ব্লগ
ভূমি সম্পর্কিত সকল তথ্য পেতে অনুসন্ধান করুন
সাম্প্রতিক খবরা-খবর
দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশব্যাপী ভূমি অফিসে ঝটিকা পরিদর্শন বৃদ্ধি
দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশব্যাপী অভিযোগপ্রাপ্ত ভূমি অফিসে ঝটিকা পরিদর্শন (surprise visit) বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
আজ রবিবার সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি সম্পর্কিত বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভূমিমন্ত্রী এ কথা জানান। এসময় ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, দুর্নীতিমুক্ত ভূমিসেবা গড়তে আমরা আরও কঠোর হবো। মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এত কার্যক্রম গ্রহণ করার পরও ভূমিসেবা গ্রহীতাদের থেকে প্রায়ই অভিযোগ আসছে, যা সত্যিই দুঃখজনক।
এসময় দক্ষ, স্বচ্ছ, জনবান্ধব ও জবাবদিহিমূলক ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে না পারলে সার্বিকভাবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনারবাংলা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবেনা বলে মন্তব্য করেন ভূমিমন্ত্রী। “এজন্য জাতীয় স্বার্থে দুর্নীতিমুক্ত ভূমিসেবা নিশ্চিতে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে” – তিনি যোগ বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রয়োজনে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়মিত ‘কাউন্সেলিং’ ও ‘রিফ্রেসার্স ট্রেনিং’ করানো হবে।
ভূমি অফিসে সারপ্রাইজ ভিজিটের সময় ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সাথে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি থাকার গুরুত্বের উপর জোর দেন ভূমিমন্ত্রী। এছাড়া, মাঠ পর্যায়ের জরিপ অফিসগুলো পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক (কালেক্টর) ও বিভাগীয় কমিশনারদের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুরোধ পত্র পাঠানো হবে বলে জানান সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
সভাপতির বক্তব্যে ভূমি সচিব বিভাগীয় কমিশনারদের জানান, চাহিদার ভিত্তিতে ভূমি অফিসের সংস্কার পরিকল্পনা নেওয়া হবে যেন সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার হয়। তিনি আরও জানান, তহসিলদার (ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা) থেকে কানুনগো (এসিল্যান্ডের অধীনে উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা) পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ভূমি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ছাড়া দায়িত্ব দেওয়া হবেনা।
নতুন হাট-বাজার সৃষ্টিতে প্রয়োজনে ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি লীজ দেওয়াতে নারীদের অগ্রাধিকার প্রদান, বড় ধরণের দুর্নীতিগুলো (মামলা) কেস-স্টাডি হিসেবে প্রশিক্ষণে পাঠদান, দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তকৃত ভূমির হস্তান্তর ফি কমানো সহ বিভিন্ন প্রস্তাবনা উপস্থাপন করে মতামত প্রকাশ করেন সভায় উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারবৃন্দ।
সভায় উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারগণ হচ্ছেন – মোঃ খলিলুর রহমান (ঢাকা), মোঃ কামরুল হাসান এনডিসি (চট্টগ্রাম), ড. মোঃ হুমায়ুন কবীর (রাজশাহী), মো: ইসমাইল হোসেন এনডিসি (খুলনা), মো: সাইফুল হাসান বাদল (বরিশাল), মোঃ খলিলুর রহমান (সিলেট), মোঃ আবদুল ওয়াহাব ভূঞা (রংপুর), মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস (ময়মনসিংহ)। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, যেকোনো ভূমিসেবা গ্রহীতা কর্ম-দিবসে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভূমিসেবা হটলাইন ১৬১২২ নম্বরে কল করে কিংবা info@minland.gov.bd ঠিকানায় ইমেইল করে তাঁদের মতামত, প্রতিক্রিয়া, অভিযোগ কিংবা পরামর্শ জানাতে পারেন।
//Surprise inspections to be stepped up at land offices across the country to check corruption//
Land Minister Saifuzzaman Chowdhury said surprise inspections (surprise visits) will be stepped up to prevent corruption in land offices across the country against which complaints have been received.
The land minister made the remarks while addressing the Divisional Commissioners coordination meeting on the land and land ministry as the chief guest at the conference room of the land ministry at the secretariat on Sunday. Land Secretary Md Mustafizur Rahman PAA presided over the meeting.
The land minister further said, “We will be stricter in building corruption-free land services.” Despite taking so much action at the ministry level, complaints are often coming from land service recipients, which is regrettable.
It will not be possible to implement Sonar Bangla, dreamt by Bangabandhu if efficient, transparent, people-friendly, and accountable land services are not ensured – the land minister said. “Therefore, more stringent steps will be taken to ensure corruption-free land services for the national interest,” he added.
The Minister further said that, if necessary, regular ‘counseling’ and ‘refresher training’ of field level officers will be conducted.
The Land Minister emphasized the importance of having a representative of the concerned Divisional Commissioner with the representative of the Ministry of Land during the surprise inspection at the Land Office. Besides, a request letter will be sent to the Cabinet Division to give the responsibility of inspecting the field level survey offices to the Deputy Commissioner (collector) and Divisional Commissioners, said, Saifuzzaman Chowdhury.
In his speech, the land secretary told the Divisional Commissioners that a plan would be taken to reform the land office based on demand for efficient uses of resources. He further said that no responsibility will be given to the Land Officers promoted from Tehsildar (Union Land Assistant Officer) to Kanungo (Officer of Upazila Land Office under AC Land) without training.
The Divisional Commissioners expressed their views by presenting various proposals including the acquisition of land to establish Hat-Bazar, giving priority to women in leasing land, Teaching Large-scale corruption incidents in the training as case-study, Reduction of a transfer fee of long-term leased land.
The Divisional Commissioners present at the meeting were – Md. Khalilur Rahman (Dhaka), Md. Kamrul Hasan NDC (Chittagong), Dr. Md. Humayun Kabir (Rajshahi), Md. Ismiel Hossain NDC (Khulna), Md. Saiful Hassan Badal (Barisal), Md. Khalilur Rahman (Sylhet), Md. Abdul Wahhab Bhuiyan (Rangpur), Md. Shafiqur Reza Biswas (Mymensingh). Besides, senior officials of the ministry were present at the coordination meeting of the Divisional Commissioners.
It is to be noted that any land service recipient can call the land service hotline 16122 from 9 am to 5 pm on working days or email at info@minland.gov.bd to give their views, feedback, complaints, or suggestions.
জমি নিয়ে বিরোধ হলে কী করবেন ?
জমি জমাকে কেন্দ্র করে যে কোনো সময় বিরোধ দেখা দিতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, নিজের কেনা জমি অন্য কেউ দখল করে মালিকানা দাবি করছে কিংবা জাল দলিল তৈরি করে জমির দখল নিতে চায়। আদালতে মিথ্যা মামলাও ঠুকে দেয়। কিন্তু একটু সচেতন হলেই এ ঝামেলা থেকে অনেকটাই রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সে জন্য জানা থাকতে হবে জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে কীভাবে প্রতিকার পাবেন।
ফৌজদারি প্রতিকার জমি দখলকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে পারেন। এ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে হবে প্রথম শ্রেণীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে। আর এ মামলা করতে হবে বেদখল হয়ে গেলে কিংবা বেদখল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ার দুই মাসের মধ্যে। কোনো মামলা করলে ম্যাজিস্ট্রেট প্রতি পক্ষের ওপর সমন জারি করবেন। পরবর্তী সময়ে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনবেন এবং সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে সম্পত্তির দখলদার কে তা নির্ধারণ করবেন। প্রয়োজনে সরেজমিনে তদন্তের আদেশ দিতে পারেন পুলিশকে। তাদের দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রকৃত দখলদার কে, সে বিষয়ে রায় দেবেন। তবে ১৪৫ ধারায় প্রতিকার চাইতে গেলে এখানে স্বত্ত্ব বা মালিকানা দাবি করা যাবে না। এর মাধ্যমে শুধু প্রকৃত দখলদার নির্ণয় করার জন্য প্রতিকার চাওয়া যাবে।
মালিকানা দাবি করবেন যেভাবে জমির মালিকানা বা স্বত্ব দাবির জন্য দেওয়ানি আদালতের আশ্রয় নিতে হবে। জমি অবৈধভাবে দখলচ্যুত হলে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৮ ও ৯ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার পেতে পারেন। এ আইনের ৮ ধারা অনুযায়ী জমির মালিক নির্ধারিত পদ্ধতিতে জমিটি পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রতিকার চাইতে পারেন। তবে এ ধারা অনুযায়ী, দখলচ্যুত ব্যক্তিকে জমিতে তাঁর স্বত্ত্ব বা মালিকানা আছে কিংবা মালিকানার দাবি রয়েছে, তার ঘোষণা চাইতে হবে। না হলে এ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার পাওয়া সম্ভব হয় না। ৮ ধারার স্বত্ত্ব প্রমাণসহ মামলা করার ক্ষেত্রে বেদখল হওয়ার পর থেকে ১২ বছরের মধ্যে মামলা করার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের মামলাকে সাধারণত স্বত্ত্ব সাব্যস্ত খাস দখলের মামলা বলা হয়।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে হলে মালিকানা প্রমাণের দরকার নেই। শুধু জমি থেকে দখলচ্যুত হয়েছে এটি প্রমাণ করলেই চলবে। ৯ ধারায় উল্লেখ আছে, যদি কোনো ব্যক্তি বেদখল হন, তবে তিনি বা তাঁর মাধ্যমে দাবিদার কোনো ব্যক্তি মোকদ্দমার মাধ্যমে এর দখল পুনরুদ্ধার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে যেসব দিক বিবেচনা করা হয়, সেগুলো হলোবাদী অর্থাৎ যিনি প্রতিকার দাবী করেছেন, তিনি জমিটি দখল করে আসছিলেন কি না; বিবাদী তাঁকে জোরপূর্বক বেদখল করেছেন কি না; বিবাদী বে আইনিভাবে জমিতে প্রবেশ করেছেন কি না।
তবে বাদীকে অবশ্যই বেদখল হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে মামলা করতে হবে। অন্যথায় এ ধারায় মামলা করার অধিকার হারাতে হবে তাঁকে। তবে সরকারের বিরুদ্ধে এ ধারায় প্রতিকার চাওয়া যাবে না।
কোথায় ও কীভাবে আইনের আশ্রয় নেবেন জমিজমার মালিকানা নিয়ে প্রতিকারের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এখতিয়ারাধীন আদালতে মামলা করতে হবে। মামলার মূল্যমান চার লাখ টাকার কম হলে সহকারী জজ আদালতে এবং চার লাখের বেশি হলে অসীম এখতিয়ার পর্যন্ত যুগ্ম জেলা জজ আদালতে প্রতিকার চাইতে হবে। মামলা দায়ের করতে হবে আইনজীবীর মাধ্যমে। মালিকানাসহ দখলের প্রতিকার চাইলে জমির মূল্য বাবদ অ্যাড-ভ্যালোরেম (মূল্যানুপাতে) কোর্ট ফি দিতে হবে। ৯ ধারা অনুযায়ী শুধু দখলের জন্য প্রতিকার চাইলে সম্পত্তির মূল্য অনুসারে যে কোর্ট ফি তার অর্ধেক, অর্থাৎ অ্যাড-ভ্যালোরেম কোর্ট ফির অর্ধেক পরিমাণ কোর্ট ফি দিতে হবে। জমির মালিকানাসহ দখল কিংবা শুধু দখল চেয়ে প্রতিকারের ক্ষেত্রে যদি বাদী মনে করেন, তাঁর জমিটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাহলে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাইতে পারেন পৃথক আবেদনের মাধ্যমে।
জমি কেনার সময় ক্রেতাদের যা করণীয়
প্রত্যেকের জীবনেই জমি কিনে বাড়ি করার একটা স্বপ্ন থাকে। তবে জমি কেনার সময় কয়েকটা ব্যাপারে ক্রেতাদের সজাগ থাকতে হবে, যাতে পরবর্তীকালে কোন ঝামেলাতে না জড়িয়ে পড়তে হয়।
ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়ানোর আগে জেনে নিতে হবে, যে জমিটা কেনা হচ্ছে তার কোন আইনি সমস্যা আছে কিনা।
ক্রেতা যার থেকে কিনছে সে ওই জমিটা বিক্রি করতে পারবে কিনা? সেরকম হলে উকিলের পরামর্শ নিতে হবে, রেজিস্ট্রি করার আগে দেখে নিতে হবে জমিটা এক না অংশীদারি মালিকানার অন্তর্গত।
জমি রেজিস্ট্রেসনের সময় ভুললে চলবে না যে জমিটা কেনা হচ্ছে সেটা কোন বড় সমিতি, বড় কন্সট্রাকশন, বা সরকারি জমির আওতার অন্তর্গত কি না? সেটা মুচলেকাতে লিখিয়ে নিতে হবে ।
জমির টাকা হস্তান্তর করার আগে দেখে নিতে হবে জমিটার মালিক জমির সমস্ত ট্যাক্স, ও অন্যান্য বিল মিটিয়েছে কিনা। সরকারি দপ্তর বা মিনিউসিপালিটিতে খোঁজ নিয়ে তা জেনে নিতে হবে ।
অনেক সময় দেখা যায়, জমির মালিক জমিটা মরডগেজ দিয়ে লোন নিয়েছে। কাজেই জমি রেজিস্ট্রেসনের আগে এটাও দেখার বিষয় যে জমির মালিকের লোনের টাকা পরিশোধ হয়েছে কিনা?
জমি রেজিস্ট্রেসনের আগে দেখে নিতে হবে যে, যে পরিমাণ জমির টাকা দেওয়া হচ্ছে সেই পরিমাপের জমি ক্রেতা পাচ্ছে কিনা? দরকার হলে জমিটি সরকারি কর্মচারী দিয়ে মেপে নিতে হবে ।
আগের সমস্ত অর্থনৈতিক ও আইনি নথি ঠিক থাকলে, একটা চুক্তিনামা করিয়ে নিতে হবে, যাতে ওই জমির মালিক পরে জমির দাম বৃদ্ধি, বা অন্য কোন ক্রেতাকে বেশি মূল্যে জমিটি বিক্রি না করতে পারে ।
একটি ৫০টাকার সরকারি চুক্তিপত্র কিনে তাতে জমিটির মূল্য, আগাম দেওয়া টাকার পরিমান, সময় সবকিছু লিখে নিতে হবে, যাতে কোন পক্ষই আইনি জটিলাতায় না পরে । খুব ভাল হয় যদি এই কাজটি করার সময় দু’পক্ষের উকিল ও দু’জন সাক্ষী থাকে। পাকেচক্রে কোন পক্ষ সমস্যার সম্মুখীন হলে যাতে অপর পক্ষের বিরূদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়। রেজিস্ট্রি হল জমির হস্তান্তারের দুপক্ষেরই প্রমাণ পত্র ।
অভয় দিয়ে বলা জেতে পারে উপরিউক্ত বিষয়গুলির ওপর দৃষ্টিপাত করে জমি কিনলে জমির পেছনে টাকা বিনিয়োগ স্বার্থক হবে, ও আইনি কোন সমস্যার মুখেও পরতে হবে না।
জমি ও অন্যান্য সম্পত্তি হস্তান্তরের দলিল ও রেজিস্ট্রেশনের নিয়ম
ভূমি হস্তান্তরের দলিল স্ট্যাম্পের উপর সরকার কর্তৃক প্রকাশিত নির্দিষ্ট ফরমেট বা ছক অনুযায়ী তৈরি করতে হবে। এই ছকে ক্রেতা-বিক্রেতার ছবি সংযোজনের নতুন বিধান রাখা হয়েছে।
তামাদি হওয়ার সময় সীমা
তামাদি হওয়ার সময়-সীমা তিন বছর থেকে এক বছর করা হয়েছে। দলিল তৈরী হওয়ার তিন মাসের মধ্যে তা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
দলিল রেজিস্ট্রেশনের সময়
দলিল তৈরী হওয়ার তিন মাসের মধ্যে তা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। মৌখিক দান বা হেবা দলিল রেজিস্ট্রেশন।
মুসলিম পারিবারিক ধর্মীয় আইন অনুযায়ী স্থাবর সম্পত্তি মৌখিক দান বা হেবা দলিলো এখন থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই দলিল হবে ঘোষণামূলক। এর জন্য ফি হবে মাত্র ১০০=(একশত) টাকা।
হেবা বা দান কে কাকে করতে পারে: হেবার ক্ষেত্রে শুধু রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয় তথা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে, পিতা-মাতা ও সন্তানের মধ্যে, ভাই-ভাই, বোন-বোন অথবা ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নানা-নানী থেকে নাতি-নাতনী ও নাতি-নাতনী থেকে নানা-নানী সম্পর্কের মধ্যে হেবা দলিলে রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে এই নাম মাত্র ১০০ (একশত) টাকা ফিতে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ পাওয়া যাবে।
উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন: উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। তবে এক্ষেত্রে ওয়ারিশগণের মধ্যে সম্পত্তি বন্টন না হওয়া পর্যন্ত রেজিস্টেশন করার প্রয়োজন নেই।
সম্পত্তি বন্ধকের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন: সম্পত্তি বন্ধকের ক্ষেত্রেও রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ফি হবে ২০০ (দুইশত) টাকা থেকে ৫০০০(পাঁচ হাজার) টাকা। আগে যা ছিল ৫০০(পাঁচশত) টাকা থেকে ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা। এর ফলে বন্ধকি সম্পত্তি কেহ অন্যত্র বিক্রয় করে প্রতারণা বা জালিয়াতির আর কোন সুযোগ পাবে না।
আদালতের মাধ্যমে প্রাপ্ত অগ্রক্রয় সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন: আদালতের মাধ্যমে প্রাপ্ত অগ্র ক্রয় দলিলও রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বায়না চুক্তির রেজিস্ট্রেশন ও ফি: এখন থেকে বায়না চুক্তি রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সম্পত্তি বিক্রয়ের জন্য বায়নার ক্ষেত্রে ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত সম্পত্তির ক্ষেত্রে ৫০০/-(পাঁচশত) টাকা এবং ৫ লক্ষ টাকার অধিক থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ১,০০০/-(এক হাজার) টাকা। ৫০ লক্ষ টাকার অধিকমূল্য সম্পত্তির জন্য ২,০০০/-(দুই হাজার) টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হবে। বায়না নামা রেজিস্ট্রেশন করা ছাড়া চুক্তি বলবৎ করতে আইনগত কোন সুবিধা পাওয়া যাবে না। আবার বায়নার অবশিষ্ট টাকা জমা না করা হলে কোন মামলা মোকদ্দমা করা যাবে না। সম্পত্তি বিক্রয়ের বায়নানামা চুক্তির ৩০ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে ১লা জুলাই ২০০৫ থেকে এ আইন কার্যকর হওয়ার আগে যেসব বায়না হয়েছে কিন্তু এখনও রেজিস্ট্রেশন হয় নাই সেগুলো ১ জানুয়ারি ২০০৬ এর মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আবার বায়নানামা রেজিস্ট্রেশন না করা এসব চুক্তি কার্যকর বা বাতিল করতে হলে রেজিস্ট্রশনের জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদের পর ৬ মাসের মধ্যে মামলা করতে হবে। সম্পত্তি হস্তান্তরের দলিল ৩ মাসের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
বিঃ দ্রঃ ভবিষ্যতে মামলা মোকদ্দমা থেকে পরিবারগুলোকে রক্ষা করতে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির দলিল রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পূর্বে পুরুষদের আপসে সম্পত্তি বন্টনের দলিল রেজিস্ট্রেশন বার্ধমূলক করার ফলে ওয়ারিশদের ভোগান্তি অনেকাংশে হ্রাস পাবে। মাত্র ২০-(বিশ) টাকা মূল্যের স্ট্রাম্পে দলিল করে তা রেজিস্ট্রেশন করা যাবে এবং সর্বোচ্চ অংশ প্রাপ্ত অংশীদারের সম্পত্তির হিসাব থেকে বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম পরিমাণের অংশীদারদের ভগে পাওয়া সম্পত্তির মূল্য মানের শতকরা আড়াই ভাগ টাকা সব অংশীদারের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ নেওয়া হবে।
- এটা তো ছিলো জমি নিয়ে সধারণ একটি আইনী বিষয় মাত্র। কিন্তু জমি বা ভূমির সাথে সম্পৃক্ত আইন-কানুনের আরোও অনেক কিছুই আছে অজানা। যেগুলো জানাটা আসলেই খুব সরকার কিন্তু কঠিন ভাষায় লিখিত হওয়ায় সাধারন মানুষের কাছে সেগুলো নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তথাপিও কষ্টসাধ্য কাজটি আইন-কানুন ও বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে সহজভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করে “সহজ কথায় জমি জমা” নামে একটি বই রচনা করা হয়েছে। বইটি পাঠকের কাছে সহজ করার জন্য বিভিন্ন অধ্যায়ের আলোকে একটি প্রশ্ন ও উত্তর অধ্যায়ও সংযুক্ত করা হয়েছে। কোন অধ্যায় হয়তো প্রথমে পাঠ করা শুরু করলে কঠিন মনে হবে। তবে সম্পূর্ন অধ্যায়টি একটু ধৈর্য্য ধরে পড়ে শেষ করার পর ঐ বিষয়টি সম্পর্কে একটি সাধারন ধারনা পাওয়া যাবে।
জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম
সম্পদ বন্ধক রেখে লোন নেওয়ার নিয়ম
আসুন, বন্ধক লোনের ব্যাপারে জেনে নেই
বন্ধক লোন নিতে হলে ব্যাংকে আপনার কোন সম্পত্তি জমা রেখে সেইটার বিনিময়ে লোন নিতে হয়। সম্পত্তিটা আপনার বাসা হতে পারে, আপনার জমি হতে পারে বা আপনার নামের কোন বিল্ডিং বা অফিস হতে পারে। বন্ধক লোন নেওয়াটা বেশি সুবিধার বলে আমি মনে করি কারণ আপনি যদি লোন পরিশোধ করতে না পারেন তবে ব্যাংক আপনার সম্পত্তিটা নিয়ে নিবে। আপনি প্রথমবার কোন জায়গা কিনছেন? তবে বন্ধক লোন নেওয়ায় ভালো বলে আমি মনে করি।
বন্ধক লোন নেওয়ার জন্য কি কি করতে হবেঃ
বন্ধক লোন সাধারণত আমাদের নিজেদের আর্থিক সচ্ছলতার জন্য নেওয়া কিন্তু সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রেও আমরা এই লোন নিতে পারি। এই লোন নেওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধাটা হচ্ছে, আপনি লোন পরিশোধ করার পর পুনরায় আপনার সম্পত্তিটা ব্যবহার করতে পারি। একবার লোনটা পরিশোধ হয়ে গেলেই আপনি আবার সম্পত্তিটা আপনার একমাত্র মালিক হয়ে যাবে।
আপনি বিভিন্ন কাজে এই লোন নিতে পারেন যেমন, আপনার ব্যবসায়িক উন্নয়নের জন্য, বাসা করার জন্য, ছেলেমেয়েকে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে।
কি ধরনের সম্পত্তি আপনি বন্ধক রাখতে পারবেনঃ
আপনি আপনার যে কোন ধরনের সম্পত্তি বন্ধক রাখতে পারেন। আপনি চাইলে আপনার বসবাসকৃত বাসাটাও বন্ধক রাখতে পারেন আবার আপনার যে বাসাটা ভাড়া দেওয়া আছে ঐটা বন্ধক সম্পত্তি হিসেবে আপনি ব্যাংকে জমা দিতে পারবেন। আপনার নামে কোন বৈধ জায়গা থাকলে সেটাও বন্ধক রাখতে পারেন। কমার্শিয়াল এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল সম্পত্তি বা নির্মাণাধীন সম্পত্তি আপনি বন্ধক রাখতে পারেন।
সম্পত্তির বিনিময়ে আপনি কতখানি লোন পেতে পারেনঃ
সাধারণত সম্পত্তির মূল্যের ৫০%-৬০% লোন দেওয়া হয়। যদি আপনার সম্পত্তি অনেক দামি হয় তবে ব্যাংক আপনাকে সর্বোচ্চ ৭৫% লোন দিবে। মনে রাখবেন, ব্যাংক আপনার সম্পত্তি নিয়ে প্রতিনিয়ত যাচাই-বাছাই করবে, এর দাম সম্পর্কে ধারণা রাখবে।
বন্ধক লোনের ইন্টারেস্টঃ
বন্ধক লোনের ইন্টারেস্ট সাধারণত ১২%-১৫% এর বেশি হয় না যার কারণে এই লোন ব্যবস্থাটা সকলের খুব পছন্দসয় লোন ব্যবস্থা। অনেকেই পার্সোনাল লোন নেওয়ার থেকে বন্ধক লোনটাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে এবং এতে ইন্টারেস্টের খরচটাও অনেক কম হয়। হোমলোনের পর বন্ধক লোনকে অনেক সস্তা লোন বলা হয়। সাধারণভাবে ১৫বছরের মধ্যে বন্ধক লোন শোধ করতে হয় তবে ব্যাংক চাইলে আপনি বেশি সময় পেতে পারেন।
ইন্টারেস্ট রেটের উপর ভিত্তি করে এই লোনকে ৩ভাগে ভাগ করা হয়ঃ
Fixed Rate Mortgage (FRM)
Adjustable Rate Mortgage (ARM)
Interest Only Mortgage Rate
এইগুলোর মধ্যে FRM এর ক্ষেত্রে আপনাকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ এবং মূল অর্থ ব্যাংকে দিতে হবে। ARM লোন বন্ধককৃত সম্পত্তির ইকোনমিক ও মার্কেট ভ্যালুর উপর নির্ভর করে। আপনি যদি Interest Only নেন তবে আপনাকে আগে ইন্টারেস্টের টাকাটা পরিশোধ করতে হবে তারপর লোনের বাকি টাকাটা দিতে হবে।
সাধারণত লোন নিলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনাকে মূল টাকার সাথে ইন্টারেস্টের টাকাটা পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু বন্ধক লোনের ক্ষেত্রে আপনার সম্পত্তির কর এবং জীবনবীমার টাকাটাো যুক্ত হয়। জীবনবীমার খরচটা কেন যোগ হয়? জীবনবীমা আপনার সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং ক্ষতিপূরণে সাহায্য করে। এসব হিসাব দেখতে গেলে আবার বন্ধক লোনকে খুব ব্যয়বহুল মনে হয় কিন্তু আপনি যদি লোন নেওয়ার আগে বিষয়গুলো একটু ভালোভাবে খোঁজখবর নেন তাহলে দেখবেন, এইটা সবচেয়ে সুবিধাজনক।
বন্ধক লোন নেওয়ার জন্য কোন বিষয়গুলো জরুরিঃ
বন্ধক লোন পেতে হলে আপনাকে উপার্জনক্ষম হতে হবে। তবে আপনি উপার্জনক্ষম হলেও ২১ বছরের আগে এ লোন পাবেন না। এই ২টা মুখ্য বিষয় ছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হয় বন্ধক লোন নেওয়ার সময়। সেগুলো নিচে দেওয়া হলঃ
Total Annual Income/ বাৎসরিক আয়
Income Tax Returns For The Last 3 Years/ গত ৩বছরে প্রদত্ত কর
Total Work Experience/ কর্ম অভিজ্ঞতা
Experience With The Current Company/ বর্তমান প্রতিষ্ঠানে কর্ম অভিজ্ঞতা
Property Value/ সম্পত্তির মূল্য
Existing Loans/Liabilities, If Any/ অপরিশোধিত লোন, যদি থাকে
Total Number Of Dependents/ সম্পত্তির পরিমাণ
ব্যাংকের উপর ভিত্তি করে গুরুত্বের বিষয়টা কম বেশি থাকতে পারে কিন্তু প্রতিটা ব্যাংকে এই বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করেই লোন দেয়।
বন্ধক লোন পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
বন্ধক লোন নিতে আপনার বেতনের প্রমানপত্র, আপনি যদি ব্যবসায়ী হন তবে তার প্রমাণপত্র লাগবে। নিচে আপনাদের সুবিধার্থে একটা লিস্ট দেওয়া হলঃ
SALARIED
SELF-EMPLOYED
Completed loan application
Completed loan application
Passport size photographs
Passport size photographs
Proof of identity: voter card, driving license, pan card, employee id card
Proof of identity: voter card, driving license, pan card, employee id card
Proof of address: Aadhaar card, telephone bill, electricity bill
Proof of business; proof of education qualification
Your latest salary slips
Certified financial statement for last 3 years
Form 16 from last 3 years
Income tax return and profit and loss stamen from last 3 years
Bank statements of last 6 months
Bank statements of last 6 months
Processing fee cheque
Processing fee cheque
বন্ধক লোন, লোনের মধ্যে সেরা। এই লোনের সহজলভ্যতা লোনটিকে জনপ্রিয় করেছে। অল্প পরিমাণ ইন্টারেস্ট এবং লোন পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত সময় এই লোনের বিশেষত্ব। এই লোন নেওয়ার প্রক্রিয়াটা খুবই সহজ এবং লোন পরিশোধ করতে বেশি সময় নিলেও অনেক ব্যাংক এক্সট্রা চার্জ নেয়না। মূলকথা, এই লোনের ক্ষেত্রে মুখ্য বিষয় শুধুমাত্র আপনার সম্পত্তির মূল্য।
If you want to take a mortgage loan, you have to deposit some property in the bank and take a loan in return. The property could be your home, your land or a building or office in your name. I think it is more convenient to take a mortgage loan because if you cannot repay the loan, the bank will take your property. Which place are you buying for the first time? However, I think it is better to take a mortgage loan.
What to do to get a mortgage loan:
Mortgage loans are usually taken out for our own financial well-being but we can also take out these loans when buying property. The biggest advantage of this loan is that you can use your property again after repaying the loan. Once the loan is repaid, you will be the sole owner of the property again.
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাথে মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেনমন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান জানান, মন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। তারা দুজন পারস্পরিক কুশল বিনিময় ও দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। (বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১)

Indian High commissioner to Bangladesh Vikram K Doraiswami paid a courtesy call on the Land Minister Saifuzzaman Chowdhury, MP today in the ministry office (Thursday, July 15 2021)
ভূমি মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প:
ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত দপ্তর/সংস্থার মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনা (Land Management), ভূমি রাজস্ব জরিপ (Cadastral Survey) ও ভূমি ও ভূমি রাজস্ব সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি (Land Land Revenue Settlement/Arbitration) সম্পর্কিত নিয়মিত কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ভূমি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প (Development Project) গ্রহণের মাধ্যমে ভূমিহীন, গৃহহীন, ঠিকানাহীন, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র পরিবারকে পুনর্বাসন, ভূমি ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন তথা ডিজিটাইজেশন ও ভূমি অফিসের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
২০১৯-২০ অর্থ বছরে চলমান প্রকল্প (চার্ট):
১। গুচ্ছগ্রাম-২য় পর্যায় (ক্লাইমেট ভিকটিমস রিহ্যাবিলিটেশন) প্রকল্প;
২। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ, রেকর্ড প্রণয়ন ও সংরক্ষণ প্রকল্প;
৩। চর ডেভেলপমেন্ট এন্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট-ব্রিজিং (সিডিএসপি-ব্রিজিং) প্রকল্প (ভূমি মন্ত্রণালয়ের অংশ);
৪। উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ প্রকল্প;
৫। ভূমি ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প;
৬। সমগ্র দেশে শহর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ প্রকল্প;
৭। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপের মাধ্যমে ৩টি সিটি কর্পোরেশন, ১টি পৌরসভা এবং ২টি গ্রামীণ উপজেলায় ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি স্থাপন প্রকল্প;
৮। ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প (চার্টে দেখানো হয়নি)।
২০২০-২১ অর্থ বছর থেকে শুরু হওয়া নতুন ৪টি প্রকল্প:
১। মৌজা ও প্লট ভিত্তিক ডিজিটাল ভূমি জোনিং প্রকল্প;
২। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালনা সক্ষমতা; শক্তিশালীকরন প্রকল্প;
৩। ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন শীর্ষক প্রকল্প;
৪। এস্টাব্লিশমেন্ট অব ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রকল্প।
উত্তরাধিকার হিসাব এর সকল বিধি:
জবিউল ফুরুজঃ

এদের অংশ পবিত্র কোরআন শরীফে নির্ধারণ করে দেয়া আছে। জবিউল ফুরুজ হল ১২ জন। এদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ এবং বাকি ৮ জন মহিলা। ৪ জন পুরুষ হল – (১) স্বামী, (২) পিতা , (৩) দাদা , (৪) সৎ ভাই (বৈপিত্রেয়)। নির্ধারিত অংশের পরিমান নিম্নরূপঃ – (১) স্ত্রী , (২) কন্যা , (৩) পুত্রের কন্যা , (৪) মাতা, (৫) দাদি এবং নানি , (৬) সহোদর বোন, (৭) সৎ বোন (বৈমাত্রেয়), (৮) সৎ বোন (বৈপিত্রেয়)। নির্ধারিত অংশের পরিমান নিম্নরূপঃ
(১) স্বামী ১/৪ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে।
(২) স্বামী ১/২ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান না থাকে।
(৩) স্ত্রী ১/৮ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে।
(৪) স্ত্রী ১/৪ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান না থাকে।
(৫) ১/২ পাবে যখন একজন মাত্র কন্যা থাকে এবং পুত্র না থাকে।
(৬) কন্যা ২/৩ পাবে যখন দুই বা ততধিক কন্যা থাকে এবং পুত্র না থাকে।
(৭) কন্য অবশিষ্ট ভোগী হিসাবে পাবেন যখন এক বা একের অধিক পুত্র থাকে।
(৮) পুত্রের কন্যা পাবে ১/২ অংশ পাবে যখন একজন মাত্র পুত্রের কন্যা থাকে। যদি কোন পুত্র, পুত্রের পুত্র বা একের অধিক কন্যা এবং পুত্রের কন্যা না থাকে।
(৯) পুত্রের কন্যা ২/৩ ভাগ পাবে যখন দুই বা ততধিক পুত্রের কন্যা থাকে এবং পুত্র ও পুত্রের পুত্র এবং এবং একের অধিক কন্যা না থাকে।
(১০) পুত্রের কন্যা অবশিষ্ট ভোগী হিসেবে পাবেন। পুত্রের পুত্র না থাকলে সমান অংশ কা আইন অনুযায়ী।
(১১) পিতা ১/৬ অংশ পাবে পুত্র বা পুত্রের পুত্র থাকে।
(১২) পিতা ১/৬ অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যখন এক বা একরে অধিক কন্যা, পুত্রের কন্যা এবং পুত্রের পুত্র না থাকে।
(১৩) পিতা অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যখন পুত্র বা পুত্রের পুত্র থাকে।
(১৪) মাতা ১/৬ অংশ পাবে যখন পুত্র ও পুত্রের পুত্র এবং দুই বা ততধিক ভাই বোন এবং পিতা থাকে।
(১৫) মাতা ১/৩ অংশ পাবে যখন পুত্র অথবা পুত্রের পুত্র এবং একের অধিক ভাই বোন না থাকে।
(১৬) মা ১/৩ অংশ পাবে যখন স্ত্রী, স্বামী এবং বাবা থাকে। s
(১৭) দাদা ১/৬ অংশ পাবে যখন সন্তান এবং পুত্রের সন্তান থাকে এবং পিতা বা নিকটতম পিতামহ না থাকে।
(১৮) দাদা অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে ১/৬ অংশ পাবেন যখন কন্যা অথবা পুত্রের কন্যা থাকে।
(১৯) দাদা অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যদি দূরবর্তী কোন অংশিদার বা অকশিষ্ট অংশ ভোগী না থাকে।
(২০) দাদী ১/৬ অংশ পাবেন যদি কোন মাতা বা মায়ের দিকে দাদী না থাকে।
(২১) পূর্ণ বোন ১/২ অংশ পাবেন যখন একজন মাত্র বোন থাকে এবং যদি কোন সন্তান, পুত্রের সন্তান, পিতা অথবা ভাই না থাকে।
(২২) পূর্ণ বোন ২/৩ পাবে যখন দুই বা ততধিক বোন থাকে এবং সন্তান, পুত্রের সন্তান, পিতা ও ভাই না থাকে।
(২৩) বোন অবশিষ্ট ভোগী হিসেবে পাবে যখন পূর্ণ ভাই থাকে বা এক বা একাধিক পুত্রের কন্যা থাকে এবং বোনকে বঞ্চিত করার মত কোন অংশিদার না থাকে এবং এক বা একাধীক কন্যাদের সহিত অবশিষ্ট ভোগী থাকে তারা কন্যাদের অংশ নেওয়ার পর অবশিষ্ট ভোগী হবে।
(২৪) বৈমাত্রীক বোন পাবে ১/২ অংশ যখন একজন মাত্র বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা ও পূর্ণ ভাই বোন না থাকে।
(২৫) বোন পাবে ২/৩ অংশ যখন দুই বা ততধিক বৈমাত্রীক বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা ও পূর্ণ ভাই বোন না থাকে।
(২৬) বৈমাত্রীয় বোন পাবে ১/৬ ভাগ যখন একজন পূর্ণ বোন থাকে (বোন পাবে ১/২ এবং বৈমাত্রী বোন পাবে ২/৩, ১/২, ১/৬)।
(২৭) বৈমাত্রীয় বোন অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যখন কোন বৈমাত্রীয় ভাই, এক বা একাধিক কন্যা এবং পুত্রের কন্যা এবং বঞ্চিত করার মত কোন অংশিদার না থাকে।
(২৮) বৈমাত্রীয় ভাই ১/৬ অংশ পাবে যখন সুধু মাত্র একজন বৈমাত্রীয় ভাই থাকে এবং সন্তান, পুত্রের সন্তান ও পিতা না থাকে।
(২৯) বৈপিত্রীয় ভাই ১/৩ অংশ পাবে যখন সেখানে দুই বা ততধিক বৈপিত্রীয় ভাই থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা না থাকে।
(৩০) বৈপিত্রীয় বোন ১/৬ অংশ পাবে সেখানে একমাত্র বৈপিত্রীয় বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা না থাকে।
(৩১) বৈপিত্রীয় বোন ১/৩ অংশ পাবে যখন সেখানে দুই বা ততধিক বৈপিত্রীয় বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা না থাকে।
আসাবা বা অবশিষ্টভোগীঃ
(১)। আসবা গণের চারটি শ্রেণী আছেঃ
শ্রেণী (১): (১)) পুত্র , (২))কন্যা , (৩))পুত্রের পুত্র, (৪)) পুত্রের কন্যা
শ্রেণী (২): (১))পিতা , (২))দাদা
শ্রেণী (৩): (১))সহোদর ভাই, (২)) সহোদর বোন, (৩))সৎ ভাই (বৈমাত্রেয়), (৪))সৎ বোন (বৈমাত্রেয়), (৫))সহোদর ভাইয়ের পুত্র, (৬))সৎ ভাই(বৈমাত্রেয়)-এর পুত্র, (৭))সহোদর ভাইয়ের পুত্রের পুত্র , (৮)) সৎ ভাই(বৈমাত্রেয়)-এর পুত্রের পুত্র ।
শ্রেণী (৪): (১))চাচা, (২))চাচা (বৈমাত্রেয়), (৩))চাচাতো ভাই, (৪))চাচাতো ভাই (বৈমাত্রেয়), (৫))চাচাতো ভাইয়ের পুত্র, (৬))চাচাতো ভাই (বৈমাত্রেয়) এর পুত্র , (৭))চাচাতো ভাইয়ের পুত্রের পুত্র, (৮))চাচাতো ভাই (বৈমাত্রেয়)এর পুত্রের পুত্র
(২)। শুধুমাত্র পুরুষ অথবা মহিলা আসাবা হিসাবে থাকলে, অবশিষ্টাংশের সম্পুর্ণ অংশ পুরুষ অথবা মহিলা পাবেন, কিন্তু একই শ্রেণীর পুরুষ ও মহিলা একত্রে আসাবা হিসাবে থাকলে, পুরুষ ও মহিলাগণ ২:১ অনুপাতে অবশিষ্টভোগী হবেন।

ধাপঃ (১) – প্রথমে সম্পত্তি জবিউল ফুরুজ দের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে।
ধাপঃ (২) – জবিউল ফুরুজ দের অংশ সমূহ যোগ এর পরে সম্পূর্ণ অংশটি ১ এর চেয়ে বেশী হলে, সকল অংশ আনুপাতিক হারে কমে আসবে যাতে সম্পূর্ণ অংশটি ১ হয়।
ধাপঃ (৩) – যদি কোন আসাবা না থাকেন এবং সম্পূর্ণ অংশ ১ এর চেয়ে কম হলে স্বামী স্ত্রী এর অংশ ছাড়া জবিউল ফুরুজ অংশ সমূহ আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাবে যাতে মোট অংশটি ১ হয়। স্বামী/স্ত্রী এর অংশ কঠিনভাবে সুনির্দিষ্ট করা।
ধাপঃ (৪) – আসাবা থাকলে অবশিষ্ট অংশ আসাবাগন পাবেন নিম্নের ক্রম অনুযায়ী পাবেনঃ
ধাপঃ (১) >ধাপঃ (২)>ধাপঃ (৩)>ধাপঃ (৪)
(শ্রেণী ১ থাকলে পরের শ্রেণীর আসাবাগন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন ,শ্রেণী ২ থাকলে পরের শ্রেণীর আসাবাগন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন; এভাবে চলতে থাকবে)
খতিয়ান:খতিয়ানের অর্থ হইল “হিসাব”।সাধারণভাবে স্বত্ব সংরক্ষণ ও রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে জরীপ বিভাগ কর্তৃক প্রত্যেক মৌজার ভূমির মালিক বা মালিকগণের নাম, পিতা অথবা স্বামীর নাম, ঠিকানা, হিস্যা(অংশ) এবং তাদের স্বত্বাধীন দাগসমূহের নম্বরসহ বূমির পরিমাণ, ম্রেণী, এদের জন্য দেয় খাজনা ইত্যাদি বিবরণ সহ ক্রমিক সংখ্যা অনুসারে যে স্বত্ব তালিকা বা স্বত্বের রেকর্ড প্রস্তুত করা হয় তাদের প্রত্যেকটিকে খতিয়ান বলা হয় এবং উক্ত রেকর্ডকে স্বত্ত্বের রেকর্ড বা রেকর্ড অব রাইটস(ROR)বলা হয়।এব বা একাধিক দাগের সম্পূর্ণ বা আংশিক পরিমাণ ভূমি নিয়ে এক বা একাধিক ব্যক্তির নামে স্মরনীয় বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যে ভূমি স্বত্ব প্রস্তুত করা হয় তাকে “খতিয়ান” বলে।খতিয়ানগুলো ১,২,৩,৪,৫ ইত্যাদি ক্রমিক সংখ্যা দ্বারা সাজানো হয়ে থাকে। প্রত্যেক খতিয়ানে একটি সংখ্যা রয়েছে। ইহাদেরকে খতিয়ান নম্বর বলা হয়। প্রত্যেক মৌজার খতিয়ান ১(এক) হতে শুরু হয়। কোন কোন মৌজার কয়েক হাজারের বেশি থাকতে পারে। কোন মৌজার কতটি খতিয়ান রয়েছে তা উক্ত স্বত্বের রেকর্ড (ROR) পাওয়া যায়।
খতিয়ান প্রস্ততের ইতিহাসঃ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অর্জন ও প্রজস্বত্ব আইনের চতুর্থ অধ্যায় অর্থাৎ ১৭ হতে ৩১ ধারায় খতিয়ান প্রস্তুতকরণ সম্পর্কিত বিধিবিধান রয়েছে। ১৭ নম্বর ধারার ১ নম্বর উপধারা অনুযায়ী সরকারকে কোন জেলা, জেলার অংশ অথবা স্থানীয় এলাকার ক্ষেত্রে খতিয়ান প্রস্তু করার জন্য অথবা ১৮৮৫ সালের বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন অনুসারে প্রস্তুতকৃত ও চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত খতিয়ান পরিমার্জন করার জন্য ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। ২ নম্বর উপধারয় বলা হয়েছে যে, যদি ১৮৮৫ সালের বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন অনুসারে প্রস্তুতকৃত ও চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত খতিয়ান পরিমার্জন করার জন্য ক্ষমতা প্রদাণ করা হয়েছে।২নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে যে, যদি ১৮৮৫ সালে বঙ্গীয় প্রাজাস্বত্ব আইন অথবা ১৯৩৬ সালের সিলেট প্রজাস্বত্ব আইন অনুযায়ী খতিয়ান প্রস্তুতের জন্য আদেশ প্রদান করা হয়ে থাকে কিক্ত খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় নি কিংবাঐ খতিয়ান চূড়া্তভাবে প্রকাশিত হয় নি তাহলে ঐ কার্যক্রম স্থগিত থাকবে এবং এ আইনের বিধান অনুযায়ী প্রস্ততি করতে হবে। আরও একটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে যে, ১৮৮৫ সালের বঙ্গীয় প্রাজস্বত্ব আইনে আমরা ১৯৩৬ সালের সিলেট প্রাজস্বত্ব আইনে যদি খতিয়ান প্রস্ততকরণের কোন কার্যক্রম আরম্ভ করা হয়ে থাকে তাহলে এ অধ্যায় অনুসারে আরম্ভ করা হয়েছে বলে ধরে নেয়া হবে। এ আইনে ১৯ধারায় খতিয়ান প্রকাশ করার ভিভিন্ন পদক্ষেপ বর্ণনা করা হয়েছে। একটি খতিয়ানে কি কি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে তার বিবরণ ১৮ ধারায় রয়েছে। সে মোতাবেক খতিয়ান প্রস্তুত করা হলে বা সংশোধন করা হলে রাজস্ব অধিকার খসড়া খতিয়ান জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে প্রকাশ করবেন। অতঃপর এ সম্পর্কে কোন আপত্তি থাকলে রাজস্ব অধিকার তা নিষ্পত্তি করবেন। রাজস্ব কর্মকর্তার আদেশে সন্তুষ্ট না হলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সরকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের পদের নিচে নয় এমন রাজস্ব কর্মকর্তার নিকট আপিল করবেন। তার সিদ্ধান্তেও সন্তষ্ট না হলে ৫৩ ধারা অনুযায়ী বিশেষ জজের নিকট আপিল করা যাবে এবং সেখান থেকে দেওয়ানী কার্যবিধির ১১৫ ধারা অনুযায়ী সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করা যাবে।সকল ধরনের সম্পত্তি ও আপিল নিষ্টত্তি করা হলে রাজস্ব কর্মকর্তা চূড়ান্ত রূপে খতিয়ান প্রকাশ করবেন। রাষ্ট্রীয় অর্জন বিধিমালা ২৫ নম্বর বিধিতে বলা হয়েছে যে, রাজস্ব কর্মকর্তা চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত খতিয়ান বিনামূল্যে পরিদর্শনের জন্য সুবিধাজনক স্থনে কিছু দিনের জন্য উন্মুক্ত রাখবেন।রাজস্ব কর্মকর্তা চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত খতিয়ান ও তারিখ বর্ণনা করে সার্টিফিকেট প্রদাণ করেন যা খতিয়ানের চূড়ান্ত সাক্ষ্যরূপে পরিগণিত হবে।
খতিয়ানের প্রকারঃবাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ৪ ধরনের খতিয়ান রয়েছে। যথা – (১)সি,এস খতিয়ান, (২)এস, এ খতিয়ান, (৩)আর, এস খতিয়ান, (৪)বি, এস খতিয়ান/সিটি জরিপ।(১)সি, এস খতিয়ানঃ ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯৪০ সালে সরকার জরিপের মাধ্যমে যে খতিয়ান প্রস্তত করেন তাকে সি, এস খতিয়ান বলে। (নমুনা চিত্র )।(২)এস, এ খতিয়ানঃ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ২৭ হতে ৩১ ধারা অনুযায়ী ১৯৫৬-৬০ সালে যে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় তাকে এস,এ (State Acquision) থতিয়ান কলে। (নমুনা চিত্র)(৩)আর,এস খতিয়ানঃ এই আইনের ১৪৪ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার খতিয়ান প্রস্তুত করার উদ্যোগ নেন এরূপ খতিয়ানকে বলা হয় আর,এস খতিয়ান(Renisional Survey) (নমুনা চিত্র)(৪)বি,এস খতিয়ান/সিটি জরিপঃ১৯৯৮-৯৯ সাল হতে বর্তমানে চলমান জরিপকে বি, এস খতিয়ান বা সিটি জরিপ বলে। যাহা এখনো চলমান ।খতিয়ান অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহঃখতিয়ানে কি কি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে সে সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় অর্জন বিধিমালার ১৮ নম্বর বিধিতে বিবৃত হয়েছে। এ বিধি অনুযায়ী নিম্নলিখিত বিবরণসমূহ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।(ক)প্রজা বা দখলদারের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা।(খ)প্রজা বা দখলদার কোন শ্রেণীল অন্তর্ভুক্ত ।(গ)প্রজা বা দখলদর কর্তৃক জমির অবস্থান শ্রেণী, পরিমান ও সীমানা।(ঘ)প্রজার জমির মালিকের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা।(ঙ)এস্টেটের মালিকের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা।(চ)খতিয়ান প্রস্তুতের সময় খাজনা এবং ২৮,২৯,৩০ বিধি মোতাবেক নির্ধারিত খাজনা।গোচরণ ভূমি, বনভূমি ও মৎস খামারের জন্য ধারণকৃত অর্থ।(জ)যে পদ্ধতিতে খাজনা ধার্য করা হয়েছে তার বিবরণ ।(ঝ)যদি খাজনা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে তাহলে যে সময়ে ও যে যে পদক্ষেপে বৃদ্ধি পায় তার বিবরণ ।(ঞ)কৃষি কাজের উদ্দেশ্যে প্রজা কর্তৃক পানির ব্যবহার এবং পানি সরবরাহের জন্য যন্ত্রপাতি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষেণ সম্পর্কিত প্রজা ও জমির মালিকের মধ্যে অধিকার ও কর্তব্যের বিবরণ।(ট)প্রজাস্বত্ব সম্পর্কিত বিশেষ শর্ত ও তার পরিনতি ।(ঠ)পখ চলার অধিকার ও জমির সংলগ্ন অন্যান্য ইজমেন্টের অধিকার।(ড)নিজস্ব জিম হলে তার বিবরণ ।(ঢ)২৬নং ধারা অনুযায়ী নির্ধারিত ও ন্যায়সঙ্গত খাজনা।এছাড়া একটি খতিয়ানে তার নিজস্ব খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, বাট্টা নম্বর, এরিয়া নম্বর, মৌজা নম্বর ও জে, এল, নম্বর থাকে।
জমির খতিয়ান মিলবে ডিজিটাল বুথে
ডিজিটাল বুথের মনিটরে ক্লিক করলেই মিলবে জমির খতিয়ান। মালিকানা স্বত্বের গুরুত্বপূর্ণ এ সনদ জনগণের হাতের নাগালে পৌঁছে দিতে ভূমি মন্ত্রণালয় এ ধরনের সর্বাধুনিক সেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুথ স্থাপনসহ এ বিষয়ে সার্বিক সহায়তা দেবে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)। ডিসি অফিস এবং শপিংমলসহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে এই বুথ স্থাপন করা হবে।
ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভূমি ব্যবস্থাপনায় জমির খতিয়ান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জমির মালিকানা প্রমাণে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দালিলিক প্রমাণপত্র। জমি কেনাবেচা ও অধিগ্রহণের ক্ষেত্রেও এটি প্রয়োজন হয়। তাই মাঠপর্যায়ে ভূমি অফিস থেকে খতিয়ান পেতে যাতে জনগণের ভোগান্তি না হয়, সেজন্য উন্নত দেশের মতো ডিজিটাল বুথের মাধ্যমে খতিয়ান সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। যেভাবে বিদেশে ইলেকট্রিক বুথের মাধ্যমে বাস-ট্রেনের টিকিট কাটা হয়, এটিও সম্পন্ন হবে একই পদ্ধতিতে। বুথের মনিটরে নির্ধারিত বাটনে ক্লিক করে প্রথমে নিজ জেলা ও উপজেলা সিলেক্ট করতে হবে। এরপর মৌজা ও দাগ নম্বর লিখে খতিয়ানের ঘরে চাপ দিলে সংশ্লিষ্ট জমির খতিয়ানের শিট প্রিন্ট হয়ে বের হয়ে আসবে। এজন্য প্রথমে ২০ টাকা দিয়ে বুথের মনিটর ওপেন করতে হবে। অর্থাৎ খতিয়ানপ্রতি এই হারে টাকা নেওয়া হবে। যার মধ্যে ইউসিবি ব্যাংকের সার্ভিস চার্জ যুক্ত। সম্পূর্ণ ঝামেলামুক্তভাবে যে কেউ তার নিজের জমির খতিয়ান দেশের যে কোনো বুথ থেকে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন।
জানা গেছে, শিগগিরই এ বিষয়ে ইউসিবি ব্যাংকের সঙ্গে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত চুক্তি সম্পাদিত হবে। এরপর সরকারি পিপিআর (সরকারি ক্রয়বিধি) অনুসরণ করে চুক্তি অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ডিজিটাল খতিয়ান বুথের যাত্রা শুরু হবে বলে আশা করছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
খতিয়ান প্রসঙ্গে একজন কর্মকর্তা ভূমিবিডিকে বলেন, এটি হলো জমির দখল স্বত্বের প্রমাণ্যদলিল। এক বা একাধিক দাগের সম্পূর্ণ বা আংশিক ভূমি নিয়ে এক বা একাধিক ব্যক্তির নামে সরকার বা রাজস্ব অফিসার কর্তৃক যে ভূমি স্বত্ব প্রস্তুত করা হয়, তাকে খতিয়ান বলে। প্রতিটি খতিয়ানের পৃথক পরিচিতি নম্বর থাকে। খতিয়ানকে ‘রেকর্ড অব রাইটস’ বা ‘স্বত্বলিপি’ও বলা হয়।
এছাড়া খতিয়ান হচ্ছে নিখুঁত মালিকানা স্বত্ব ও দখলি স্বত্বের প্রমাণপত্র। খতিয়ানে তৌজি নম্বর, জেএল নম্বর, স্বত্বের বিবরণ, মালিকের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা উল্লেখ থাকে। খতিয়ানের অপর পৃষ্ঠায় দাগ নম্বর, প্রত্যেক দাগের উত্তরসীমা (উত্তর দাগ), ভূমির শ্রেণি, দখলকারের নাম, ভূমির পরিমাণ, হিস্যা এবং হিস্যামতে জমির পরিমাণও লেখা থাকে। উপযুক্ত কোনো আদালত কর্তৃক ভুল প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট খতিয়ান সঠিক বলে বিবেচিত হয়। এসব কারণে ভূমির খতিয়ান খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খতিয়ান বা পর্চা ৪ ধরনের হয়ে থাকে। সিএস, এসএ, আরএস খতিয়ান এবং বিএস বা মহানগর জরিপ। ১৮৭৫ থেকে ১৮৮৫ সালের বিটি অ্যাক্টের বিধান মতে, জমিদারদের অধীনে প্রণীত খতিয়ানকে সিএস এবং ‘জমিদারি অধিগ্রহণ প্রজাস্বত্ব আইন-১৯৫০’ এর ভিত্তিতে ১৯৫৬-৬২ সালে একটি জরিপ করা হয়। যার নাম এসএ খতিয়ান।
এছাড়া ১৯৬৫ সাল থেকে পরবর্তী ২০ বছরের মধ্যে সরকার সারা দেশে সংশোধনী জরিপ নামে যে সার্ভে পরিচালনা করে তাকে আরএস খতিয়ান বলে। সর্বশেষ মহানগর জরিপও সম্পন্ন হয়েছে। তবে ডিজিটাল বুথ থেকে সেবাগ্রহীতাকে সংশ্লিষ্ট জমির হালনাগাদ খতিয়ান সরবরাহ করা হবে।
সূত্র জানায়, ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার আওতায় ইতোমধ্যে সাড়ে ৪ কোটি খতিয়ান ডিজিটাল ডেটাশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি নামজারিসহ খতিয়ান অন্তর্ভুক্তির কাজও এগিয়ে চলছে। খতিয়ানের সঙ্গে জমির নামজারির বিষয়টিও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। নামজারি বা মিউটেশন ২ ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমত, মূল খতিয়ানে নাম কর্তন করে ভূমি কিংবা কারও নাম যুক্ত করে নামজারি করা। দ্বিতীয়ত, কোনো খতিয়ানের কোনো অংশীদার বা নতুন মালিক খতিয়ান হতে বের হয়ে বা খারিজ হয়ে স্বতন্ত্র খতিয়ান খুলতে চাইলে জমা ভাগ করে স্বতন্ত্র খতিয়ান খুলে নামজারি করা হয়।
Khatian: Khatian means “account”. Generally, for the purpose of protection of rights and collection of revenue, the survey department pays rent to each mouza land owner or owners’ name, father or husband’s name, address, share (part) and number of booths with their ownership marks. Etc. serial numbers with details & nbsp; Each of the list of rights or records of rights that are prepared accordingly is called a ledger and that record is called a record of rights or a record of rights (ROR). The land that is prepared is called “khatian”. Each ledger has a number. These are called ledger numbers. The khatian of each mouza starts from 1 (one). Some mouzas may have more than a few thousand. A record of the number of ledgers (ROR) of a mouza is available. History of preparation of ledgers: Chapter 4 of the State Acquisition and Tenancy Act of 1950, i.e. Sections 18 to 31 contain provisions relating to preparation of ledgers. Pursuant to sub-section 1 of section 16, the government is empowered to prepare a ledger for any district, district part or local area or to revise the ledger prepared and finally published under the Bengal Tenancy Act, 1855. Sub-section 2 states that, If empowered to revise the ledger prepared and finally published in accordance with the Bengal Tenancy Act, 1855. Sub-section 2 states that if an order has been issued for the preparation of ledger in accordance with the Bengal Tenancy Act, 1855 or the Sylhet Tenancy Act, 1938, the prepared ledger is ready. If it has not been done or if the ledger has not been finally published then those activities will be suspended and preparations have to be made in accordance with the provisions of this Act. A further stipulation has been made that if we have initiated any process of preparation of ledger in the Sylhet Tenancy Act, 1936, under the Bengal Tenancy Act, 1937, it shall be deemed to have been initiated in accordance with this chapter. Described. Section 17 contains the details of what will be included in a ledger. If the ledger is prepared or amended accordingly, he will publish the draft ledger of revenue right for the information of the public. Then if there is any objection in this regard, the revenue authority will settle it. If not satisfied with the order of the Revenue Officer, the aggrieved person will appeal to the Revenue Officer who is not below the rank of Government Settlement Officer. If he is not satisfied with his decision, an appeal can be made to a special judge under section 53 and from there an appeal can be made to the High Court division of the Supreme Court under section 115 of the Civil Procedure Code. Rule 25 of the State Acquisition Rules states that the Revenue Officer shall keep the final published ledger open for a few days at a convenient place for free inspection. > There are 4 types of ledgers in the context of Bangladesh. Namely – C, S Khatian , (2) S, A Khatian, (3) R, S Khatian, (4) B, S Khatian / City survey. (1) C, S Khatian: Government in 1940 during the British rule. The ledger prepared by the survey is called C, S. ledger. (Sample image). (2) S, A Khatian: State Acquisition and Tenancy of 1950.
ভূমি রাজস্ব আদালতে অনলাইন শুনানি শুরু
পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে ভূমি মামলার শুনানিতে অংশ নেওয়া যাবে
(ঢাকা, বুধবার, ০৯ জুন ২০২১) আজ বুধবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভূমি রাজস্ব বিষয়ক আদালতে অনলাইন শুনানি ব্যবস্থা চালুর উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, এমপি ।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এ সময় বলেন হাতের মুঠোয় ভূমিসেবা এখন আর কেবল স্লোগান নয়, বাস্তবতা। ভূমি রাজস্ব বিষয়ক আদালতে অনলাইন শুনানি ব্যবস্থা চালুর ফলে মানুষের হয়রানি ও ভোগান্তি কমানোর পাশাপাশি সময় সাশ্রয় নিশ্চিত করা যাবে।
ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, দক্ষ, স্বচ্ছ, জবাবদিহি ও জনবান্ধব ভূমি ব্যবস্থাপনার অভিলক্ষ্যকে সামনে রেখে একটি প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক ও টেকসই ভূমি রাজস্ব বিষয়ক বিচারিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যেই অনলাইন শুনানি ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে ঘরে বসেই ভূমি মামলার শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন দেশের নাগরিকরা।
এসময় সবাইকে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে রেজিস্ট্রেশন করার আহবান জানিয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী আশা প্রকাশ করেন খুব শীঘ্রই অনলাইনে এলডি ট্যাক্স সিস্টেম সহ আরও বেশ কিছু ভূমিসেবা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন। তিনি এ সময় বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর ফল আজকের বাস্তবের ডিজিটাল বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ জানান, এনআইডি নম্বর ও মোবাইল ভ্যারিফিকেশন-এর মাধ্যমে মামলার শুনানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া ভূমিমন্ত্রী পরিকল্পনা অনুযায়ী ভূমি সেবা দেওয়ার জন্য সারা দেশে বিভিন্ন শপিং মল, স্টেশন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দ্রুত কিয়স্ক বুথ স্থাপনে কথা জানান তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ মশিউর রহমান, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা কামাল, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার দাস, মুহাম্মদ সালেহউদ্দীন সহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
এছাড়া বাংলাদেশের সকল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় অংশীজন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এসময় চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাঠ পর্যায়ে ভূমি আদালতে অনলাইন শুনানির ইতিবাচক প্রভাবের ব্যাপারে তাঁদের আশার কথা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক ও টেকসই ভূমি রাজস্ব বিষয়ক ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই ভূমি সংক্রান্ত আদালতগুলোর বিচারিক কাজে অনলাইন শুনানি চালু করেছে সরকার। এ সম্পর্কিত একটি পরিপত্র জারি করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০ (২০২০ সনের ১১ নং আইন) অনুসরণ করে দেশের সকল ভূমি রাজস্ব বিষয়ক আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে বিদ্যমান ব্যবস্থার পাশাপাশি অনলাইন শুনানি নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এই সেবা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন – এই তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া অবশিষ্ট ৬১ জেলায় শুরু হচ্ছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) কর্তৃক পরিচালিত ভূমি রাজস্ব বিষয়ক, সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ও সেটেলমেন্ট অফিসার কর্তৃক পরিচালিত সেটেলমেন্ট/জরিপ সংক্রান্ত, ভূমি আপীল বোর্ড (চেয়ারম্যান ও সদস্য) পরিচালিত আপিল সংশ্লিষ্ট এসব কোয়াসি জুডিশিয়াল আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে অনলাইন শুনানি চালু করা হয়েছে।
নামজারি, জমাভাগ, বিবিধ মামলা, সেটেলমেন্ট, রেকর্ড সংশোধন, আপত্তি, আপিল ইত্যাদি ধরনের মামলা অনলাইনে শুনানি কার্যক্রমর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। অনলাইনে শুনানি ব্যবস্থাপনা কাঠামোর ওয়েবসাইট এড্রেস: https://land.gov.bd/ । এই ওয়েবসাইটে গিয়ে একজন নাগরিক তাঁর প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের মাধ্যমে অনলাইনে মামলা শুনানির জন্য অনুরোধ করতে পারবেন ।
Online hearing in the Land Revenue Court set in
Anyone can attend case hearing from anywhere
Land Minister Saifuzzaman Chowdhury, MP, inaugurated the online hearing system of the Land Revenue Court in the conference room of the land ministry on Wednesday, today.
Land Minister Saifuzzaman Chowdhury said at the time that ‘Land service in the palm of hand’ is no longer just a slogan but a reality. The introduction of online hearing system in the Land Revenue Court will reduce harassment and suffering of the people as well as save time.
The land minister also said that the online hearing system has been set up to build a technology-based modern and sustainable land revenue judicial system keeping in view the objective of an efficient, transparent, accountable, and people-oriented land management system. As a result, the fellow citizens will be able to take part in the hearing of the land case sitting at home.
Saifuzzaman Chowdhury called upon all to register to pay land development tax online and hoped that Hon’ble Prime Minister Sheikh Hasina would officially inaugurate several more land services including an online LD tax system soon. He said at the time, the result of the ‘Digital Bangladesh’ of the 2008 election manifesto is today’s real Digital Bangladesh.
Chair of the program Land Secretary Md Mustafizur Rahman PAA said the security of the case hearing will be ensured through NID number and mobile verification. He also said that Kiosks (booths) will be set up at various important places including shopping malls and stations across the country to provide land service as per the plan of the land minister.
Land Appeal Board Chairman Md. Mashiur Rahman, Land Reforms Board Chairman Md Mostafa Kamal, Director General of Land Record and Survey Department Md. Taslimul Islam NDC, Additional Secretary of the Ministry of Land Pradip Kumar Das, and Muhammad Salehuddin were present among others.
All Divisional Commissioners and Deputy Commissioners of Bangladesh and local stakeholders participated in the inaugural function through video conferencing. At the time, the Deputy Commissioner of Chapainawabganj and the President of the Chapainawabganj District Bar Association expressed their hope for the positive impact of the online hearing in the land court at the field level.
It is to be noted that the government has introduced online hearings in the judicial procedure of land courts to build a modern and sustainable land revenue system based on technology. The Ministry of Land has issued a circular in this regard. Necessary steps have been taken to ensure online hearings in addition to the existing system in the judicial proceedings of all land revenue courts in the country by following the Use of Information Technology by Court Act, 2020 (Act No. 11 of 2020). The service is being rolled out in the 61 districts of the country except in Bandarban, Rangamati & Khagrachhari Hill districts.
Land revenue related court conducted by the Assistant Commissioner (Land), Additional Deputy Commissioner (Revenue) and Additional Divisional Commissioner (Revenue), Settlement / survey related court conducted by Assistant Settlement Officer and Settlement Officer, Appellate related court conducted by Land Appeal Board (Chairman and members) — Online hearings have been introduced in the judicial proceedings of these quasi-judicial courts.
Cases such as Mutation, Consolidation/separation of holding, miscellaneous cases, settlement, record correction, objections, appeals, etc. will be included in the online hearing procedure. Online hearing management framework website address is: https://land.gov.bd/ . By visiting this website, a citizen can request an online hearing by providing the necessary information.
বন্টননামা দলিলের রেজিস্ট্রশন ফিস
১। রেজিস্ট্রেশন ফিসঃ বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত মোট মূল্য –
(ক) অনূর্ধ্ব ৩ লক্ষ টাকা হলে ৫০০ টাকা।
(খ) অনূর্ধ্ব ১০ লক্ষ টাকা হলে ৭০০ টাকা।
(গ) অনূর্ধ্ব ৩০ লক্ষ টাকা হলে ১২০০ টাকা।
(ঘ) অনূর্ধ্ব ৫০ লক্ষ টাকা হলে ১৮০০ টাকা।
(ঙ) ৫০ লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বে হলে ২০০০ টাকা।
বন্টননামা দলিলে যে কয়টি পক্ষ হবে তার মধ্যে আর্থিক হিসাবে বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে মোট মূল্য হিসাব করতে হবে।
২। স্ট্যাম্প শুল্কঃ ৫০ টাকা।
৩। ই ফিঃ ১০০ টাকা।
৪) এন ফিঃ
(i) বাংলায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ১৬ টাকা।
(ii) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
৫) এনএন ফি (নকলনবিশগনের পারিশ্রমিক)
(i) বাংলায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
(ii) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ৩৬ টাকা।
৬) ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে হলফনামা প্রিন্ট করে দলিলের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
ফিস পরিশোধ পদ্ধতিঃ
দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য যাবতীয় ফিসাদি স্থানীয় সোনালী ব্যাংক এর ট্রেজারি শাখায় জমা প্রদান করতে হবে।
১। রেজিস্ট্রেশন ফি + ই ফি + এন ফি একসাথে একটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১-২১৬১-০০০০-১৮২৬ তে জমা প্রদান করতে হবে।
২) এনএন ফি নগদে অফিসে জমা প্রদান করতে হবে।
বিঃ দ্রঃ
১। ওয়ারিশী স্থাবর সম্পত্তি ব্যতিত অন্যভাবে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত বন্টননামা দলিলের ক্ষেত্রে উৎস কর প্রযোজ্য।
২। রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ১৪৩ বি, ধারা মোতাবেক কোন রেকর্ডীয় মালিক মৃত্যুবরণ করলে তাঁর জীবিত ওয়ারিশগণ নিজেদের মধ্যে একটি বন্টননামা দলিল সম্পাদন করে রেজিস্ট্রি করবেন।
জমি বা সম্পত্তি বণ্টন কি?
ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির সীমানা চিহ্নিত করে যার যার প্রাপ্ত স্বত্ব বুঝে নেবার প্রক্রিয়াটি হচ্ছে “বণ্টন”। স্থানীয় বা পারিবারিকভাবে বণ্টনের আইনগত ভিত্তি দুর্বল। উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টন করার জন্য আইনানুগ পদ্ধতি অবলম্বন করাটাই শ্রেয়। এ জন্য সকল শরিককে এখতিয়ার সম্পন্ন দেওয়ানী আদালতে একটি মামলা করতে হয় যা বণ্টন মোকদ্দমা বা বাটোয়ারা মামলা বা পার্টিশন স্যুট নামে পরিচিত।
সম্পত্তির শরিক দুই প্রকার। (ক) উত্তরাধিকার সূত্রে শরিক বা কো-শেয়ারার বাই ইনহেরিটেন্স (খ) খরিদ সূত্রে শরিক বা কো-শেয়ারার বাই পারচেজ।
বণ্টনের মামলা করার সময় সকল শরিকগণ মামলায় পক্ষভুক্ত হতে হবে। কোন একজন শরিক বাদ থাকলে বণ্টননামা শুদ্ধ হবেনা। যদি শরিকগণ আপোষ মতে বণ্টন করতে রাজী না হন তাহলে যে কোন শরিক বণ্টনের জন্য আদালতে উক্ত সম্পত্তির বণ্টন চেয়ে মামলা করতে পারেন।
বণ্টন মামলা করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
বণ্টন মোকদ্দমা দায়েরের জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। পাশাপাশি সম্পত্তির মালিকানা সংশ্লিষ্ট সকল কাগজ পত্র যেমন ভূমি জরিপ খতিয়ান, নামজারী খতিয়ান, মালিকানা দলিল, উত্তরাধিকার সনদ ইত্যাদি সংগ্রহে রাখতে হবে।
মামলা করার জন্য কোর্ট ফি দিতে হয় ১০০ টাকা কিন্তু ছাহাম চাইলে প্রতি ছাহামের জন্য অতিরিক্ত ১০০ ফি জমা দিতে হয়।
বাটোয়ারা মামলায় সাধারণত প্রত্যেক দাগের জমি সকল সহ-শরীক এর মধ্যে বণ্টিত হয়ে থাকে ৷ বাটোয়ারা বা বণ্টন মামলায় ২ বার ২টি ডিক্রী হয় ৷
প্রাথমিক ডিক্রী: এ ডিক্রীতে হিস্যানুযায়ী বণ্টন আদেশ দেয়া হয় ৷
চূড়ান্ত ডিক্রী: এ ডিক্রীতে প্রয়োজনে আমিন কমিশন পাঠিয়ে সরেজমিনে সম্পত্তির দখল দেয়া হয় এবং সীমানা পীলার দ্বারা বিভাজন (জমির ভাগ) চিহ্নিত করার মাধ্যমে চূড়ান্ত ডিক্রী প্রচার করা হয় ৷ আদালত প্রয়োজনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ করে সম্পত্তির সীমানা চিহ্নিত করে ডিক্রী প্রাপককে সম্পত্তির দখল দেয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন ৷
বণ্টন দলিল ও বাটোয়ারা মামলা
বন্টন দলিল কি?
১৮৯৯ সালের স্ট্যাম্প এক্টের ২ (১৫) ধারায় বলা হয়েছে বণ্টন দলিল ও বণ্টক দলিল অর্থ একই ৷ যখন কোন সম্পত্তির সহ-শরিকগণ তাদের সম্পত্তি ব্যক্তিগত মালিকানায় পৃথকভাবে ভাগ করে নেয় বা নিতে সম্মত হয়ে কোন দলিল করে তাকেই বণ্টন দলিল বলে ৷
বণ্টন সম্পন্ন হওয়ার শর্ত:
•সীমানা চিহ্নিতকরণ বা পরিমাপ দ্বারা সম্পত্তির প্রকৃত বিভাজন হতে হবে;
•বন্টন তালিকায় প্রত্যেক সহ-মালিকের বরাদ্দকৃত সম্পত্তির উল্লেখ থাকতে হবে;
•তালিকায় মালিকানার বিভাজন সকল সহ-মালিক কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে;
•বন্টনের বিবরণ সুস্পষ্ট হতে হবে;
•প্রত্যেকটি তালিকা সহ-মালিকবৃন্দ কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে;
•যথাযথভাবে স্ট্যাম্প শুল্ক দিয়ে দলিলটি রেজিস্ট্রি করতে হবে;
•সহ-শরীকগণ আপোষ বন্টন করে পরবর্তীতে তাদের কেউ তা না মানলে দেওয়ানী আদালতের মাধ্যমে তা কার্যকর করা যায় ৷
বন্টননামা রেজিষ্ট্রির ফি:সকল সহ-শরিকের মধ্যে জমি হিস্যানুযায়ী (স্ট্যাম্প এর উপর) বন্টন করে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দাখিল করে বন্টননামা দলিল রেজিষ্ট্রি করা যায় ৷ এ দলিল রেজিস্ট্রির জন্য স্ট্যাম্প খরচ লাগবে স্ট্যাম্প এর গায়ে জমির যে মূল্য রেখা হবে তার ২% হারে ৷ এছাড়া অন্যান্য ফিস কবলা দলিল রেজিস্ট্রিতে যেমন লাগে অনুরূপ লাগবে ৷
বাটোয়ারা মামলা করার জন্য যা প্রয়োজন:
দেওয়ানী আদালতে বাটোয়ারা মামলা করেও নিজেদের সহায়-সম্পত্তি বন্টন করে নেয়া যায় ৷ এ জন্য যা প্রয়োজন হবে তা হলোঃ
•আবেদনের গায়ে ১০০/- টাকার কোর্ট ফি ৷
•ছাহাম চাইলে প্রতি ছাহামের জন্য ১০০/- টাকা ফি ৷
•মালিকানার সূত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ৷
•সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে হলে বংশানুক্রম ৷
বাটোয়ারা মামলায় সাধারণত প্রত্যেক দাগের জমি সকল সহ-শরীক এর মধ্যে বণ্টিত হয়ে থাকে ৷ এ মামলায় ২ বার ২টি ডিক্রী হয় ৷
প্রাথমিক ডিক্রী:এ ডিক্রীতে হিস্যানুযায়ী বন্টন আদেশ দেয়া হয় ৷
চূড়ান্ত ডিক্রী:এ ডিক্রীতে প্রয়োজনে আমিন কমিশন পাঠিয়ে সরে জমিনে সম্পত্তির দখল দেয়া হয় এবং সীমানা পীলার দ্বারা বিভাজন (জমির ভাগ) চিহ্নিত করার মাধ্যমে চূড়ান্ত ডিক্রী প্রচার করা হয় ৷ আদালত প্রয়োজনে আইন শৃংখলা বাহিনী নিয়োগ করে সম্পত্তির সীমানা চিহ্নিত করে ডিক্রী প্রাপককে সম্পত্তির দখল দেয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন ৷
১। ঘরে সম্পদ বন্ধক রেখে লোন নেওয়ার নিয়ম ভূমি মালিক www.land.gov.bd অথবা www.ldtax.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ক) মোবাইল নাম্বার খ) ন্যাশনাল আইডি কার্ড নাম্বার ও গ) জন্ম তারিখ লিখলে আপনার মোবাইল এ একটি ৬ ডিজিট এর OTP কোড যাবে।
মোবাইল এ প্রাপ্ত কোড লিখে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করলে আপনার নিবন্ধন সম্পন্ন হবে।
নিবন্ধন সম্পন্ন হলে আপনি আপনার প্রোফাইল এর জন্য একটি পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনাকে আপনার আইডিতে লগইন করতে হবে।
আইডিতে প্রবেশ করে আপনি খতিয়ান অপশনে গিয়ে খতিয়ানের তথ্য দিলে আপনার কাজ শেষ। পরবর্তী কাজ তহশিলদার করবেন।
আপনি এই আইডি থেকে পরবর্তীতে ঘরে বসেই ভূমি উন্নয়ন কর দিতে পারবেন। তহশিল অফিসে যেতে হবে না।
২। আপনি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা নিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রতিটি নিবন্ধন এর জন্য উদ্যোক্তাগন ভূমি অফিস থেকে ১০ টাকা করে পাবেন। এক্ষেত্রে নাগরিকদের কোন খরচ বহন করতে হবে না।
৩। আপনি সংশ্লিষ্ট তহশিল অফিসে গিয়ে আপনার মোবাইল, এনআইডি কার্ড নাম্বার ও জন্ম তারিখ, খতিয়ান নিয়ে গিয়েও আপনার অনলাইন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে নাগরিকদের কোন টাকা খরচ করতে হবে না।
আগামী জুলাই ২০২১ থেকে সকল ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে নেয়া হবে। সরকারের এই উদ্যোগ সফল করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

? সম্পত্তি দান করতে চাইলেঃ
♦জেনে নেওয়া যাক দান কিঃ
♦দানের উপাদানঃ
♦দান কীভাবে করতে হয়ঃ
♦দান আর উইল এক বিষয় নয়ঃ
♦করতে হবে নিবন্ধনঃ
♦দাতার মৃত্যুর পর দানপত্র রেজিস্ট্রি করা যায় কি-না?
♦দান কি বাতিল করা যায়?
♦জেনে নেওয়া যাক দান কিঃ

কোন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় এবং কোন প্রকার বিনিময় মূল্য বা প্রতিদান গ্রহণ না করে নিজের মালিকানাধীন কোন স্থাবর বা অবস্থাবর সম্পত্তি অপর ব্যক্তিকে হস্তান্তর করলে এবং সেই ব্যক্তি বা তার পক্ষে অন্য কেউ তা গ্রহণ করলে তাকে বলা হয় দান। যিনি দান করেন তাকে দাতা এবং যিনি গ্রহণ করেন তাকে দানগ্রহীতা বলা হয়। দাতার জীবদ্দশায় এবং সে যখন দান করতে সম্পূর্ণ সক্ষম সেই অবস্থায় দান গ্রহণ করতে হয়।
♦দানের উপাদানঃ
দানের মাধ্যমে দানকৃত সম্পত্তির মালিকানা অন্য ব্যক্তির বরাবরে হস্তান্তর করা হয়। দানের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ের উপর নজর দিতে হয়।
★দানের সময় সম্পত্তিতে দাতার সম্পূর্ণ মালিকানা থাকতে হবে;
★সম্পত্তির মালিকানা হস্তান্তর করতে হবে;
★দানগ্রহীতা কর্তৃক দানটি গৃহীত হতে হবে;
★দান স্বেচ্ছায় সম্পাদিত সম্পাদিত হতে হবে;
★দান বিনিময় মূল্য ছাড়া হতে হবে;
★দানকৃত সম্পত্তির অস্তিত্ব থাকতে হবে;
★যার বরাবরে দান করা হবে, তাকে দানটি গ্রহণ করতে হবে;
★কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির বরাবরে সম্পত্তি দান করতে হবে;
★দাতা সম্পত্তি হস্তান্তরের যোগ্য ব্যক্তি হবেন। নাবালক কর্তৃক সম্পত্তি দান করা হলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ দাতাকে সুস্থ মস্তিষ্কের সাবালক ব্যক্তি হতে হবে।
কোন সম্পত্তি দান করতে হলে তা অবশ্যই রেজিষ্ট্রিকৃত দলিলের মাধ্যমে করতে হবে এবং ওই দলিলে দাতা বা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি স্বাক্ষর করবেন এবং অন্ততঃ দুইজন সাক্ষী দ্বারা উক্ত দলিল সত্যায়িত করতে হবে। অস্থাবর সম্পত্তির দান রেজিষ্ট্রিকৃত দলিল বা সম্পত্তির দখল হস্তান্তরের মাধ্যমে করা যায়।
♦করিমের একটি মাত্র মেয়ে। আর কোনো সন্তান নেই তাঁর। বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন তাঁর মেয়ে। করিম তাঁর সব সম্পত্তি মেয়েকে দিয়ে যেতে চান। কিন্তু তাঁর দুই ভাই এবং ভাইয়ের ছেলেরা জীবিত। তাঁর ভাই কিংবা ভাইয়ের ছেলেরা তাঁর সম্পত্তির অংশীদার হোক, এটি তিনি চান না। এখন তিনি কী করবেন? তাঁর জীবিতাবস্থায় কি তাঁর একমাত্র মেয়েকে সম্পত্তির মালিক করে দিতে পারবেন? এর সমাধান আছে আইনে। আইন অনুযায়ী, করিম জীবিতাবস্থায় তাঁর সম্পত্তি মেয়েকে দান করে যেতে হবে। মুসলিম আইনে দানকে হেবা বলা হয়।
♦দান কীভাবে করতে হয়ঃ
সাধারণত দানের মাধ্যমে একজন সম্পত্তির মালিক তাঁর ওয়ারিশ কিংবা অন্য যে কাউকে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন। এটি আইন স্বীকৃত। সাধারণত কেনাবেচার ক্ষেত্রে দামের বিনিময় হয়, কিন্তু দানের ক্ষেত্রে এ রকম বিনিময় হয় না। দান করতে হলে দাতার এবং গ্রহীতার সম্পূর্ণ ইচ্ছা ও সম্মতি থাকতে হয়। দান বা হেবা করতে হয় নিঃস্বার্থ। তবে দান করার জন্য তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়। প্রথমত, হেবা বা দানকারীকে দানের ঘোষণা দিতে হবে অথবা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা আমমোক্তারনামা করেও ঘোষণা দিতে পারেন। দ্বিতীয়ত, যাঁকে হেবা বা দান করা হচ্ছে, তাঁর দ্বারা সম্পত্তি গ্রহণ করতে হবে। আর তৃতীয় শর্ত হচ্ছে, দানকৃত সম্পত্তির দখল সঙ্গে সঙ্গেই হস্তান্তর করা। এখন ওপরের ঘটনায় করিম তাঁর মেয়েকে সব সম্পত্তি দানপত্রের মাধ্যমে দান করে দিয়ে যেতে পারেন। দান করে দিলে তাঁর মেয়েকে ওই সম্পত্তি সঙ্গে সঙ্গে হস্তান্তর করতে হবে। নাবালক বা অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে সম্পত্তি দান করা যায়, তবে হস্তান্তর করা যাবে না, যত দিন না ও প্রাপ্তবয়স্ক হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বৈধ অভিভাবককে ওই সম্পত্তি হস্তান্তর করতে হবে। পরবর্তী সময়ে নাবালক সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর সম্পত্তি হস্তান্তর করতে হবে।
♦দান আর উইল এক বিষয় নয়ঃ
অনেকে মুসলিম আইনে দানকে উইলের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেন। মনে রাখতে হবে, উইল জীবিতাবস্থায় কার্যকর করা যায় না। একমাত্র উইল ঘোষণাকারীর মৃত্যুর পর উইল কার্যকর হয়, কিন্তু দানের ক্ষেত্রে দাতার জীবিতাবস্থায় কার্যকর হয়। তবে দানের ক্ষেত্রে জীবিতাবস্থায় সম্পত্তি হস্তান্তর করে দিতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে রাখতে হবে, মুসলিম আইনে উইলের ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারীদের অনুমতি ছাড়া সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশের বেশি কার্যকর হবে না, কিন্তু হেবা বা দান পুরো সম্পত্তিই করা যাবে।
♦করতে হবে নিবন্ধনঃ
দানের দলিল নির্ধারিত ফরমে এবং স্ট্যাম্পে করতে হবে। দানের দলিল অবশ্যই রেজিস্ট্রি করে নিতে হবে। ২০০৫ সালের ১ জুলাইয়ের পর থেকে হেবা বা দানকৃত সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
♦দাতার মৃত্যুর পর দানপত্র রেজিস্ট্রি করা যায় কি-না?

কোন কারণে যদি রেজিস্ট্রি করার আগেই দাতার মৃত্যু হয় তারপরও উক্ত দান রেজিস্ট্রি করা যাবে। তবে দাতা বেঁচে থাকতে দানগ্রহীতা কর্তৃক সম্পত্তিটি গ্রহণ করতে হবে। দান-এর শর্তসমূহ পূরণ করা হলে দাতার মৃত্যুর পরও দানপত্র রেজিস্ট্রি করা যায়।
♦দান কি বাতিল করা যায়ঃ
একবার দান করার পর এবং সম্পত্তি হস্তান্তর করার পর আদালতের ডিক্রি ছাড়া বাতিল করা যাবে না। তবে দানপত্র সম্পাদন করলেও সম্পত্তিটি হস্তান্তর না করা হলে কিছু ক্ষেত্রে দানপত্র বাতিল করা যায়। যেমন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দান, দানগ্রহীতা যদি মারা যায়, যখন দাতা কিছুর বিনিময়ে গ্রহণ করবে, সম্পত্তি যখন ধ্বংস হয়ে যাবে প্রভৃতি।
বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান ও রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ-১৯৭৯-এ বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৪ সালে স্বাক্ষর করেছে। যেখানে নারীর অধিকার ভোগ ও চর্চার প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার কথা বলা হয়েছে।
অথচ সম্পত্তিতে সমান অধিকার না থাকার কারণে হিন্দু নারী ও মেয়েরা বিভিন্ন ভাবে বঞ্চনা, বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তাদের এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে খসড়া হিন্দু উত্তরাধিকার আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে গঠিত ‘হিন্দু আইন প্রণয়নে নাগরিক উদ্যোগ’ কোয়ালিশন আইনটির খসড়া তৈরি করেছে।
বৃহস্পতিবার ওয়েবিনারে ‘খসড়া হিন্দু উত্তরাধিকার আইন-২০২০’ নিয়ে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে বক্তারা বলেন, বর্তমানে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী যদি কারো পুত্র সন্তান থাকে, তাহলে কন্যা সন্তানরা তাদের উত্তরাধিকার সম্পত্তি পায় না। তবে পুত্র না থাকলে পুত্র রয়েছে এমন কন্যারা মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির অংশ পেয়ে থাকে। যদিও নারীর অর্জিত সম্পত্তির অংশ তার পরিবারের পুরুষ সদস্যরা ঠিকই পেয়ে থাকেন। এছাড়া বর্তমান আইনে বিধবা নারীরা জীবন স্বত্বে যে সম্পত্তি পান, তা বিক্রি বা উইল করতে পারেন না। এই খসড়া আইনে নারী-পুরুষ, পুত্র বা কন্যাসন্তান, স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন অথবা বাবা-মায়ের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে এসব অসম বিভাজন করা হয়নি।
ওয়েবিনারে আইন প্রণয়নের প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এমজেএফের পরিচালক রীনা রায়, আইনটি উপস্থাপন করেন এমজেএফের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর অর্পিতা দাস। সভা প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। বক্তব্য রাখেন বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ, সংসদ সদস্য আরোমা দত্ত, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান মহিলা ঐক্য পরিষদের দিপালী চক্রবর্তী প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, প্রতিবেশী দেশ ভারত ১৯৫৬ সালে ‘হিন্দু সাকসেশন অ্যাক্ট’ পাশ করেছে এবং এই আইনের মাধ্যমে হিন্দু নারী ও পুরুষের উত্তরাধিকার সম্পত্তির সমান অংশ নিশ্চিত করেছে। পরে দেশটি দুই দফা আইনটি সংশোধন করে যুগোপযোগী করেছে।
হিন্দু উত্তরাধিকার আইন: সংস্কারের প্রস্তাব
হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংস্কারের আলোচনাটা গুরুত্বপূর্ণ। এ আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। ভারতে অনেক আগেই এ আইন হয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে আইনের সংস্কার করতে হয়। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে এই আইনের সংস্কার প্রয়োজন। এটা সম্পত্তির অধিকারের বিষয়। কেউ বলবে ঠিক আছে, কেউ হয়তো দ্বিমত পোষণ করবে।
কিন্তু এমন একটা বিষয় নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন, যেন কেউ বঞ্চিত না হয়। পরিবারের সবাই যেন তার ন্যায্য অধিকার পায়। কেউ যেন তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, সেটা নিশ্চিত হোক—আমরা এটাই চাই। অনেক বিশেষজ্ঞ আলোচক আছেন। তাঁরা এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। সবার আলোচনা থেকে নিশ্চয়ই এ আইনের সংস্কারের গ্রহণযোগ্য দিক বেরিয়ে আসবে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টনে একটি জনমত সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যখন আন্দোলন করেছি, তখন সব নারীর অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছি। আমাদের সংবিধানে নারীর সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। নারীর অধিকার, সম্মান ও মর্যাদার বিষয়টি আমরা বড় করে দেখছি। একজন মেয়ে জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই বুঝতে থাকে পরিবারে তার ভাইয়ের থেকে তার গুরুত্ব কম। প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে এটা আছে।
বাংলাদেশে হিন্দু নারীদের সম্পত্তি দেওয়া হয় না। এই রীতি চলে আসছে। কিন্তু যতটুকু জেনেছি সেটা হলো, আইনে ও ধর্মে হিন্দু নারীদের সম্পত্তি দিতে কোনো বাধা নেই। আমরা জানি, কয়েকটি সংগঠন অনেক বছর ধরে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। নারীপক্ষ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, মহিলা পরিষদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ আরও কয়েকটি সংগঠন এ বিষয়ে কাজ করছে। আমাদের কাজ ছিল জনমত সৃষ্টি করা। সমাজের তৃণমূল থেকে শুরু করে প্রায় সব শ্রেণি–পেশার মানুষের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। কিন্তু আমরা কোথাও তেমন দ্বিমত দেখিনি। তাহলে আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পর রাষ্ট্রের কাছে কেন এই দাবি করব না।
পারিবারিক ও অন্য ক্ষেত্রে কেন নারীরা সমান অধিকার পাবে না? আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেন একজন মেয়ের তার ভাইয়ের মতো অধিকার থাকবে না। হিন্দু পূর্ণাঙ্গ বিবাহ আইনের জন্য এক লাখ নারীর সই সংগ্রহ করেছিলাম। তারপরও শেষ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ হিন্দু বিবাহ আইন করতে পারিনি। তবে হিন্দু বিবাহের রেজিস্ট্রেশন পেয়েছি। এটাও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমরা চেষ্টা করেই যাব হিন্দু পূর্ণাঙ্গ বিবাহ আইন পাস করতে। এখন বাংলাদেশের সব নারীর দাবি, মা–বাবার সম্পত্তির ওপর তঁাদের সমান অধিকার থাকবে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশের হিন্দু নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন আইনের খসড়া প্রণয়নে সহায়তা করে আসছে। বিবাহ নিবন্ধন, বিবাহবিচ্ছেদ ও ভরণপোষণ—এই আইনগুলোতে নারীর অধিকার নিশ্চিত করার দাবি মূলত আসে প্রত্যন্ত অঞ্চলের হিন্দু নারীদের কাছ থেকে। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন মানবাধিকার ও নারী অধিকার সংগঠনগুলো গ্রাম পর্যায়ে যখন বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী নারীদের সঙ্গে পারিবারিক আইন অনুসারে নারীর অধিকার বিষয়টি আলোচনা করে, তখন প্রশ্ন ওঠে হিন্দু নারীদের আইন অনুযায়ী কী অধিকার রয়েছে।
২০০৭ সালে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন মানবাধিকার ও নারী অধিকার সংগঠনের সমন্বয়ে জাতীয় পর্যায় গঠন করা হয় ‘হিন্দু আইন প্রণয়নে নাগরিক উদ্যোগ’ নামের একটি কোয়ালিশন। শুরু থেকেই এই কোয়ালিশনের সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করে আসছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। গ্রাম পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই কোয়ালিশন একটি পূর্ণাঙ্গ হিন্দু বিবাহ আইনের (বিবাহ নিবন্ধন, বিবাহবিচ্ছেদ ও ভরণপোষণ) খসড়া প্রণয়ন করে। কিন্তু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় সংসদে ২০১২ সালে শুধু বিবাহ নিবন্ধন আইন প্রণয়ন করা হয়। এরপর থেকে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইনের বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা সারা দেশে মানুষকে বিবাহ নিবন্ধন সম্পর্কে সচেতন করা, বিবাহ রেজিস্ট্রারদের নিয়ে সভা ও বিবাহিত দম্পতি ও তঁার পরিবারের সদস্যদের বিবাহ নিবন্ধন করতে সহায়তা করা ও আগ্রহী করে তোলার কাজ করছি।
পরবর্তী সময়ে পূজা উদ্যাপন পরিষদ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে নারীর অধিকার বিষয়টি উল্লেখ করেন। ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল আইন সহায়তা দিবসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন যে তিনি উত্তরাধিকার আইন পরিবর্তন ও সংশোধন করতে চান, যদিও তিনি কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের কথা উল্লেখ করেননি।
আমরা অর্থাৎ ‘হিন্দু আইন প্রণয়নে নাগরিক উদ্যোগ’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণায় সাড়া দিয়ে ২০১৮ সাল থেকেই হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ শুরু করি। আইনটি প্রণয়নের লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন দেশের উত্তরাধিকার আইন পর্যালোচনা করি এবং এখানে ভারতীয় উত্তরাধিকার আইনটিকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। কোয়ালিশনের সদস্যদের মধ্যে দীর্ঘ দুই বছর আলোচনার মাধ্যমে একটি খসড়া আইন প্রণয়ন করা হয়।
খসড়া উত্তরাধিকার আইনটি নিয়ে ৭টি বিভাগে কর্মশালার আয়োজন করা হয়, যেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের আইনজীবীরা, সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা, স্থানীয় পূজা উদ্যাপন পরিষদ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের হিন্দু নেতারা অংশগ্রহণ করেন। এ আইন নিয়ে আমরা কমিউনিটিতে আলোচনা করেছি। হিন্দু নারী-পুরুষ এর পক্ষে মত দিয়েছেন। সবার মূল্যবান মতামত খসড়া আইনটিতে যুক্ত করা হয়।
বিভাগীয় পর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে খসড়া আইনটিকে আরও সমৃদ্ধ করা হয়। পরে এই খসড়া আইনটি পর্যালোচনা করে মতামত প্রদানের জন্য সম্মানিত বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিনহাকে প্রদান করা হয় এবং তঁাদের মতামত খসড়া আইনটিতে যুক্ত করা হয়।
খসড়া হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে সব উত্তরাধিকারীর মধ্যে সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে সম–অধিকারের নীতি অনুসরণ করা হয়েছে। কারণ, মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা ও সিডও দলিলের নীতির ভিত্তিতেই বিষয়টি সব সময় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা পরিষদ নব্বইয়ের দশক থেকেই ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড প্রণয়নের জন্য দাবি জানিয়ে এসেছে, যেখানে পারিবারিক আইনে সব ধর্মের সব নারীর কথাই বলা হয়েছে। যেহেতু এই আইনের প্রস্তাবটি এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ হয়নি, তাই হিন্দু নারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই কোয়ালিশন হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের পরিবর্তন এবং নারীর সম–অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছে খসড়া হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে।
নারীর উত্তরাধিকার শুধুই সম্পত্তির অধিকার বা অর্থনৈতিক অধিকার নয়। উত্তরাধিকার নারীর পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর অবস্থান সুদৃঢ় করে। এখানে সম্পত্তির পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে। বর্তমানে পরিবারে নারীর প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ নেই, আমরা প্রত্যাশা করি এই আইন প্রণয়নের মাধ্যমে তা প্রতিষ্ঠিত হবে। আজকের আলোচনায় হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংস্কারের খসড়া উপস্থাপন করা হলো
ভারতে প্রবর্তিত ১৯৫৬ সালের আইন ২০০৭ সালে আরও বিকশিত হয়েছে। ভারতে বর্তমানে ক্ষমতাসীন বিজেপি এটাকে শুধু মেনে নিয়েছে এমন নয়, এটাকে কার্যকর করার চেষ্টা করছে। নেপালে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল কংগ্রেস ও কমিউনিস্ট পার্টি। সেখানকার প্রেসিডেন্ট নারী। নেপালে নারীর অধিকার থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু যখন সন্তানের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টনের বিষয় এসেছে, তখন বলা হয়েছে যে যিনি সম্পত্তির মালিক, তাঁর ওপর নির্ভর করবে তিনি কীভাবে সম্পত্তি বণ্টন করবেন। কিন্তু এমন এক সময় ছিল যখন নেপালে এগুলো আলোচনা করা যেত না।
সবাই হিন্দু আইন সংস্কারের বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন, এ জন্য আমি আনন্দিত। হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের খসড়া নিয়ে রিনা রায় তাঁর আলোচনায় বিস্তারিত বলেছেন। এটা আইন মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হবে। কয়েক দশক ধরে এটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আলোচনার অগ্রগতিও হয়েছে। একটা আধুনিক রাষ্ট্রে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত হবে, এটাই নিয়ম। আধুনিক গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে তা–ই হয়েছে। একসময় নারীর ভোটাধিকার ছিল না। সেটি অর্জিত হয়েছে। আমাদেরও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে হবে।
অন্য সম্প্রদায়কে টেনে এনে বিভেদ সৃষ্টি করার দরকার নেই। গণতান্ত্রিক দেশগুলো থেকে এই শিক্ষাই গ্রহণ করতে হবে যে গণতন্ত্রকেই আমাদের বিকশিত করতে হবে। আমি বাংলাদেশে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিত্ব করি। বাংলাদেশে পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি ছিলাম। সংগঠনে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। রিনা রায় বলেছেন, নিঃসন্তান দম্পতির ক্ষেত্রে একজন মারা গেলে আরেকজনের ওপর অধিকার জন্মাবে। এটা তো স্বাভাবিক। এটা নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। দুজনে মারা গেলে তঁাদের সন্তানেরা কীভাবে পাবে, সেটাই আলোচনা।
একটা বিষয় এসেছে ধর্মান্তরিত হলে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষও পরিবারে যুক্ত হবে। নতুন ঝামেলা হবে। এটা নিজেদের মধ্যেও হতে পারে। আমি মনে করি, জনমত গঠনের বিষয়টি চালিয়ে যেতে হবে। ভারতের পশ্চিম বাংলায় নারী পুরোহিত আছেন। এ বিষয়গুলো আরও বেশি করে সমানে আনতে হবে।
২০১৮ সালে আমার স্ত্রী মারা যায়। আমার মেয়ে মুখাগ্নি করতে গেলে কেউ কেউ নিষেধ করার চেষ্টা করেছেন। তখন আমি বললাম, ভারত ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও সুজাতা কৈরালের বাবা মারা গেলে তঁারাই তো মুখাগ্নি করেন। শ্রাদ্ধ করেন। তখন তঁারা আর কিছু বলেননি। হিন্দু বিয়েতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক না হলেও এটা সমাজে প্রভাব ফেলছে।
আমরা মুখে যেটা বলি, সেটা বিশ্বাস করে আমাদের কাজ করতে হবে। আন্দোলনটা চালিয়ে যেতে হবে। নিশ্চয়ই অচিরেই সফলতা আসবে। ভারত যদি সম–অধিকারের আইন করতে পারে, তাহলে বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য করতে অসুবিধা কোথায়? এ বিষয়ে আমার ফোরামগুলো থেকে যেন ইতিবাচক মত দেয়, সে জন্য চেষ্টা করব।
আমি জনাব সুভাষ ঘোষের সঙ্গে একমত যে কোনো ছেলে বা মেয়ে যদি ধর্মান্তরিত হয়, তাহলে সে তার মা–বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে। আইনগতভাবে উত্তরাধিকার সম্পত্তির ওপর তাদের কোনো অধিকার থাকবে না। তাহলে মনে হয়, হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকের মধ্যে যে ভীতি রয়েছে, সেটা দূর হবে।
আমি দশম সংসদে বিষয়টি তুলেছিলাম। একই মায়ের গর্ভজাত ছেলেসন্তান সম্পত্তির অধিকার পাচ্ছে, মেয়েসন্তান পাচ্ছে না। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়েরা মা–বাবা, স্বামী, সন্তান কারও সম্পত্তির অধিকার পাচ্ছে না। এই অমানবিক বিষয় দূর করা উচিত। আমি মনে করি, উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে ছেলে ও মেয়ের সমান অধিকার থাকতে হবে। আইনের সংশোধন করে সন্তানদের সম–অধিকার দেওয়া হোক।
আমি মনে করি, আপনারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। শতাব্দী ধরে একটি জনগোষ্ঠী তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে, এটা হতে পারে না।
আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকের যুক্তি হলো, এই আইন করা হলে ধর্মান্তরিত সন্তানের সংখ্যা অনেক বেড়ে যেতে পারে। এভাবে তাদের সম্পত্তি বেহাত হতে পারে। এ ধারণা অমূলক। আমার মনে হয়েছে, বিষয়টি আইন দিয়ে রোধ করা সম্ভব। আমি সংসদে এটি নিয়ে বিল আনার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা আর হয়নি।
দেশে আজ বিভিন্নভাবে নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে। সম্পত্তির অধিকার না থাকায় হিন্দু নারীদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে অন্যের ওপর নির্ভর করে জীবন কাটাতে হয়। এ জন্য অনেক সময় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়ে। তাই হিন্দু উত্তরাধিকার আইন পরিবর্তন করা উচিত। সম–অধিকার দেওয়া উচিত। তবে আইনে এমন একটি বন্ধন থাকবে, কোনো কারণে যদি কোনো সন্তান ধর্মান্তরিত হয়, তাহলে সে তার উত্তরাধিকার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে। উত্তরাধিকার হিসেবে সে কোনো সম্পত্তির অধিকার পাবে না। হিন্দু আইন সংস্কারের প্রতি আমার সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি।
হিন্দু আইন সংস্কারের বিষয়টি ১৯৮৩ সালে আমাদের কাছে খুব জোরালোভাবে আসে। অন্যান্য সম্প্রদায়ের নারীর অধিকার কী আছে, আমরা অনেকেই সেটা জানতাম না। সব সময় একটা বিষয় শুনে এসেছি যে হিন্দু প্রভাবশালীদের জন্য এ বিষয়টা আলোচনা করা সম্ভব হয় না। সে বাধা এত দিনে আমরা অতিক্রম করতে পেরেছি। আমাদের ভাবতে হবে, সত্যি যদি আমরা নারীর অধিকার চাই, তাহলে আমাদের এ আইন করতে হবে।
আজকের উপস্থাপনার সঙ্গে আমরা নারীপক্ষ গভীরভাবে জড়িত। উপস্থাপনায় এসেছে, একজন অভিভাবক সর্বোচ্চ তাঁর অর্ধেক সম্পত্তি উইল করতে পারবেন। কিন্তু কেউ যদি সম্পূর্ণ সম্পত্তি উইল করতে চান, তখন একটা জটিলতা হতে পারে। এ বিষয় ভাবা প্রয়োজন। কোনো উত্তরাধিকারী যদি দেশান্তরি হন, সে ক্ষেত্রে কী হবে। এসব বিষয়ে আরও গুরুত্ব দিয়ে ভাবা জরুরি।
সারা দেশে নারীপক্ষের ৫৫০টি নেটওয়ার্ক আছে। তাদের মাধ্যমে আমরা কাজ করছি। তারা এ বিষয়ে সচেতন। আমাদের হিন্দু নেতাদের আরও জোরালো ভূমিকা আশা করছি। তাঁরা যেন এ বিষয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন।
প্রস্তাবিত খসড়া নিয়ে আমাদের দ্রুত আইনমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। তবে এ আইন কখন থেকে কার্যকর হবে, সেটাও ভাবতে হবে। আশা রাখি, এ আইন অবশ্যই বাস্তবায়িত হতে হবে।