নাগরিক ভূমি সেবায় জেলাভিত্তিক এজেন্ট নিয়োগ – ভূমিমন্ত্রী/
/গত ৮ মাসে ডিজিটাল ভূমিসেবা সিস্টেম থেকে সরকারি কোষাগারে ৫৫০ কোটি টাকা জমা/
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন জেলাভিত্তিক এজেন্ট নিয়োগ করে নাগরিকগণকে ভূমিসেবা দেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এজন্য প্রাইভেট এজেন্টশীপ নীতিমালাও প্রণয়ন করা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ’ এবং ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’-এর উদ্যোগে আয়োজিত রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ ‘ভূমি ব্যবস্থাপনায় সাম্প্রতিক উদ্যোগ ও নাগরিক অধিকার’ শীর্ষক এক নীতি সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এই কথা বলেন। ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ মুখ্য বক্তা হিসেবে এই সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী আরো বলেন, আমাদের দেশের বাস্তবতায় ডিজিটাল সাক্ষরতা এখনও শতভাগ নয়। এজন্য সবার পক্ষে অনলাইনে ডিজিটাল সার্ভিস গ্রহণ সম্ভব নয়। এজন্য সবদিক বিবেচনা করে, সবার কথা মাথায় রেখে আমরা ভূমি সেবা এজেন্ট নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মন্ত্রী আরো জানান, ভূমি ভবনে একটি নাগরিক সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে (বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে কাজ করছে এবং পূর্ণাঙ্গ স্থাপন হলে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন)। পর্যায়ক্রমে জেলা পর্যায়ে এ সেবা সম্প্রসারণ করা হবে। কলসেন্টার ছাড়াও এসব সেবা কেন্দ্রে নাগরিকরা সরাসরি গিয়ে ভূমিসেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়া, প্রাইভেট এজেন্ট কার্যক্রম মনিটরের জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে এবং উপজেলা ও জেলা ভিত্তিক নাগরিক কমিটি করার কথাও বিবেচনায় রয়েছে।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমরা ভূমিসেবা সিস্টেম এমনভাবে উন্নয়ন করছি যেন দুর্নীতির সুযোগ না থাকে। এ প্রেক্ষিতে তিনি উন্নত দেশের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সিস্টেমের করণে ওখানে অনেকের দুর্নীতি করার সুযোগ থাকেনা। মন্ত্রী বলেন, মাঠ পর্যায়ের ভূমি অফিসের কাজ নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। কোন উপজেলায়, কোন সার্কেলে কতদিনে ফাইল নিষ্পত্তি হচ্ছে – আমরা তা দেখছি এবং ফিডব্যাক নিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে মনিটরিং কার্যক্রম অধিক নিবিড় করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমি মনে ভূমি মন্ত্রণালয় অন্যতম ‘পারফর্মিং মিনিস্ট্রি’। ‘স্মার্ট মিনিস্ট্রির’ কথা মাথায় রেখে আমরা কাজ করছি। মানুষ ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশনের সুফল পাওয়া শুরু করেছে।
অনুষ্ঠানের মুখ্য বক্তা ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ অনুষ্ঠানে ভূমি ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিয়ে একটি সচিত্র উপস্থাপন করেন। তিনি এসময় জানান, সমগ্র বাংলাদেশের ১ লক্ষ ৩৮হাজার ম্যাপ ডিজিটাইজ করাসহ স্যাটেলাইট ইমেজ ক্রয় করা হচ্ছে। এই ম্যাপের উপরে স্যাটেলাইট ইমেজ বসিয়ে প্লট-ভিত্তিক জমির শ্রেণীর একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরি হচ্ছে। প্রায় ১০ হাজার ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ ই-নামজারি সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত হচ্ছে। নামজারির সাথে-সাথে এই ডিজিটাল ম্যাপ ও খতিয়ান স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংশোধিত হতে থাকবে। ভূমি সেবা অ্যাপ থেকে নাগরিকগণ তাদের জমির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ, অবস্থান ও পরিমাপ তাৎক্ষণিকভাবে পেয়ে যাবেন।
সচিব আরও জানান অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর, ই-নামজারি, খতিয়ান ও ম্যাপসহ অন্যান্য খাত থেকে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে মাত্র ৮ মাসে ডিজিটাল ভূমিসেবা সিস্টেম থেকে সরকারি কোষাগারে প্রেরণ করা হয়েছে ৫৫০ কোটি টাকার বেশি অর্থ। অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর চালু হবার পর গত ২০২১-এর সেপ্টেম্বর থেকে এই পর্যন্ত শুধু অনলাইনে রাজস্ব সংগ্রহের হার প্রায় ৪৭০ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ এ আদায়ের অগ্রগতি ৩২৬%। গত ২০ ফেব্রুয়ারি, এক দিনেই আদায় হয়েছে সাড়ে ৩ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব। ২০২১ সাল থেকে এই পর্যন্ত ই-নামজারি ফি আদায় হয়েছে ২০০ কোটি টাকার বেশি। প্রতিদিন গড়ে আদায় হচ্ছে ১ কোটি টাকা।
এসময়, অনুষ্ঠানের বিশেষ বক্তা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন ভূমি ব্যবস্থাপনায় সংস্কার কার্যক্রম আমাদের ধারনার চেয়ে বেশি হয়েছে। তিনি একে ‘ইন্সপায়ারিং ইনিশিয়েটিভ’ (অনুপ্রেরণামূলক উদ্যোগ) হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, আরও সামনের দিকে অগ্রসর হবার সময় আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তার না করতে পারে।
আজকের অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ‘এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ এর সভাপতি’ এবং ‘সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ ফেলো’ ড দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য স্মার্ট বাংলাদেশ উদ্যোগে বর্ষা ফলক (স্পিয়ার হেড) হিসেবে কাজ করতে পারে ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রম। তিনি মনে করেন এই কার্যক্রমে নাগরিক সম্প্রদায়কে সহযোগী হিসেবে থাকা প্রয়োজন।
ভূমি ব্যবস্থাপনা ও সেবা সংক্রান্ত নতুন উদ্যোগসমূহ সাধারণ মানুষ বিশেষ করে বাংলাদেশের অসুবিধাগ্রস্ত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে নিয়ে যেতে এই সংলাপ আয়োজন করা হয়।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, এটুআই এর ন্যাশনাল পোর্টাল ইমপ্লিমেন্টেশন স্পেশালিষ্ট উপসচিব মোহাম্মদ শামসুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহফুজ বিন ইউসুফ এবং অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এর প্রধান সমন্বয়ক রফিক আহমেদ সিরাজী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে সরাসরি ও অনলাইনে উপস্থিত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিক অনুষ্ঠানে তাঁদের কথা জানান এবং প্রশ্ন করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ওঁরাও, বাঙ্গালীসহ দেশের বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত ব্যক্তিবর্গ এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
/Appointment of district-based agent in Citizen Land Service – Land Minister/
/Tk 550 crore deposited in government treasury from digital land service system in last 8 months/
The Land Minister Saifuzzaman Chowdhury has said we have taken the initiative of appointing district-based agents to provide land services to the citizens. Private agent-ship policies are also being developed to support this initiative – he added.
Land Minister Saifuzzaman Chowdhury speaking as the chief guest at a policy dialogue titled ‘Recent Initiatives in Land Management and Citizen Rights’ at the BRAC Center Inn located in Mohakhali of the capital organized by the NGO ‘Citizen’s Platform for SDGs, Bangladesh’ and ‘Manusher Jonno Foundation’ on Thursday, today. Land Secretary Md Mustafizur Rahman PAA was present as the keynote speaker.
Saifuzzaman Chowdhury emphasized that digital literacy in the country is not yet at 100%, and therefore not everyone can access digital services online. As a result, taking all factors into account and keeping everyone in mind, the decision has been made to appoint land service agents.
The minister also said that a Citizen Service Center is being set up in Bhumi Bhavan (Currently working on a trial basis and will be inaugurated by the PM when fully operational). This service will be expanded to the district level gradually. In addition to the call center, citizens can also go directly to these service centers to receive land services. Apart from this, CCTV cameras will be installed to monitor private agent activities, and Upazila and district-based citizen committees are also being considered.
Saifuzzaman Chowdhury emphasized the government’s commitment to developing a land service system that minimizes the opportunity for corruption. He cited the examples of developed countries, where the system itself prevents corruption, and expressed the hope that a similar result can be achieved in their country. The minister said that the work of the field-level land office is being monitored regularly. “We are monitoring whether files are being disposed of properly in the upazila and circle land offices and taking regular feedback. Monitoring activities will be intensified gradually.”
The minister said I think the land ministry is one of the ‘performing ministries’. We are working with ‘Smart Ministry’ in mind. People have started getting the benefits of the digitalization of land services.
The keynote speaker of the program, Land Secretary Md Mustafizur Rahman PAA, presented an overview of land management initiatives at the program. He said that 1 lakh 38 thousand maps of the entire Bangladesh are being digitized and satellite images are being purchased. A database of plot-based land classes is being created by overlaying satellite images on these maps. About 10,000 digital Mauza maps are being linked to the e-mutation system. This digital map and Khaitan (Record ofRights) will be updated automatically along with the mutation (Namzari). With the help of the Bhumi Seba app, citizens can instantly access information such as the length, width, location, and measurement of their land.
The secretary also disclosed that the digital land service system has contributed more than Taka 550 crore to the government treasury in just eight months of the financial year 2022-23 through various sectors, including land development tax, e-Mutation, Khaitan, and map. Since the introduction of online land development tax in September 2021, the online revenue collection rate alone has reached around Tk 470 crore, showing a remarkable 326% progress in 2022-23. On February 20, the revenue collection figure reached more than TK 3.5 crore in a single day. Moreover, the e-Mutation fee has generated over Tk 200 crore from 2021 till now, with an average daily collection of Taka 1 crore from the e-mutation system.
During the event, the special speaker, Executive Director of Transparency International Bangladesh Dr. Iftekhar Zaman, noted that the reform program in land management has exceeded their initial expectations, describing it as an ‘inspiring initiative’. He emphasized the need to prevent vested interest groups from gaining influence as they move forward with the reform program.
During the event, the moderator, President of Citizen’s Platform for SDGs, Bangladesh, and Fellow of Centre for Policy Dialogue, Dr. Debapriya Bhattacharya, expressed his opinion that the land reform initiative could be the spearhead of the Smart Bangladesh initiative. He also stressed the importance of civil society’s involvement as a partner in this process.
The purpose of the dialogue was to introduce new initiatives related to land management and services to the common people, especially disadvantaged and marginalized communities in Bangladesh.
Manusher Jonno Foundation Executive Director Shaheen Anam, A2I National Portal Implementation Specialist Deputy Secretary Mohammad Shamsuzzaman, Supreme Court Advocate Mahfuz Bin Yusuf and Association for Land Reform Chief Coordinator Rafiq Ahmed Sirazi among others spoke at the event.
Bangladeshi citizens from various parts of the country participated in the program both in-person and online, asking questions and engaging in discussions.
Senior officials from the Ministry of Land, various non-governmental development organizations, civil society representatives, individuals from various ethnic groups including Oraon and Bengalis, as well as media personalities attended the event.