকা থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের মূল মোকদ্দমা গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে পারেন।

সহকারী জজ আদালত  

এ আদালতে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা মূল্যমানের বিষয় বস্তুর ওপর মামলা দায়ের করা যায়। এ আদালতের নিজস্ব কোনো আপিল এখতিয়ার নেই। সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজ আদালতে স্বত্ব ঘোষণা, স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা, চুক্তি কার্যকর, দলিল, চুক্তিপত্র, লিখিত অঙ্গীকারপত্র ইত্যাদি রদ ও রহিত, যেকোনো কর্তৃপক্ষের অবৈধ আদেশ রদ ও রহিত, দখল পাওয়া, সম্পত্তি বা অফিস সংক্রান্ত কোনো অধিকার সম্পর্কে ঘোষণা পাওয়া, টাকা আদায়, সম্পত্তি অগ্রক্রয়, নির্বাচন সংক্রান্ত মোকদ্দমা দায়ের করা যায়।

জমি বা সম্পত্তি বণ্টন কি?

জমি বন্টন:

ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির সীমানা চিহ্নিত করে যার যার প্রাপ্ত স্বত্ব বুঝে নেবার প্রক্রিয়াটি হচ্ছে “বণ্টন”। স্থানীয় বা পারিবারিকভাবে বণ্টনের আইনগত ভিত্তি দুর্বল। উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টন করার জন্য আইনানুগ পদ্ধতি অবলম্বন করাটাই শ্রেয়। এ জন্য সকল শরিককে এখতিয়ার সম্পন্ন দেওয়ানী আদালতে একটি মামলা করতে হয় যা বণ্টন মোকদ্দমা বা বাটোয়ারা মামলা বা পার্টিশন স্যুট নামে পরিচিত।

সম্পত্তির শরিক দুই প্রকার। (ক) উত্তরাধিকার সূত্রে শরিক বা কো-শেয়ারার বাই ইনহেরিটেন্স (খ) খরিদ সূত্রে শরিক বা কো-শেয়ারার বাই পারচেজ।

বণ্টনের মামলা করার সময় সকল শরিকগণ মামলায় পক্ষভুক্ত হতে হবে। কোন একজন শরিক বাদ থাকলে বণ্টননামা শুদ্ধ হবেনা। যদি শরিকগণ আপোষ মতে বণ্টন করতে রাজী না হন তাহলে যে কোন শরিক বণ্টনের জন্য আদালতে উক্ত সম্পত্তির বণ্টন চেয়ে মামলা করতে পারেন।

বণ্টন মামলা করার জন্য কি কি প্রয়োজন?

বণ্টন মোকদ্দমা দায়েরের জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। পাশাপাশি সম্পত্তির মালিকানা সংশ্লিষ্ট সকল কাগজ পত্র যেমন ভূমি জরিপ খতিয়ান, নামজারী খতিয়ান, মালিকানা দলিল, উত্তরাধিকার সনদ ইত্যাদি সংগ্রহে রাখতে হবে।

মামলা করার জন্য কোর্ট ফি দিতে হয় ১০০ টাকা কিন্তু ছাহাম চাইলে প্রতি ছাহামের জন্য অতিরিক্ত ১০০ ফি জমা দিতে হয়।

বাটোয়ারা মামলায় সাধারণত প্রত্যেক দাগের জমি সকল সহ-শরীক এর মধ্যে বণ্টিত হয়ে থাকে ৷ বাটোয়ারা বা বণ্টন মামলায় ২ বার ২টি ডিক্রী হয় ৷

প্রাথমিক ডিক্রী: এ ডিক্রীতে হিস্যানুযায়ী বণ্টন আদেশ দেয়া হয় ৷

চূড়ান্ত ডিক্রী: এ ডিক্রীতে প্রয়োজনে আমিন কমিশন পাঠিয়ে সরেজমিনে সম্পত্তির দখল দেয়া হয় এবং সীমানা পীলার দ্বারা বিভাজন (জমির ভাগ) চিহ্নিত করার মাধ্যমে চূড়ান্ত ডিক্রী প্রচার করা হয় ৷ আদালত প্রয়োজনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ করে সম্পত্তির সীমানা চিহ্নিত করে ডিক্রী প্রাপককে সম্পত্তির দখল দেয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন ৷

বণ্টনের শর্ত সমূহ:

বণ্টনের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত জড়িত; যেমন-
-পরিমাপ করে শরীকদের ভূমির বা জমির সীমানা চিহ্নিতকরণ করতে হবে। এবং
-বণ্টন তালিকায় প্রত্যেক সহ-মালিকের বরাদ্দকৃত সম্পত্তির উল্লেখ থাকতে হবে;
-তালিকায় মালিকানার বিভাজন সকল সহ-মালিক কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে;
-বণ্টনের বিবরণ সুস্পষ্ট হতে হবে;
-প্রত্যেকটি তালিকা সহ-মালিকবৃন্দ কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে;
-যথাযথভাবে স্ট্যাম্প শুল্ক দিয়ে দলিলটি রেজিস্ট্রি করতে হবে;
-সহ-শরীকগণ আপোষ বণ্টন করে পরবর্তীতে তাদের কেউ তা না মানলে দেওয়ানী আদালতের মাধ্যমে তা কার্যকর করা যায় ৷

বণ্টন এবং বণ্টক দলিল কি?

১৮৯৯ সালের স্ট্যাম্প এক্টের ২ (১৫) ধারায় বলা হয়েছে বণ্টন দলিল ও বণ্টক দলিল অর্থ একই ৷ যখন কোন সম্পত্তির সহ-শরিকগণ তাদের সম্পত্তি ব্যক্তিগত মালিকানায় পৃথকভাবে ভাগ করে নেয় বা নিতে সম্মত হয়ে কোন দলিল করে তাকেই বণ্টন বা বণ্টক দলিল বলে।

বণ্টননামা দলিলের রেজিস্ট্রি ফি:

রেজিস্ট্রেশন (সংশোধন) আইন ২০০৪ আইনের ১৭(১) ধারার বিধান অনুসারে বাটোয়ারা বা আপোষ-বণ্টননামা রেজিস্ট্রি করতে হবে, অর্থাৎ রেজিস্ট্রি বাধ্যতামূলক।
সকল সহ-শরিকের মধ্যে জমি হিস্যানুযায়ী (স্ট্যাম্প এর উপর) বণ্টন করে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দাখিল করে বণ্টননামা দলিল রেজিস্ট্রি করা যায় ৷ এ দলিল রেজিস্ট্রির জন্য স্ট্যাম্প খরচ লাগবে জমির যে মূল্য লেখা হবে তার ২% হারে ৷ এছাড়া অন্যান্য ফিস কবলা দলিল রেজিস্ট্রিতে যেমন লাগে অনুরূপ লাগবে ৷ (তবে এই হার সরকার কর্তৃক সময় সময় পরিবর্তনযোগ্য)

বণ্টন হওয়ার পর করণীয় কি?

আদালতের মাধ্যমে বণ্টন হওয়ার পর এবং বণ্টন দলিল রেজিস্ট্রি পর অবশ্যই নিজ নামে নামজারী, জমাভাগ খতিয়ান করে নিতে হবে। পাশাপাশি খাজনা প্রদান করতে হবে। মনে রাখবেন, নামজারী হচ্ছে সরকারিভাবে সম্পত্তিকে নিজ নামে রেকর্ড করা।

বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) আজ থেকে ১৪শত বছর আগেই বলে গিয়েছেন, “উত্তরাধিকার আইন নিজে জানো ও অপরকে শেখাও, সকল জ্ঞানের অর্ধেক হল এই জ্ঞান”। মুসলিম হাওয়া সত্ত্বেও আমাদের অনেকেরই উত্তরাধিকার আইন সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই।

কিন্তু এটা প্রত্যেক মুসলিমের জানা প্রয়োজন। মুসলিম আইনে কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমার ওপর ভিত্তি করে মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তি তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন করা হয়ে থাকে।

এভাবে বণ্টন করাকে ফারায়েজ বলা হয়।

এই সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের সূরা নিসাতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে।তাই এই বিষয়ে জানা উচিত। এতে কোন মুসলমান পুরুষ বা নারী উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী তাঁর ভাগে কতটুকু সম্পত্তি পাবেন সেই সম্পর্কে জানতে পারবে।

এখানে শুধু আমরা স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা ও পুত্র-কন্যার উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী প্রাপ্য অংশ নিয়ে আলোচনা করব।

তবে কোন মুসলমান মারা গেলে তার সম্পত্তি বণ্টনের আগে কিছু আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয়। চলুন আগে জেনে নেই কী সেই সব আনুষ্ঠানিকতা।

১. মৃত ব্যক্তির পর্যাপ্ত সম্পত্তি থাকলে সেখান থেকে তার দাফন কাফনের যাবতীয় খরচ মেটাতে হবে।
২. তিনি যদি জীবিত থাকা অবস্থায় কোন ধার-দেনা করে থাকেন তবে তাও রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে পরিশোধ করে দিতে হবে।
৩. তাঁর স্ত্রী বা স্ত্রীদের দেনমোহর পরিশোধিত না হয়ে থাকলে বা আংশিক অপরিশোধিত থাকলে তা পরিশোধ করে দিতে হবে। মোট কথা স্ত্রীর সম্পূর্ণ দেনমোহর স্বামী মৃত অথবা জীবিত যাই থাকুক না কেন তা স্বামীর সম্পত্তি থেকে আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ পরিশোধ করে দিতে হবে।
৪. মৃত ব্যক্তি কোন দান কিংবা উইল করে গেলে তা প্রাপককে দিয়ে দিতে হবে।

উপরের সব কাজ সম্পন্ন করার পরে মৃত ব্যক্তির অবশিষ্ট সম্পত্তি ফারায়েজ আইন অনুযায়ী তাঁর উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে।

এবার জেনে নিই কি অনুপাতে বা কীভাবে এই সম্পত্তি বণ্টন হবে।

১. স্বামীর অংশ : স্বামী ২ ভাবে মৃত স্ত্রীর সম্পত্তির ভাগ পেয়ে থাকে। স্বামী কখনো তাঁর মৃত স্ত্রীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে না। মৃত স্ত্রীর কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকলে স্বামী স্ত্রীর সম্পত্তির ১/৪ অংশ পাবে। মৃত স্ত্রীর কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তান কেউই না থাকলে স্বামী স্ত্রীর সম্পত্তির ১/২ অংশ পাবে।

২. স্ত্রীর অংশ : স্ত্রীও ২ ভাবে তাঁর মৃত স্বামীর সম্পত্তি পেয়ে থাকে। বিধবা স্ত্রী কোন ভাবে তাঁর স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে না। মৃত স্বামীর কোন সন্তান বা তাঁদের পুত্রের সন্তান থাকলে স্ত্রী, স্বামীর সম্পত্তির ১/৮ অংশ পাবে। যদি মৃত স্বামীর কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তান কেউই না থাকলে তবে স্ত্রী, স্বামীর সম্পত্তির ১/৪ অংশ পাবে। স্ত্রী একাধিক হলেও সবাই মিলে ১/৪ অংশ সমান ভাগেই পাবে।

৩. বাবার অংশ : বাবা তাঁর মৃত সন্তানের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী ৩ ভাবে হয়ে থাকে। যদি মৃত সন্তানের পুত্র, পুত্রের পুত্র বা পুত্রের পুত্রের পুত্র এভাবে যতই নিচের হোক না কেন যদি থাকে, তবে মৃত সন্তানের পিতা পাবেন সন্তানের সম্পত্তির ১/৬ অংশ।

যদি মৃত সন্তানের শুধু মাত্র কন্যা সন্তান বা তাঁর পুত্রের কন্যা সন্তান থাকলে তবে পিতা সন্তানের সম্পত্তির ১/৬ অংশ পাবেন।

এই ক্ষেত্রে কন্যাদের ও অন্যান্যদের দেয়ার পর অবশিষ্ট যে সম্পত্তি থাকবে তাও পিতা পাবেন। আর যদি মৃত সন্তানের কোন পুত্র-কন্যা বা পুত্রের সন্তান কিছুই না থাকে তাবে বাকী অংশীদারদের তাঁদের অংশ অনুযায়ী দেয়ার পর অবশিষ্ট যা থাকবে তার সবটুকুই বাবা পাবেন।

তবে মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান ও বাবা কেউ না থাকলে তাঁর সম্পত্তি তাঁর জীবিত ভাই বা ভাইরা পাবে। আবার ভাই না থাকলে তাঁর ভাইয়ের সন্তানরা পাবে।

৪. মায়ের অংশ : মা তাঁর মৃত সন্তানের সম্পত্তি পেয়ে ৩ ভাবে পেয়ে থাকে। – মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি যত নিম্নেরই হোক থাকলে অথবা যদি মৃত ব্যক্তির আপন, পূর্ণ বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাইবোন থাকলে তবে মাতা ছয় ভাগের এক ভাগ (১/৬) পাবেন।

মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি যত নিম্নের হোক না থাকলে এবং মৃত ব্যক্তির যদি একজনের বেশি ভাই বা বোন না থাকে তবে মাতা তিন ভাগের এক ভাগ (১/৩) পাবেন। কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি যত নিম্নের হোক না থাকলে অথবা কমপক্ষে দুইজন ভাইবোন না থাকলে এবং যদি মৃত ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রীর অংশ বাদ দেয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকবে, তার তিন ভাগের এক ভাগ (১/৩) মাতা পাবেন। মৃত ব্যক্তির এক ভাই থাকলেও মাতা ১/৩ অংশ পাবেন।

৫. পুত্র সন্তানের অংশ : মৃত ব্যক্তির ছেলে বা ছেলেরা সকল ক্ষেত্রেই সম্পত্তি পায়। যেক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির ছেলে ও মেয়ে রয়েছে সেই ক্ষেত্রে ছেলে বা ছেলেরা, মেয়ে বা মেয়েদের চেয়ে দ্বিগুন সম্পত্তি পাবে। মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে মাতাপিতা ও স্বামী-স্ত্রী নির্দিষ্ট সম্পত্তি পাওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি ছেলে মেয়ের মধ্যে বন্টন করা হবে। তবে মেয়ে না থাকলে অংশীদারদের অংশ দেয়ার পর অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে বাকী সম্পূর্ণ সম্পত্তি ছেলে বা ছেলেরাই পাবে।

৬. কন্যা সন্তানের অংশ : উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে কন্যারা তিনভাবে মাতাপিতার সম্পত্তি পেতে পারে। একমাত্র কন্যা হলে তিনি রেখে যাওয়া সম্পত্তির দুই ভাগের এক ভাগ বা (১/২) অংশ পাবে। একাধিক মেয়ে হলে সবাই মিলে সমানভাগে তিন ভাগের দুই ভাগ বা (২/৩) অংশ পাবে। যদি পুত্র থাকে তবে পুত্র ও কন্যার সম্পত্তির অনুপাত হবে ২:১ অর্থাৎ এক মেয়ে এক ছেলের অর্ধেক অংশ পাবে। যাহোক কন্যা কখনো মাতাপিতার সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হয় না।

পিতা মারা গেলে তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় যে সম্পত্তি পেতেন তা তাঁর মৃত্যুর পরও তাঁর উত্তরাধিকারীরা পাবে।

১৯৬১ সালের আগে এই নিয়ম ছিল না। পরে একটি আইন পাস করে এই নিয়ম চালু করা হয়। কারণ এতিমরা যাতে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত না হয় সেই সম্পর্কেও ইসলামে নির্দেশ দেয়া আছে। আবার মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে কোন সন্তানকে ত্যাজ্য বলে ধরা হয় না। ফলে সম্পত্তি থেকে তাকেও বঞ্চিত করা যায় না। তবে কোন ব্যক্তি রেজিস্ট্রিকৃতভাবে সম্পত্তি দান বা হস্তান্তর করে গেলে এবং সন্তানকে বঞ্চিত করার লক্ষ্যে সন্তানের অংশ উল্লেখ না করে গেলে ঐ সন্তান আর সম্পত্তি পাবে না। সৎ ছেলে-মেয়ে, সৎ বাবা বা সৎ মায়ের সম্পত্তি পায় না।

একই ভাবে সৎ বাবা বা সৎ মা, সৎ ছেলে-মেয়ের সম্পত্তি পায় না। কেউ কাউকে হত্যা করলে হত্যাকারী তাঁর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয় না। জীবিত থাকা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে কেউ কারো সম্পত্তি পাবে না। জারজ সন্তান তার মা ও মায়ের আত্নীয়দের থেকে সম্পত্তি সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী পাবে (মুসলিম হানাফী আইন অনুসারে)।

মৃত ব্যক্তির কোন উত্তরাধিকার না থাকলে এবং তা তিনি জীবিতকালে কাউকে না দেয়ার ব্যবস্থা করে গেলে সরকার তার সম্পত্তির ওয়ারিশ হবে। উত্তরাধিকার সম্পর্কে উপরোক্ত সাধারণ কয়েকটি বিষয় মনে রাখলে উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি বন্টনের জটিলতা দূর হবে।

ধন-সম্পদ আল্লাহর দান। মানুষ কষ্ট করে সম্পদ অর্জন করে। আয়-রোজগার করে ক্রয়ের মাধ্যমে মানুষ সম্পদের মালিক হয়। এ ছাড়া উত্তরাধিকার সূত্রেও মানুষ সম্পদের মালিক হয়। উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদের মালিক হতে হলে দু’টি শর্ত রয়েছে।ভূমিবিডি নিউজে তার বিবরণ তুলে ধরা হলো-উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠার শর্তদুই ভাবে মানুষ সম্পদের উত্তরাধিকার পায় তার একটি হলো- সম্পদের মালিক মৃত্যু বরণ করলে। আর দ্বিতীয়টি হলো- মৃত্যুকালে ওয়ারিশদের জীবিত থাকা। কাজেই সম্পদের মালিকের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তার সম্পত্তিতে ওয়ারিশদের হক প্রতিষ্ঠিত হবে না।প্রশ্ন উঠতে পারে…সম্পদের মালিক ‘মুরিশ’ যদি নিখোঁজ থাকে এবং তার বাঁচা-মরার বিষয়ে কোনো কিছু জানা না যায়। তখন আদালতের মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি হবে। যদি বিচারক মৃত্যুর পক্ষে রায় দেয় তবে তার ওয়ারিশগণ সম্পদের হকদার হবেন।কারা ওয়ারিশ হবেউত্তরাধিকার লাভের ভিত্তি হচ্ছে মৃত্যুব্যক্তির সঙ্গে নিকটাত্মীয়তার সম্পর্ক থাকতে হবে। এ হিসাবে যে সব আত্মীয় ওয়ারিশ হয় তারা মোট পঁচিশ শ্রেণির লোক। যার মধ্যে ১৫ শ্রেণির পুরুষ এবং ১০ শ্রেণির মহিলা রয়েছে-পুরুষদের মধ্যে যারা ওয়ারিশ১. পুত্র, ২. পৌত্র, ৩. পিতা, ৪. দাদা, ৫. আপন ভাই, ৬. বৈমাত্রেয় ভাই, ৭. বৈপিত্রেয় ভাই, ৮. আপন ভাইয়ের পুত্র, ৯. বৈমাত্রেয় ভাইয়ের পুত্র, ১০. আপন চাচা, ১১. বৈমাত্রেয় চাচা, ১২. আপন চাচাত ভাই, ১৩. বৈমাত্রেয় চাচাত ভাই, ১৪. স্বামী, ১৫. মুক্তিদানকারী মুনিব।নারীদের মধ্যে যারা ওয়ারিশ১. কন্যা, ২. মাতা, ৩. পৌত্রী, ৪. দাদী, ৫. নানী, ৬. আপন বোন, ৭. বৈমাত্রেয় বোন, ৮. বৈপিত্রেয় বোন, ৯. স্ত্রী, ১০. মুক্তিদানকারিনী।যে সব আত্মীয় ওয়ারিশ হবে না১. মৃতের সৎপুত্র ও কন্যা অর্থাৎ স্ত্রীর প্রাক্ত স্বামীর সন্তান, ২. সৎপিতা, ৩. মৃত মহিলার সৎপুত্র ও কন্যা, ৪. সৎমা, ৫. মৃতব্যক্তির শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালিকা, ৬. মৃত মহিলার শ্বশুর শাশুড়ি দেবর ননদ ও অনুরুপ পুত্রবধূ, ভাবী, ৭. পোষ্য পুত্র ও কন্যা ৮. ধর্ম পিতা-মাতা।

আরও নিউজ পেতে ক্লিক করুন