প্রবাস থেকে জমি বিক্রয়ের পদ্ধতি

Capture 1
Spread the love

অনেকেরই প্রবাসে থাকা কালীন দেশের জমি বিক্রয়ের প্রয়োজন হয়। আবার দেখা যায় এজমালি সম্পত্তি কোন অংশীদার প্রবাসে থাকায় জমি বিক্রয়ে সমস্যা হচ্ছে। এসব সমস্যা সহজেই সমাধান করা যায়। আইন অনুযায়ী আপনি প্রবাসে থেকেই দেশের সম্পত্তি বিক্রয়ের করতে পারবেন। এ জন্য আপনাকে যা করতে হবে তা নিম্নরূপ-

১. একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর নিকট গিয়ে জমি বিক্রয়ের পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল তৈরী করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে সকল তথ্যের প্রয়োজন হবে।

  • পাওয়ার দাতার নাম ঠিকানার বিস্তারিত বিবরন
  • পাওয়ার গ্রহীতার নাম ঠিকানার বিস্তারিত বিবরন
  • জমির পরিমাণ ও অবস্থানের বিস্তারিত বিবরন

২. পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল তৈরী হলে ডাকযোগে দলিল ও পাওয়ার গ্রহীতার পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও NID এর কপি পাওয়ার দাতার প্রবাসী ঠিকানায় প্রেরণ করতে হবে।

৩. ডাক প্রাপ্তির পর পাওয়ার দাতাকে তার নিজের পাসপোর্ট সাইজের ১ কপি ছবি ও NID এর কপি সহ প্রেরিত দলিল, গ্রহীতার ছবি ও NID এর কপি নিয়ে অবস্থানরত দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে যেতে হবে।


৪. দূতাবাসে গিয়ে পাওয়ার দাতা একজন কাউন্সিলরের সামনে দলিলে স্বাক্ষর করবেন। উক্ত কাউন্সিলর ও দলিলে স্বাক্ষর করবেন। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে পাওয়ার দাতা দলিলটি ডাকযোগে দেশে প্রেরণ করবেন।

৫. পাওয়ার গ্রহীতা ডাক হতে দলিলটি গ্রহণ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উক্ত দলিলটি পরীক্ষা করে সত্যায়িত করে দিবেন।


৬. এরপর পাওয়ার গ্রহীতাকে দলিলটি নিয়ে ডি.সি. অফিসের রাজস্ব কার্যালয়ে যেতে হবে। সেখানে দলিলটিতে আঠা যুক্ত প্রয়োজনীয় স্টম্প লাগানো হবে। এবং একটি কপি সংশ্লিষ্ট সাব রেজিস্ট্রি অফিসে প্রেরণ করা হবে।

৭. এখন পাওয়ার গ্রহীতা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে জমিটি পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিলের শর্তানুযায়ী হস্তান্তর করতে পারবে।

পাওয়ার অব এ্যার্টনীর শর্ত অনুসারে পাওয়ার গ্রহীতা কতৃক সকল ধরনের হস্তান্তর এমন ভাবে কার্যকর হবে যেন হস্তান্তরটি পাওয়ার দাতা কর্তৃক সম্পন্ন হয়েছে

আমমোক্তারনামা বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি কি? উক্ত পাওয়ার দেবার আগে আপনাকে প্রথমে জেনে নিতে হবে এই পাওয়ার কি বা কীভাবে দিতে হয়। আইনের ভাষায় একে বলা হয় আমমোক্তারনামা বা Power Of Attorney (আমমোক্তারনামা একটি আইনগত দলিল)। স্ট্যাম্প অ্যাক্ট ১৮৯৯-এর ২(২১) উপ-ধারা অনুসারে যে দলিল দিয়ে কোনো ব্যক্তিকে অন্য কোনো ব্যক্তির পক্ষে হাজির হয়ে যেসব কার্যাবলি সম্পাদন করার ক্ষমতা দেয়া হয় তাকে আমমোক্তারনামা দলিল বলে। যাকে আমমোক্তার নিয়োগ করা হলো তিনি মূল মালিকের পক্ষে সম্পত্তির দান, বিক্রি, হস্তান্তর, রক্ষণাবেক্ষণ, বন্ধক রাখা, খাজনা প্রদান ইত্যাদি করে থাকেন। তবে আমমোক্তারনামা দলিলে স্পষ্ট করে লেখা থাকতে হবে যাকে পাওয়ার বা ক্ষমতা দেয়া হলো তিনি কী কী করতে পারবেন, কিংবা কি কি করতে পারবেন না।

সাধারণত আমমোক্তারনামা দুই প্রকার। ক) জেনারেল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বা সাধারণ আমমোক্তারনামা এবং খ) স্পেশাল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বা খাস আমমোক্তারনামা

জেনারেল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বা সাধারণ আমমোক্তারনামা যে মোক্তারনামা মোক্তার দাতার পক্ষে জমি-জমা ক্রয়, বিক্রয় রক্ষণা-বেক্ষণ, চুক্তিপত্র করা, মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনা করাসহ যাবতীয় কাজের ক্ষমতা মোক্তারকে দেয়া হয় তাকে জেনারেল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বলে।

স্পেশাল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বা খাস আমমোক্তারনামা অন্যদিকে একটি নির্দিষ্ট বা কোনো বিশেষ কাজের ক্ষমতা মোক্তারকে দিয়ে তৈরি মোক্তরনামা হলো স্পেশাল পাওয়ার অব।

তবে ২০১২ সালের পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইন অনুসারে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দুই প্রকার। (১) প্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি এবং (২) অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি।

অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি স্থাবর সম্পত্তি বিক্রির উদ্দেশ্যে, বিক্রয়চুক্তি সম্পাদনের বা ঋণ নেয়ার বিপরীতে স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক প্রদানের জন্য প্রদত্ত পাওয়ার অব অ্যাটর্নিকে ‘অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বলে। এই পাওয়ার অব অ্যাটর্নিতে মোক্তারের ক্ষমতা মূল মালিকের মতোই থাকে। অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নির ক্ষেত্রে মোক্তারের মৃত্যু হলে বা আইনগতভাবে দলিল সম্পাদনে অক্ষম হলে ওই মৃত বা অক্ষম মোক্তারের বৈধ ওয়ারিশ বা স্থলবর্তীর ওপর দলিল থেকে সৃষ্ট দায় বা অধিকার স্বয়ংক্রিয়ভাবে থাকবে।

আরও নিউজ পেতে ক্লিক করুন 

বায়া দলিল কি?


Spread the love

Join The Discussion

Compare listings

Compare