ভূমিবিডিতে স্বাগতম

ভূমি সম্পর্কিত সকল তথ্য পেতে অনুসন্ধান করুন

ভূমিবিডির তথ্য সেবায় আপনাকে স্বাগতম

অনলাইনে ভূমি রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কিত তথ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে এই প্ল্যাটফর্ম পস্তুত করা হয়েছে। প্ল্যাটফর্মটিতে রয়েছে  মৌজা, দলিল, উত্তরাধিকার, খতিয়ান, জমি সম্পর্কিত আইন ও বিধিমালা।

Recent Posts

দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশব্যাপী ভূমি অফিসে ঝটিকা পরিদর্শন বৃদ্ধি

দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশব্যাপী অভিযোগপ্রাপ্ত ভূমি অফিসে ঝটিকা পরিদর্শন (surprise visit) বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

আজ রবিবার সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি সম্পর্কিত বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভূমিমন্ত্রী এ কথা জানান। এসময় ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, দুর্নীতিমুক্ত ভূমিসেবা গড়তে আমরা আরও কঠোর হবো। মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এত কার্যক্রম গ্রহণ করার পরও ভূমিসেবা গ্রহীতাদের থেকে প্রায়ই অভিযোগ আসছে, যা সত্যিই দুঃখজনক।

এসময় দক্ষ, স্বচ্ছ, জনবান্ধব ও জবাবদিহিমূলক ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে না পারলে সার্বিকভাবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনারবাংলা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবেনা বলে মন্তব্য করেন ভূমিমন্ত্রী। “এজন্য জাতীয় স্বার্থে দুর্নীতিমুক্ত ভূমিসেবা নিশ্চিতে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে” – তিনি যোগ বলেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রয়োজনে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়মিত ‘কাউন্সেলিং’ ও ‘রিফ্রেসার্স ট্রেনিং’ করানো হবে।

ভূমি অফিসে সারপ্রাইজ ভিজিটের সময় ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সাথে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি থাকার গুরুত্বের উপর জোর দেন ভূমিমন্ত্রী। এছাড়া, মাঠ পর্যায়ের জরিপ অফিসগুলো পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক (কালেক্টর) ও বিভাগীয় কমিশনারদের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুরোধ পত্র পাঠানো হবে বলে জানান সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

সভাপতির বক্তব্যে ভূমি সচিব বিভাগীয় কমিশনারদের জানান, চাহিদার ভিত্তিতে ভূমি অফিসের সংস্কার পরিকল্পনা নেওয়া হবে যেন সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার হয়। তিনি আরও জানান, তহসিলদার (ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা) থেকে কানুনগো (এসিল্যান্ডের অধীনে উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা) পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ভূমি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ছাড়া দায়িত্ব দেওয়া হবেনা।

নতুন হাট-বাজার সৃষ্টিতে প্রয়োজনে ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি লীজ দেওয়াতে নারীদের অগ্রাধিকার প্রদান, বড় ধরণের দুর্নীতিগুলো (মামলা) কেস-স্টাডি হিসেবে প্রশিক্ষণে পাঠদান, দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তকৃত ভূমির হস্তান্তর ফি কমানো সহ বিভিন্ন প্রস্তাবনা উপস্থাপন করে মতামত প্রকাশ করেন সভায় উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারবৃন্দ।

সভায় উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারগণ হচ্ছেন – মোঃ খলিলুর রহমান (ঢাকা), মোঃ কামরুল হাসান এনডিসি (চট্টগ্রাম), ড. মোঃ হুমায়ুন কবীর (রাজশাহী), মো: ইসমাইল হোসেন এনডিসি (খুলনা), মো: সাইফুল হাসান বাদল (বরিশাল), মোঃ খলিলুর রহমান (সিলেট), মোঃ আবদুল ওয়াহাব ভূঞা (রংপুর), মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস (ময়মনসিংহ)। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, যেকোনো ভূমিসেবা গ্রহীতা কর্ম-দিবসে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভূমিসেবা হটলাইন ১৬১২২ নম্বরে কল করে কিংবা info@minland.gov.bd ঠিকানায় ইমেইল করে তাঁদের মতামত, প্রতিক্রিয়া, অভিযোগ কিংবা পরামর্শ জানাতে পারেন।

//Surprise inspections to be stepped up at land offices across the country to check corruption//

Land Minister Saifuzzaman Chowdhury said surprise inspections (surprise visits) will be stepped up to prevent corruption in land offices across the country against which complaints have been received.

The land minister made the remarks while addressing the Divisional Commissioners coordination meeting on the land and land ministry as the chief guest at the conference room of the land ministry at the secretariat on Sunday. Land Secretary Md Mustafizur Rahman PAA presided over the meeting.

The land minister further said, “We will be stricter in building corruption-free land services.” Despite taking so much action at the ministry level, complaints are often coming from land service recipients, which is regrettable.

It will not be possible to implement Sonar Bangla, dreamt by Bangabandhu if efficient, transparent, people-friendly, and accountable land services are not ensured – the land minister said. “Therefore, more stringent steps will be taken to ensure corruption-free land services for the national interest,” he added.

The Minister further said that, if necessary, regular ‘counseling’ and ‘refresher training’ of field level officers will be conducted.

The Land Minister emphasized the importance of having a representative of the concerned Divisional Commissioner with the representative of the Ministry of Land during the surprise inspection at the Land Office. Besides, a request letter will be sent to the Cabinet Division to give the responsibility of inspecting the field level survey offices to the Deputy Commissioner (collector) and Divisional Commissioners, said, Saifuzzaman Chowdhury.

In his speech, the land secretary told the Divisional Commissioners that a plan would be taken to reform the land office based on demand for efficient uses of resources. He further said that no responsibility will be given to the Land Officers promoted from Tehsildar (Union Land Assistant Officer) to Kanungo (Officer of Upazila Land Office under AC Land) without training.

The Divisional Commissioners expressed their views by presenting various proposals including the acquisition of land to establish Hat-Bazar, giving priority to women in leasing land, Teaching Large-scale corruption incidents in the training as case-study, Reduction of a transfer fee of long-term leased land.

The Divisional Commissioners present at the meeting were – Md. Khalilur Rahman (Dhaka), Md. Kamrul Hasan NDC (Chittagong), Dr. Md. Humayun Kabir (Rajshahi), Md. Ismiel Hossain NDC (Khulna), Md. Saiful Hassan Badal (Barisal), Md. Khalilur Rahman (Sylhet), Md. Abdul Wahhab Bhuiyan (Rangpur), Md. Shafiqur Reza Biswas (Mymensingh). Besides, senior officials of the ministry were present at the coordination meeting of the Divisional Commissioners.

It is to be noted that any land service recipient can call the land service hotline 16122 from 9 am to 5 pm on working days or email at info@minland.gov.bd to give their views, feedback, complaints, or suggestions.

জমি নিয়ে বিরোধ হলে কী করবেন ?

জমি জমাকে কেন্দ্র করে যে কোনো সময় বিরোধ দেখা দিতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, নিজের কেনা জমি অন্য কেউ দখল করে মালিকানা দাবি করছে কিংবা জাল দলিল তৈরি করে জমির দখল নিতে চায়। আদালতে মিথ্যা মামলাও ঠুকে দেয়। কিন্তু একটু সচেতন হলেই এ ঝামেলা থেকে অনেকটাই রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সে জন্য জানা থাকতে হবে জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে কীভাবে প্রতিকার পাবেন।
ফৌজদারি প্রতিকার জমি দখলকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে পারেন। এ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে হবে প্রথম শ্রেণীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে। আর এ মামলা করতে হবে বেদখল হয়ে গেলে কিংবা বেদখল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ার দুই মাসের মধ্যে। কোনো মামলা করলে ম্যাজিস্ট্রেট প্রতি পক্ষের ওপর সমন জারি করবেন। পরবর্তী সময়ে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনবেন এবং সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে সম্পত্তির দখলদার কে তা নির্ধারণ করবেন। প্রয়োজনে সরেজমিনে তদন্তের আদেশ দিতে পারেন পুলিশকে। তাদের দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রকৃত দখলদার কে, সে বিষয়ে রায় দেবেন। তবে ১৪৫ ধারায় প্রতিকার চাইতে গেলে এখানে স্বত্ত্ব বা মালিকানা দাবি করা যাবে না। এর মাধ্যমে শুধু প্রকৃত দখলদার নির্ণয় করার জন্য প্রতিকার চাওয়া যাবে।
মালিকানা দাবি করবেন যেভাবে জমির মালিকানা বা স্বত্ব দাবির জন্য দেওয়ানি আদালতের আশ্রয় নিতে হবে। জমি অবৈধভাবে দখলচ্যুত হলে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৮ ও ৯ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার পেতে পারেন। এ আইনের ৮ ধারা অনুযায়ী জমির মালিক নির্ধারিত পদ্ধতিতে জমিটি পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রতিকার চাইতে পারেন। তবে এ ধারা অনুযায়ী, দখলচ্যুত ব্যক্তিকে জমিতে তাঁর স্বত্ত্ব বা মালিকানা আছে কিংবা মালিকানার দাবি রয়েছে, তার ঘোষণা চাইতে হবে। না হলে এ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার পাওয়া সম্ভব হয় না। ৮ ধারার স্বত্ত্ব প্রমাণসহ মামলা করার ক্ষেত্রে বেদখল হওয়ার পর থেকে ১২ বছরের মধ্যে মামলা করার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের মামলাকে সাধারণত স্বত্ত্ব সাব্যস্ত খাস দখলের মামলা বলা হয়।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে হলে মালিকানা প্রমাণের দরকার নেই। শুধু জমি থেকে দখলচ্যুত হয়েছে এটি প্রমাণ করলেই চলবে। ৯ ধারায় উল্লেখ আছে, যদি কোনো ব্যক্তি বেদখল হন, তবে তিনি বা তাঁর মাধ্যমে দাবিদার কোনো ব্যক্তি মোকদ্দমার মাধ্যমে এর দখল পুনরুদ্ধার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে যেসব দিক বিবেচনা করা হয়, সেগুলো হলোবাদী অর্থাৎ যিনি প্রতিকার দাবী করেছেন, তিনি জমিটি দখল করে আসছিলেন কি না; বিবাদী তাঁকে জোরপূর্বক বেদখল করেছেন কি না; বিবাদী বে আইনিভাবে জমিতে প্রবেশ করেছেন কি না।
তবে বাদীকে অবশ্যই বেদখল হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে মামলা করতে হবে। অন্যথায় এ ধারায় মামলা করার অধিকার হারাতে হবে তাঁকে। তবে সরকারের বিরুদ্ধে এ ধারায় প্রতিকার চাওয়া যাবে না।
কোথায় ও কীভাবে আইনের আশ্রয় নেবেন জমিজমার মালিকানা নিয়ে প্রতিকারের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এখতিয়ারাধীন আদালতে মামলা করতে হবে। মামলার মূল্যমান চার লাখ টাকার কম হলে সহকারী জজ আদালতে এবং চার লাখের বেশি হলে অসীম এখতিয়ার পর্যন্ত যুগ্ম জেলা জজ আদালতে প্রতিকার চাইতে হবে। মামলা দায়ের করতে হবে আইনজীবীর মাধ্যমে। মালিকানাসহ দখলের প্রতিকার চাইলে জমির মূল্য বাবদ অ্যাড-ভ্যালোরেম (মূল্যানুপাতে) কোর্ট ফি দিতে হবে। ৯ ধারা অনুযায়ী শুধু দখলের জন্য প্রতিকার চাইলে সম্পত্তির মূল্য অনুসারে যে কোর্ট ফি তার অর্ধেক, অর্থাৎ অ্যাড-ভ্যালোরেম কোর্ট ফির অর্ধেক পরিমাণ কোর্ট ফি দিতে হবে। জমির মালিকানাসহ দখল কিংবা শুধু দখল চেয়ে প্রতিকারের ক্ষেত্রে যদি বাদী মনে করেন, তাঁর জমিটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাহলে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাইতে পারেন পৃথক আবেদনের মাধ্যমে।
জমি কেনার সময় ক্রেতাদের যা করণীয়
প্রত্যেকের জীবনেই জমি কিনে বাড়ি করার একটা স্বপ্ন থাকে। তবে জমি কেনার সময় কয়েকটা ব্যাপারে ক্রেতাদের সজাগ থাকতে হবে, যাতে পরবর্তীকালে কোন ঝামেলাতে না জড়িয়ে পড়তে হয়।
ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়ানোর আগে জেনে নিতে হবে, যে জমিটা কেনা হচ্ছে তার কোন আইনি সমস্যা আছে কিনা।
ক্রেতা যার থেকে কিনছে সে ওই জমিটা বিক্রি করতে পারবে কিনা? সেরকম হলে উকিলের পরামর্শ নিতে হবে, রেজিস্ট্রি করার আগে দেখে নিতে হবে জমিটা এক না অংশীদারি মালিকানার অন্তর্গত।
জমি রেজিস্ট্রেসনের সময় ভুললে চলবে না যে জমিটা কেনা হচ্ছে সেটা কোন বড় সমিতি, বড় কন্সট্রাকশন, বা সরকারি জমির আওতার অন্তর্গত কি না? সেটা মুচলেকাতে লিখিয়ে নিতে হবে ।
জমির টাকা হস্তান্তর করার আগে দেখে নিতে হবে জমিটার মালিক জমির সমস্ত ট্যাক্স, ও অন্যান্য বিল মিটিয়েছে কিনা। সরকারি দপ্তর বা মিনিউসিপালিটিতে খোঁজ নিয়ে তা জেনে নিতে হবে ।
অনেক সময় দেখা যায়, জমির মালিক জমিটা মরডগেজ দিয়ে লোন নিয়েছে। কাজেই জমি রেজিস্ট্রেসনের আগে এটাও দেখার বিষয় যে জমির মালিকের লোনের টাকা পরিশোধ হয়েছে কিনা?
জমি রেজিস্ট্রেসনের আগে দেখে নিতে হবে যে, যে পরিমাণ জমির টাকা দেওয়া হচ্ছে সেই পরিমাপের জমি ক্রেতা পাচ্ছে কিনা? দরকার হলে জমিটি সরকারি কর্মচারী দিয়ে মেপে নিতে হবে ।
আগের সমস্ত অর্থনৈতিক ও আইনি নথি ঠিক থাকলে, একটা চুক্তিনামা করিয়ে নিতে হবে, যাতে ওই জমির মালিক পরে জমির দাম বৃদ্ধি, বা অন্য কোন ক্রেতাকে বেশি মূল্যে জমিটি বিক্রি না করতে পারে ।
একটি ৫০টাকার সরকারি চুক্তিপত্র কিনে তাতে জমিটির মূল্য, আগাম দেওয়া টাকার পরিমান, সময় সবকিছু লিখে নিতে হবে, যাতে কোন পক্ষই আইনি জটিলাতায় না পরে । খুব ভাল হয় যদি এই কাজটি করার সময় দু’পক্ষের উকিল ও দু’জন সাক্ষী থাকে। পাকেচক্রে কোন পক্ষ সমস্যার সম্মুখীন হলে যাতে অপর পক্ষের বিরূদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়। রেজিস্ট্রি হল জমির হস্তান্তারের দুপক্ষেরই প্রমাণ পত্র ।
অভয় দিয়ে বলা জেতে পারে উপরিউক্ত বিষয়গুলির ওপর দৃষ্টিপাত করে জমি কিনলে জমির পেছনে টাকা বিনিয়োগ স্বার্থক হবে, ও আইনি কোন সমস্যার মুখেও পরতে হবে না।
জমি ও অন্যান্য সম্পত্তি হস্তান্তরের দলিল ও রেজিস্ট্রেশনের নিয়ম
ভূমি হস্তান্তরের দলিল স্ট্যাম্পের উপর সরকার কর্তৃক প্রকাশিত নির্দিষ্ট ফরমেট বা ছক অনুযায়ী তৈরি করতে হবে। এই ছকে ক্রেতা-বিক্রেতার ছবি সংযোজনের নতুন বিধান রাখা হয়েছে।
তামাদি হওয়ার সময় সীমা
তামাদি হওয়ার সময়-সীমা তিন বছর থেকে এক বছর করা হয়েছে। দলিল তৈরী হওয়ার তিন মাসের মধ্যে তা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
দলিল রেজিস্ট্রেশনের সময়
দলিল তৈরী হওয়ার তিন মাসের মধ্যে তা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। মৌখিক দান বা হেবা দলিল রেজিস্ট্রেশন।
মুসলিম পারিবারিক ধর্মীয় আইন অনুযায়ী স্থাবর সম্পত্তি মৌখিক দান বা হেবা দলিলো এখন থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই দলিল হবে ঘোষণামূলক। এর জন্য ফি হবে মাত্র ১০০=(একশত) টাকা।
হেবা বা দান কে কাকে করতে পারে: হেবার ক্ষেত্রে শুধু রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয় তথা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে, পিতা-মাতা ও সন্তানের মধ্যে, ভাই-ভাই, বোন-বোন অথবা ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নানা-নানী থেকে নাতি-নাতনী ও নাতি-নাতনী থেকে নানা-নানী সম্পর্কের মধ্যে হেবা দলিলে রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে এই নাম মাত্র ১০০ (একশত) টাকা ফিতে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ পাওয়া যাবে।
উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন: উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। তবে এক্ষেত্রে ওয়ারিশগণের মধ্যে সম্পত্তি বন্টন না হওয়া পর্যন্ত রেজিস্টেশন করার প্রয়োজন নেই।
সম্পত্তি বন্ধকের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন: সম্পত্তি বন্ধকের ক্ষেত্রেও রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ফি হবে ২০০ (দুইশত) টাকা থেকে ৫০০০(পাঁচ হাজার) টাকা। আগে যা ছিল ৫০০(পাঁচশত) টাকা থেকে ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা। এর ফলে বন্ধকি সম্পত্তি কেহ অন্যত্র বিক্রয় করে প্রতারণা বা জালিয়াতির আর কোন সুযোগ পাবে না।
আদালতের মাধ্যমে প্রাপ্ত অগ্রক্রয় সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন: আদালতের মাধ্যমে প্রাপ্ত অগ্র ক্রয় দলিলও রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বায়না চুক্তির রেজিস্ট্রেশন ও ফি: এখন থেকে বায়না চুক্তি রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সম্পত্তি বিক্রয়ের জন্য বায়নার ক্ষেত্রে ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত সম্পত্তির ক্ষেত্রে ৫০০/-(পাঁচশত) টাকা এবং ৫ লক্ষ টাকার অধিক থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ১,০০০/-(এক হাজার) টাকা। ৫০ লক্ষ টাকার অধিকমূল্য সম্পত্তির জন্য ২,০০০/-(দুই হাজার) টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হবে। বায়না নামা রেজিস্ট্রেশন করা ছাড়া চুক্তি বলবৎ করতে আইনগত কোন সুবিধা পাওয়া যাবে না। আবার বায়নার অবশিষ্ট টাকা জমা না করা হলে কোন মামলা মোকদ্দমা করা যাবে না। সম্পত্তি বিক্রয়ের বায়নানামা চুক্তির ৩০ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে ১লা জুলাই ২০০৫ থেকে এ আইন কার্যকর হওয়ার আগে যেসব বায়না হয়েছে কিন্তু এখনও রেজিস্ট্রেশন হয় নাই সেগুলো ১ জানুয়ারি ২০০৬ এর মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আবার বায়নানামা রেজিস্ট্রেশন না করা এসব চুক্তি কার্যকর বা বাতিল করতে হলে রেজিস্ট্রশনের জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদের পর ৬ মাসের মধ্যে মামলা করতে হবে। সম্পত্তি হস্তান্তরের দলিল ৩ মাসের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
বিঃ দ্রঃ ভবিষ্যতে মামলা মোকদ্দমা থেকে পরিবারগুলোকে রক্ষা করতে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির দলিল রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পূর্বে পুরুষদের আপসে সম্পত্তি বন্টনের দলিল রেজিস্ট্রেশন বার্ধমূলক করার ফলে ওয়ারিশদের ভোগান্তি অনেকাংশে হ্রাস পাবে। মাত্র ২০-(বিশ) টাকা মূল্যের স্ট্রাম্পে দলিল করে তা রেজিস্ট্রেশন করা যাবে এবং সর্বোচ্চ অংশ প্রাপ্ত অংশীদারের সম্পত্তির হিসাব থেকে বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম পরিমাণের অংশীদারদের ভগে পাওয়া সম্পত্তির মূল্য মানের শতকরা আড়াই ভাগ টাকা সব অংশীদারের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ নেওয়া হবে।

  • এটা তো ছিলো জমি নিয়ে সধারণ একটি আইনী বিষয় মাত্র। কিন্তু জমি বা ভূমির সাথে সম্পৃক্ত আইন-কানুনের আরোও অনেক কিছুই আছে অজানা। যেগুলো জানাটা আসলেই খুব সরকার কিন্তু কঠিন ভাষায় লিখিত হওয়ায় সাধারন মানুষের কাছে সেগুলো নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তথাপিও কষ্টসাধ্য কাজটি আইন-কানুন ও বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে সহজভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করে “সহজ কথায় জমি জমা” নামে একটি বই রচনা করা হয়েছে। বইটি পাঠকের কাছে সহজ করার জন্য বিভিন্ন অধ্যায়ের আলোকে একটি প্রশ্ন ও উত্তর অধ্যায়ও সংযুক্ত করা হয়েছে। কোন অধ্যায় হয়তো প্রথমে পাঠ করা শুরু করলে কঠিন মনে হবে। তবে সম্পূর্ন অধ্যায়টি একটু ধৈর্য্য ধরে পড়ে শেষ করার পর ঐ বিষয়টি সম্পর্কে একটি সাধারন ধারনা পাওয়া যাবে।

জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম

সম্পদ বন্ধক রেখে লোন নেওয়ার নিয়ম

আসুন, বন্ধক লোনের ব্যাপারে জেনে নেই

বন্ধক লোন নিতে হলে ব্যাংকে আপনার কোন সম্পত্তি জমা রেখে সেইটার বিনিময়ে লোন নিতে হয়। সম্পত্তিটা আপনার বাসা হতে পারে, আপনার জমি হতে পারে বা আপনার নামের কোন বিল্ডিং বা অফিস হতে পারে। বন্ধক লোন নেওয়াটা বেশি সুবিধার বলে আমি মনে করি কারণ আপনি যদি লোন পরিশোধ করতে না পারেন তবে ব্যাংক আপনার সম্পত্তিটা নিয়ে নিবে। আপনি প্রথমবার কোন জায়গা কিনছেন? তবে বন্ধক লোন নেওয়ায় ভালো বলে আমি মনে করি।

বন্ধক লোন নেওয়ার জন্য কি কি করতে হবেঃ

বন্ধক লোন সাধারণত আমাদের নিজেদের আর্থিক সচ্ছলতার জন্য নেওয়া কিন্তু সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রেও আমরা এই লোন নিতে পারি। এই লোন নেওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধাটা হচ্ছে, আপনি লোন পরিশোধ করার পর পুনরায় আপনার সম্পত্তিটা ব্যবহার করতে পারি। একবার লোনটা পরিশোধ হয়ে গেলেই আপনি আবার সম্পত্তিটা আপনার একমাত্র মালিক হয়ে যাবে।

আপনি বিভিন্ন কাজে এই লোন নিতে পারেন যেমন, আপনার ব্যবসায়িক উন্নয়নের জন্য, বাসা করার জন্য, ছেলেমেয়েকে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে।

কি ধরনের সম্পত্তি আপনি বন্ধক রাখতে পারবেনঃ

আপনি আপনার যে কোন ধরনের সম্পত্তি বন্ধক রাখতে পারেন। আপনি চাইলে আপনার বসবাসকৃত বাসাটাও বন্ধক রাখতে পারেন আবার আপনার যে বাসাটা ভাড়া দেওয়া আছে ঐটা বন্ধক সম্পত্তি হিসেবে আপনি ব্যাংকে জমা দিতে পারবেন। আপনার নামে কোন বৈধ জায়গা থাকলে সেটাও বন্ধক রাখতে পারেন। কমার্শিয়াল এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল সম্পত্তি বা নির্মাণাধীন সম্পত্তি আপনি বন্ধক রাখতে পারেন।

সম্পত্তির বিনিময়ে আপনি কতখানি লোন পেতে পারেনঃ
সাধারণত সম্পত্তির মূল্যের ৫০%-৬০% লোন দেওয়া হয়। যদি আপনার সম্পত্তি অনেক দামি হয় তবে ব্যাংক আপনাকে সর্বোচ্চ ৭৫% লোন দিবে। মনে রাখবেন, ব্যাংক আপনার সম্পত্তি নিয়ে প্রতিনিয়ত যাচাই-বাছাই করবে, এর দাম সম্পর্কে ধারণা রাখবে।

বন্ধক লোনের ইন্টারেস্টঃ

বন্ধক লোনের ইন্টারেস্ট সাধারণত ১২%-১৫% এর বেশি হয় না যার কারণে এই লোন ব্যবস্থাটা সকলের খুব পছন্দসয় লোন ব্যবস্থা। অনেকেই পার্সোনাল লোন নেওয়ার থেকে বন্ধক লোনটাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে এবং এতে ইন্টারেস্টের খরচটাও অনেক কম হয়। হোমলোনের পর বন্ধক লোনকে অনেক সস্তা লোন বলা হয়। সাধারণভাবে ১৫বছরের মধ্যে বন্ধক লোন শোধ করতে হয় তবে ব্যাংক চাইলে আপনি বেশি সময় পেতে পারেন।

ইন্টারেস্ট রেটের উপর ভিত্তি করে এই লোনকে ৩ভাগে ভাগ করা হয়ঃ
Fixed Rate Mortgage (FRM)
Adjustable Rate Mortgage (ARM)
Interest Only Mortgage Rate

এইগুলোর মধ্যে FRM এর ক্ষেত্রে আপনাকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ এবং মূল অর্থ ব্যাংকে দিতে হবে। ARM লোন বন্ধককৃত সম্পত্তির ইকোনমিক ও মার্কেট ভ্যালুর উপর নির্ভর করে। আপনি যদি Interest Only নেন তবে আপনাকে আগে ইন্টারেস্টের টাকাটা পরিশোধ করতে হবে তারপর লোনের বাকি টাকাটা দিতে হবে।

সাধারণত লোন নিলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনাকে মূল টাকার সাথে ইন্টারেস্টের টাকাটা পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু বন্ধক লোনের ক্ষেত্রে আপনার সম্পত্তির কর এবং জীবনবীমার টাকাটাো যুক্ত হয়। জীবনবীমার খরচটা কেন যোগ হয়? জীবনবীমা আপনার সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং ক্ষতিপূরণে সাহায্য করে। এসব হিসাব দেখতে গেলে আবার বন্ধক লোনকে খুব ব্যয়বহুল মনে হয় কিন্তু আপনি যদি লোন নেওয়ার আগে বিষয়গুলো একটু ভালোভাবে খোঁজখবর নেন তাহলে দেখবেন, এইটা সবচেয়ে সুবিধাজনক।

বন্ধক লোন নেওয়ার জন্য কোন বিষয়গুলো জরুরিঃ
বন্ধক লোন পেতে হলে আপনাকে উপার্জনক্ষম হতে হবে। তবে আপনি উপার্জনক্ষম হলেও ২১ বছরের আগে এ লোন পাবেন না। এই ২টা মুখ্য বিষয় ছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হয় বন্ধক লোন নেওয়ার সময়। সেগুলো নিচে দেওয়া হলঃ

Total Annual Income/ বাৎসরিক আয়
Income Tax Returns For The Last 3 Years/ গত ৩বছরে প্রদত্ত কর
Total Work Experience/ কর্ম অভিজ্ঞতা
Experience With The Current Company/ বর্তমান প্রতিষ্ঠানে কর্ম অভিজ্ঞতা
Property Value/ সম্পত্তির মূল্য
Existing Loans/Liabilities, If Any/ অপরিশোধিত লোন, যদি থাকে
Total Number Of Dependents/ সম্পত্তির পরিমাণ

ব্যাংকের উপর ভিত্তি করে গুরুত্বের বিষয়টা কম বেশি থাকতে পারে কিন্তু প্রতিটা ব্যাংকে এই বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করেই লোন দেয়।

বন্ধক লোন পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
বন্ধক লোন নিতে আপনার বেতনের প্রমানপত্র, আপনি যদি ব্যবসায়ী হন তবে তার প্রমাণপত্র লাগবে। নিচে আপনাদের সুবিধার্থে একটা লিস্ট দেওয়া হলঃ

SALARIED
SELF-EMPLOYED
Completed loan application
Completed loan application
Passport size photographs
Passport size photographs
Proof of identity: voter card, driving license, pan card, employee id card
Proof of identity: voter card, driving license, pan card, employee id card
Proof of address: Aadhaar card, telephone bill, electricity bill
Proof of business; proof of education qualification
Your latest salary slips
Certified financial statement for last 3 years
Form 16 from last 3 years
Income tax return and profit and loss stamen from last 3 years
Bank statements of last 6 months
Bank statements of last 6 months
Processing fee cheque
Processing fee cheque

বন্ধক লোন, লোনের মধ্যে সেরা। এই লোনের সহজলভ্যতা লোনটিকে জনপ্রিয় করেছে। অল্প পরিমাণ ইন্টারেস্ট এবং লোন পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত সময় এই লোনের বিশেষত্ব। এই লোন নেওয়ার প্রক্রিয়াটা খুবই সহজ এবং লোন পরিশোধ করতে বেশি সময় নিলেও অনেক ব্যাংক এক্সট্রা চার্জ নেয়না। মূলকথা, এই লোনের ক্ষেত্রে মুখ্য বিষয় শুধুমাত্র আপনার সম্পত্তির মূল্য।

If you want to take a mortgage loan, you have to deposit some property in the bank and take a loan in return. The property could be your home, your land or a building or office in your name. I think it is more convenient to take a mortgage loan because if you cannot repay the loan, the bank will take your property. Which place are you buying for the first time? However, I think it is better to take a mortgage loan.

What to do to get a mortgage loan:

Mortgage loans are usually taken out for our own financial well-being but we can also take out these loans when buying property. The biggest advantage of this loan is that you can use your property again after repaying the loan. Once the loan is repaid, you will be the sole owner of the property again.

Popular Post

নামজারি কেন জরুরি- সে প্রশ্নের উত্তর জানার আগে সম্ভবত ‘নামজারি’ বলতে আমরা কী বুঝি তা খানিকটা জানা প্রয়োজন। 

এক কথায় ‘নামজারি’ বলতে-কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোন বৈধ পন্থায় ভূমি/জমির মালিকানা অর্জন করলে সরকারি রেকর্ড সংশোধন করে তার নামে রেকর্ড আপটুডেট (হালনাগাদ) করাকেই নামজারি বলা হয়। কোন ব্যক্তির নামজারি সম্পন্ন হলে তাকে একটি খতিয়ান দেয়া হয় যেখানে তার অর্জিত জমির একখানি সংক্ষিপ্ত হিসাব বিবরণী উল্লেখ থাকে। উক্ত হিসাব বিবরণী অর্থাৎ খতিয়ানে মালিকের নাম, কোন্ মৌজা, মৌজার নম্বর (জে এল নম্বর), জরিপের দাগ নম্বর, দাগে জমির পরিমান, একাধিক মালিক হলে তাদের নির্ধারিত হিস্যা ও প্রতি বছরের ধার্যকৃত খাজনা (ভূমি উন্নয়ন কর) ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে।

এবার মূল আলোচনায় আসা যাক। কেন নামজারি এত জরুরি তার মধ্যে নিম্নলিখিতগুলি গুরুত্বপূর্ণঃ

  1. শুধুমাত্র কোন দলিলের মাধ্যমে অর্জিত মালিকানার ভিত্তিতে অথবা ওয়ারিশ হিসেবে পিতা-মাতার জমিতে দখলসূত্রে থাকলেই সরকারি রেকর্ডে উক্ত ভূমিতে তাঁর মালিকানা নিশ্চিত হয় না। কোন ভূমিতে বৈধ ওয়ারিশ বা ক্রয়সূত্রে মালিক হবার পর পূর্বের মালিকের নাম হতে নাম কেটে বর্তমান মালিকের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হয়, তাহলেই তার মালিকানা সরকার কর্তৃক নিশ্চিত হয়। আর এটিই হল নামজারি পদ্ধতি।
  1. আপনি যদি ওয়ারিশ হিসাবে বা ক্রয়সূত্রে কোন জমির মালিক হন কিন্তু নামজারি না করান, তবে আপনার অজান্তে কোনভাবে এক/একাধিক দলিল সম্পাদন করে কোন স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি আপনার আগে নামজারি করে ফেলতে পারে। তাতে আপনি পরবর্তীতে নামজারি করতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই সমস্যায় পড়বেন। বাস্তবক্ষেত্রে জটিলতা আরো বাড়তে দেখা গেছে যখন উক্ত স্বার্থানেষী ব্যক্তি অপর এক বা একাধিক ব্যক্তির নিকট ঐ জমি ইতোমধ্যে বিক্রয় করে ফেলেছে। বর্তমানে এরকম ঘটনা অহরহ ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে নানারকম মামলা মোকদ্দমার সৃষ্টি হয়ে থাকে যা দীর্ঘদিন যাবৎ অর্থ, সময় ও মানুষে-মানুষে সম্পর্কের অবনতি ঘটায়।
  2. সাধারণভাবে আমাদের ধারণা, দলিল সম্পাদন হলেই কাজ শেষ। নামজারির দরকার কী? এটি অত্যন্ত ভুল ধারণা। দলিল সম্পাদনের মাধ্যমে শুধুমাত্র মালিকানা হস্তান্তর হয়, সরকারের খাতায় মালিক হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়া যায় না।
  3. রেজিস্ট্রেশন দপ্তরটি আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি অফিস। সকল প্রকার দলিল সম্পাদন, রেজিস্ট্রিকরণ উক্ত দপ্তরের কাজ। দলিল রেজিস্ট্রিকরণের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত যিনি বিক্রেতা তিনি আদৌ উক্ত জমির মালিক হিসাবে সরকারের রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত আছেন কী না তার কোন রেকর্ড জেলা রেজিস্টার বা সাব-রেজিস্টারের দপ্তরে নেই। ফলে ভুলবশত: একই জমির এক বা একাধিক দলিলের মাধ্যমে বিক্রয়ের ঘটনা ঘটে। অপরদিকে ভূমি অফিসগুলি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন যার কাছে সরকারের কাছে রেকর্ডভুক্ত মালিকদের নাম, পূর্ববর্তী নামজারিকৃত মালিকদের নাম, নথিসহ বিস্তর তথ্য থাকে। ফলে একবার নামজারি করাতে সক্ষম হলে একই জমির একাধিকবার বিক্রয় হলেও মূল মালিকের আর ক্ষতিগ্রস্ত বা হয়রানী হবার সম্ভাবনা কম থাকে।
  4. নামজারি আবেদনের মাধ্যমে আবেদনকারি যে স্বত্বলিপি অর্জন করেন, যাকে প্রচলিত ভাষায় আমরা ‘খতিয়ান’ বলে থাকি, এর মাধ্যমে তার উক্ত জমিতে মালিকানা স্বত্ব প্রমাণে নিশ্চয়তা লাভ করেন যা অন্য কোন দালিলিক মাধ্যমে লাভ করেন না।
  5. নামজারি করা না থাকলে শুধু একাধিক বিক্রয়ের আশঙ্কাই বিদ্যামান থাকেনা, পরবর্তীতে আপনার অর্জিত সম্পত্তিতে দখলে থাকলেও পরবর্তীতে আপনার অবর্তমানে আপনার উত্তরাধিকারগণ উক্ত সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবার আশঙ্কা থাকে।
  6. যে কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ঋণ নিতে গেলে জমি বন্ধকের ক্ষেত্রে খতিয়ান ছাড়া আবেদন গ্রহণ করা হয় না।
  7. ওয়ারিশনমূলে প্রাপ্ত জমির মালিকরা যদি নামজারি না করান তাহলে তাদের মধ্যে বিশেষত: নারী অংশীদারগণ এবং ভবিষ্যতে তাদের ওয়ারিশগণদের মধ্যে মারাত্নক জটিলতা সৃষ্টি হয়। এ জন্য ওয়ারিশগণ সমঝোতার মাধ্যমে প্রথমেই নামজারি সম্পন্ন করে রাখলে পরবর্তীতে অনেক জটিলতা পরিহার করা সম্ভব হয়।

পরিশেষে, উপরোক্ত বিষয়গুলির আলোকে জমির মালিকগণকে অনুরোধ করা যাচ্ছে-যাঁরা এখনও গড়িমসি করে নামজারি সম্পন্ন করেননি তারা অনতিবিলম্বে নামজারির জন্য আবেদন জানান। মনে রাখবেন, এটি একটি সহজ প্রক্রিয়া, এতে ভয়ের কিছু নেই, যদি আপনি এখানে উদ্ধৃত নিয়মগুলি একটি পড়ে নেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করেন তাহলে আপনার-জমি সংশ্লিষ্ট বড় ধরণের আপত্তি কিংবা মামলা-মোকদ্দমা না থাকে তবে নির্ধারিত ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে আপনাকে নামজারির খতিয়ান সৃজন করে দেয়া সম্ভব।

আরও নিউজ পেতে ক্লিক করুন

Before knowing the answer to the question why namjari is important, we need to know a little bit about what we mean by & nbsp; ‘namjari’. & Nbsp;

In a nutshell, & nbsp; namjari & nbsp; means that if an individual or organization acquires ownership of land / land in a legal way, it is called namjari to amend the government record and update the record in his / her name. When the registration of a person is completed, he is given a ledger in which a brief account of his acquired land is mentioned. The statement of account i.e. the name of the owner in the ledger, & nbsp; which mouza, & nbsp; mouza number (JL number), & nbsp; survey spot number, & nbsp; amount of land in spot, & nbsp; multiple owners, their fixed share and fixed rent (land) Development tax) etc. are recorded. Now let’s come to the main discussion. The following are some of the important reasons why naming is so important:
Only on the basis of ownership acquired through a deed or in possession of the land of the parents as heirs, his ownership of the said land is not confirmed in the official records. Once the land is legally inherited or purchased, the name of the current owner has to be included in the name of the previous owner, & nbsp; then the ownership is confirmed by the government. And this is the namjari method.

If you own a piece of land as an heir or on a purchase basis but do not register it, & nbsp; then a selfish person may register one / more deeds before you unknowingly. If you go to the next name, you will naturally get into trouble. In reality, the complexity is further compounded when the selfish person has already sold the land to one or more other persons. At present such incidents are happening every day. In all of these cases, litigation has resulted in long-term deterioration of money, time, and human-to-human relationships. What is the need for naming? & Nbsp; This is a very wrong idea. Ownership is only transferred through execution of documents, & nbsp; not being recognized as an owner in the government register. The Registration Office is an office under the Ministry of Law. Execution of all types of documents, & nbsp; registration is the work of that department. In the case of registration of deeds, there is still no record in the office of the District Registrar or Sub-Registrar as to whether the seller is included in the government records as the owner of the said land at all. This results in accidental sale of the same land through one or more deeds. Land offices, on the other hand, are under the Ministry of Lands, which has a wealth of information, including names of registered owners, & nbsp; names of previously registered owners, & nbsp; documents with the government. As a result, once the same land is sold more than once, even if it is registered, the original owner is less likely to be harmed or harassed. By saying, & nbsp; you are assured of proof of ownership of the said land which you do not get by any other document. However, in your absence, your heirs may be deprived of the property. Land mortgage application is not accepted without ledger in case of taking loan from any financial institution at present. If the owners do not register, there will be serious complications between them, especially the female partners and their future heirs. For this reason, if the heirs complete the namazari first through compromise, then it is possible to avoid many complications later.

Finally, & nbsp; in the light of the above issues, the landowners are being requested – those who have not yet completed the namazari have applied for namazari without delay. Remember, & nbsp; this is a simple process, & nbsp; there is nothing to fear, & nbsp; if you read one of the rules quoted here and act accordingly, there will be no major objections or lawsuits related to your land, but within the stipulated 45 working days. It is possible to create a name register for you.

বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। এদেশের মোট আয়তন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গ কিলোমিটার। ১৫ কোটি জনসংখ্যাপূর্ণ বাংলাদেশের মাথাপিছু জমির পরিমাণ অত্যন্ত সীমিত। এ দেশে মাথাপিছু জমির পরিমাণ প্রায় .৩০ একর। এর মধ্যে রয়েছে বাড়ি-ঘর, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, রাস্তা-ঘাট, শিল্প-কারখানা, শহর, বন্দর ইত্যাদি। দেশের শতকরা ২৫ ভাগ আবাদি জমি মাত্র ২% লোকের মালিকানায়। পক্ষান্তরে ৪.৮% আবাদি ভূমি ৫০% চাষীর মালিকানায়। জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান ২০.৮৩% এবং মোট শ্রমশক্তির ৪৮.১০% কৃষক। ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশের চাষযোগ্য ভূমি জনসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল।

জনসংখ্যার অত্যাধিক চাপের কারণে বাংলাদেশে সব ধরনের জামির চাহিদা বেড়েই চলছে। কাজেই বাড়িঘর নিমার্ণ করার জন্য এখানে জমি পাওয়া বেশ কষ্টকর। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে আবাসিক সংকট নিরসনে জমি পাওয়া গেলেও তার দাম অনেক বেশি। এঅবস্থায় দালাল বা প্রতারকচক্র এসে কোনো আগ্রহী ক্রেতাকে “সস্তায় ভাল জমির’ খবর দেন তখন জমি যাতে হাত ছাড়া না হয় তার জন্য ক্রেতা দ্রুত বায়না ও রেজিষ্ট্রি করে মূল্য পরিশোধ করে জমি দখল করতে যান। জমি দখল করতে গিয়ে অনেক সময় ক্রেতা দেখেন যে, (১) বিক্রেতা ওই জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে দখলকার ছিলেন না (২) ওই জমি নিয়ে অন্য অংশীদারদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিবাদ চলেছে (৩) বিক্রেতা ইতিপূর্বে বার বার জমি বিক্রি করার পর তথায় তার বিক্রি যোগ্য কোনো স্বত্ব ছিল না (৫) ইহা অর্পিত সম্পত্তি (৬) সরকার কর্তৃক হুকুম দখল হয়েছে (৭) যে ওয়ারিশ সূত্রে বিক্রেতা মালিকানা দাবি করেছে তা উপযুক্ত আদালত কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এ অবস্থায় ক্রেতার মাথায় বাজ পড়ার মত অবস্থা। দালাল বা প্রতারকচক্র ইতিমধ্যে গা-ঢাকা দিয়েছে। সরল ক্রেতা জমি উদ্ধারের জন্য দেওয়ানী আদালতের আশ্রয় নেন। দীর্ঘকাল মামলায় হাজিরা দিতে দিতে মামলা চূড়ান্ত হওয়ার আগেই ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত ক্রেতাকে সকলে নির্বুদ্ধিতার জন্য অপবাদ দেয়।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের অনেকেই জমি কেনার জন্য দালালের মাধ্যমে ‘সস্তার ফাঁদে পা দেন’। সব চেয়ে বেশি এ ফাঁদে পা দেন সদ্য বিদেশ হতে দেশে প্রত্যাবর্তনকারী ব্যক্তিরা এবং সরকারি কর্মচারি ও কর্মকর্তারা। সীমিত সামর্থ্যের কারণে কর্মকর্তা ও কর্মচারগণ অনেক সময় সস্তায় জমি কেনার সুযোগ খুঁজেন এবং অনেক সময় সস্তায় কিনে দীর্ঘকাল ঝামেলায় ভোগেন। আবার অনেক সময় বিরোধপূর্ণ জমি উদ্ধারের জন্য কোনো কোনো পক্ষ সন্ত্রাসী ও ভাড়াটিয়া মাস্তানদের ব্যবহার করে। ফলে দাঙ্গা হাঙ্গামার সূত্রপাত হয়। দাঙ্গা হাঙ্গামার ফলে অনেকে খুন ও জখমপ্রাপ্ত হন। বিরোধপূর্ণ জমি দখলের সময় বাড়ি ঘরে হামলার ফলে মানুষের জীবন ও সম্পত্তি বিনষ্ট করা হয়। এভাবে জমি দখল করতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। এর জন্য দায়ী সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করে সমস্যাপূর্ণ জমি ক্রয় করা।

ভূমি মালিকানার উৎস :
ভূমি মালিকানার বিরোধ অনেকাংশে ভূমি মালিকানার উৎসের সাথে জড়িত। মালিকানার উৎস নিন্মোক্তভাবে হয়ে থাকে। যথা- ক) উত্তরাধিকার তথা ওয়ারিশ সূত্রে, খ) বিক্রয় ও ক্রয় সূত্রে, গ) ভূমি বন্দোবস্ত প্রাপ্তির সূত্রে, ঘ) নিলাম ক্রয় সূত্রে, ঙ) সিকস্তি ও পয়স্তি সূত্রে, চ) আদালতের রায় মূলে ছ) ভূমি অধিগ্রহণ মূলে জ) দান, ওয়াকফ, হেবা, উইল ইত্যাদি সূত্রে, ঝ) লিজ বা ইজারা দলিলমূলে, ঞ) বিনিময় বা এওয়াজ দলিলমূলে, ট) বন্ধকী দলিল সূত্রে, ঠ) ১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ৮৬, ৮৭, ৮৯, ৯০, ৯১, ৯২, ৯৩, ৯৪, ৯৫, ৯৬, ৯৭, ১১৭, ১৪৩ ও ১৪৪ ধারা মূলে।

জমি ক্রয়ের পূর্বে ক্রেতা সাধারণের কর্তব্য :
জমি ক্রয়ের পূর্বে ক্রেতা কর্তৃক কিছু তথ্যাদি যাচাই বাছাই করে দেখা আবশ্যক। ১। জমি বিক্রেতার প্রকৃত মালিকানা স্বত্ব আছে কিনা, ২। মালিকানার প্রমাণ হিসেবে বিক্রেতার নামে সর্বশেষ জরিপের এস,এ রেকর্ড অথবা আর,এস, রেকর্ড আছে কিনা। রেকর্ড/ খতিয়ানের মূল কপি বা সত্যায়িত কপি দেখে নিশ্চিত হতে হবে, ৩। বিক্রেতা যদি ক্রয় সূত্রে জমির মালিক হয়ে থাকেন তা হলে তার নামে মিউটেশন বা নামজারি করা হয়েছে কিনা, ৪। বিক্রি প্রস্তাবিত জমির দখল যাচাই করা, ৫। খাজনার দাখিলা যাচাই করা, ৬। বিক্রি প্রস্তাবিত জমির দাগ নম্বর এবং খতিয়ান নম্বর জেলা রেকর্ড রুমের রেকর্ড এবং উপসহকারী ভূমি অফিসের রেকর্ড যাচাই করে জমির মালিকানা সূত্র সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে, ৭। অনেক সময় অসাধু দালাল ও ভূমি মালিক সরেজমিনে এক জমি দেখায় এবং রেজিষ্ট্রি করার সময় অন্য দাগ নম্বর রেজিষ্ট্রি করে দেয়। এ অবস্থা হতে পরিত্রাণ পেতে হলে রেজিষ্ট্রি করার পূর্বে রেকর্ড, নকশায় ও সরেজমিনে জমির দাগ নম্বর সনাক্ত করতে হবে, ৮। কৃষি জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে রেকর্ডীয় মালিকানায় অংশীদারগণ অগ্রক্রয়াধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। সুতরাং অংশীদারদের সম্মতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে, ৯। দখলহীন মালিকদের জমি ক্রয় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে জমি দখলের জন্য দাঙ্গা ফ্যাসাদ এবং মামলা মকদ্দমায় জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, ১০। স্ট্যাম্প ফিস ফাঁকি দেয়ার উদ্দেশ্যে জমির বাজার মূল্য অপেক্ষা কম মূল্য নির্ধারণ করে দলিল রেজিষ্ট্রি করলে ষ্টাম্প আইনের ৬৪ ধারা মোতাবেক ক্রেতা/ বিক্রেতার শাস্তি হতে পারে, ১১। মালিকানা নিয়ে বিরোধ আছে এমন জমি ক্রয় করলে মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে, ১২। বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে জমি বিক্রয়ের প্রস্তাব হলে তার মধ্যে সমস্যা নিহিত থাকার সম্ভাবনা বেশি। (সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিষ্ট্রার অফিস হতে জমির মূল্য এবং রেজিষ্ট্রি সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে), ১৩। শহর ও শহরতলীতে বিক্রির জন্য প্রস্তাবিত জমি সরকার কর্তৃক ইতিপূর্বে অধিগ্রহণ হয়েছে কিনা অথবা অধীগ্রহণের প্রস্তাবাধীন কিনা তা সংশ্লিষ্ট অফিস হতে যাচাই করে দেখা আবশ্যক, ১৪। বিক্রেতার মালিকানা স্বত্ব ও দখল সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পরীক্ষা করে যাচাই করার জন্য আবশ্যক হলে ভূমি বিষয়ে অভিজ্ঞ, সৎ ও নিষ্ঠাবান আইনজীবির পরামর্শ নেয়া উচিত, ১৫। কোন জমি প্রথম বিক্রির পর নামজারি করার পূর্বে যদি একাধিকবার বিক্রির মাধ্যমে হস্তান্তরিত হয়ে থাকে তা হলে সংশ্লিষ্ট সকল ভূয়া দলিল পরীক্ষা করে মৌজার নাম, ক্রেতা/ বিক্রেতা খতিয়ান ও দাগ নম্বর পরীক্ষা করে সর্বশেষ বিক্রেতার মালিকানা স্বত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। ( সংশ্লিষ্ট এসি ল্যান্ড অফিস অথবা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে দাগ সূচী, খতিয়ান, মৌজা ম্যাপ, জেএল নং, রেকর্ড, খাজনা, নামজারী, জরিপ সংক্রান্ত তথ্য এবং জমির প্রকৃতি জানা যাবে), ১৬। জমির খাজনা/ ভূমি কর অনাদায়ে নিলাম হয়েছে কিনা তা যাচাই করা আবশ্যক, ১৭। জমি সিকস্তি হওয়ার কারণে মালিকানা বিলুপ্ত হয়েছে কিনা তা যাচাই করা আবশ্যক, ১৮। সংশ্লিষ্ট জমি সরকার বা কোন সংস্থাকে ঋণ গ্রহণের মর্গেজ দেয়া আছে কিনা তা যাচাই করা আবশ্যক, ১৯। বিক্রি প্রস্তাবিত জমিতে কোন বিরোধ বা মামলা মকদ্দমা আছে কিনা তা পার্শ্ববর্তী মালিকদের নিকট হতে অনুসন্ধান করে যাচাই করা যেতে পারে, ২০।

এজমালি তথা যৌথ মালিকানা সম্পত্তি ক্রয় করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মতি অথবা Power of Attorney(আমমোক্তার নামা) দেয়া আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া আবশ্য, ২১। বিক্রয় প্রস্তাবিত জমি বিগত ৩০ বছরে কত বার হস্তান্তরিত হয়েছে তা সাবরেজিস্ট্রার অফিসে তল্লাশকারক দিয়ে যাচাই করা আবশ্যক। ইহা ছাড়া ভূমি মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইট এর মাধ্যমেও জমির মালিকানা সংক্রন্ত তথ্য জানা যেতে পারে।
জমি ক্রয়ের পর ক্রেতা মালিকের কর্তব্য, জমি ক্রয়ের পর নতুন ভূমি মালিকের কতকগুলি আবশ্যকীয় কর্তব্য আছে। এ কর্তব্য দ্রুত পালন না করলে মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

সুতরাং জমি ক্রয়ের পর একজন ভূমি মালিকের কর্তব্য হলো :
১। জমি রেজিষ্ট্রি করার পর খরিদা জমি দখল, সীমানা নির্ধারণ এবং জমি ব্যবহার তথা চাষাবাদ বা বাড়িঘর নির্মাণ করা, ২। রেজিষ্ট্রি অফিস হতে মূল দলিল গ্রহণ করা, ৩। মূল দলিল প্রাপ্তিতে বিলম্ব হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে দলিলের সার্টিফাইড কপি নেওয়ার ব্যবস্থা করা, ৪। মিউটেশন/ নামজারি করার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর অফিসে দলিলের সত্যায়িত কপিসহ নির্ধারিত ফিস দিয়ে নির্ধারিত ফর্মে আবেদন করে মিউটেশন/ নামজারি করানোর ব্যবস্থা করা, ৫। মিউটেশন/ নামজারি মঞ্জুর হলে আদেশপত্রের সার্টিফাইড কপি এবং নতুন খতিয়ানের সার্টিফাইড পর্চা গ্রহণ করার ব্যবস্থা করা, ৬। মিউটেশন মোতাবেক জমির খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর নিয়মিত পরিশোধ করার ব্যবস্থা করা, ৭। জমি ক্রয়ের পর উহা বিক্রেতার দখলে রাখা অত্যন্ত বিপদজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ অসাধু মালিক কর্তৃক তার দখল দেখিয়ে অন্য ক্রেতার নিকট পুনরায় বিক্রি করার সুযোগ থাকে, ৮। মিউটেশন তথা নামজারি না করলে মালিক কর্তৃক পুনরায় জমি বিক্রি করার সুযোগ থাকে, ৯। মালিকানা প্রমাণের জন্য সাধারণত চারটি বিষয়ে উপর জোর দেওয়া যেতে পারে। যথা- ক) দলিল সঠিক আছে কিনা, খ) জমি দখলে আছে কিনা, গ) দাখিলা অর্থাৎ খাজনা দেয় কিনা (খাজনা দেওয়ার পূর্ব শর্ত হল মিউটেশন বা নামজারী) এবং ঘ) খতিয়ান ও পর্চার মধ্যে মিল আছে কিনা, ১০। নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করলে জমি নিলাম হয়ে যেতে পারে, ১১। ভালভাবে সীমানা চিহ্নিত করে না রাখলে অন্যেরা অনধিকার প্রবেশ করার সুযোগ পাবে, ১১। ভূমি মালিকের দায়িত্ব ভূমির খাজনা/ কর নিয়মিত পরিশোধ করা, জমি ব্যবহার তথা চাষাবাদ বা অন্য কার্যক্রমে ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করা।

বাংলাদেশের প্রায় ০% লোক কোন না কোনভাবে ভূমির উপর নির্ভরশীল। এদেশে ভূমি একটি বেশ সংবেদনশীল ও স্থিতিশীল সেক্টর। বিভিন্ন কারণে ভূমি বিরোধ সৃষ্টি হয়, প্রধান কারণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য (ক) যৌথ পরিবারের মধ্যে ভাগবণ্টন সংক্রান্তে বিরোধ (খ) ক্রয়কৃত জমির প্রকৃত মালিকানা সংক্রান্তে জটিলতা (গ) ক্রয়কৃত জমির দলিল সঠিকভাবে রেজিষ্ট্রি না করা (ঘ) ভূমি অফিসের রেকর্ড সংগ্রহে জটিলতা/ক্রুটি (ঙ) পৈত্রিক সম্পত্তি বন্টনে স্বচ্ছতার অভাব (চ) যৌথ পরিবারে বিশেষভাবে মেয়ে সন্তানদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির যথাযথবণ্টন না করা ইত্যাদি।

জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ সমূহ দেওয়ানী আদালতে নিস্পত্তি যোগ্য। দেওয়ানী আদালতে বিচার কার্য্য সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয় যার ফলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিবর্গ নিজেরা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে জমির দখল নিতে সচেষ্ট হন। ফলশ্রুতিতে জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে এলাকায় দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ শান্তি ভঙ্গের আশংকা দেখা দেয়। দেখা গেছে বাংলাদেশে প্রায় ৬০% ফৌজদারী মামলা ভূমি সংক্রান্ত ঘটনা বা ঘটনার জের হিসাবে হয়ে থাকে। সুতরাং জমির ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সকলের অধিক যত্ববান ও সর্তক হওয়া উচিত।

ভূমিহীনদের মাঝে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদান সেবা প্রদানকারী অফিসের নাম দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/কর্মচারী সেবা প্রাপ্তির স্থান প্রয়োজনীয়…

সেবা প্রদানকারী অফিসের নামদায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/কর্মচারীসেবা প্রাপ্তির স্থানপ্রয়োজনীয় সময়
উপজেলা ভূমি অফিসঅতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রা)/উপজেলা নির্বাহী অফিসার/সহকারী কমিশনার (ভূমি)উপজেলা ভূমি অফিসসাধারণত৬০-৯০ দিন
সেবা প্রদানের সংক্ষিপ্ত বিবরণআবেদন প্রাপ্তির পর আবেদনকারী প্রকৃত ভূমিহীন কি-না তা ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রকাশ্য সভা আহ্বান করে উপজেলাকৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটি কর্তৃক যাচাই করা হয়। পরবর্তীতে উপজেলা ভূমি অফিসে সংশ্লিষ্ট রেজিস্টারে এন্ট্রি (রেজিস্টার-১২) দিয়ে সরেজমিন তদন্ত ও রেকর্ডপত্র যাচাই অন্তে প্রস্তাব / প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রেরণ করা হয়। চাহিত ভূমির অবস্থান ও রেকর্ডপত্র যাচাই করে প্রস্তাব / প্রতিবেদন উপজেলা ভূমি অফিসে প্রেরণ করা হয়।  প্রাপ্ত প্রস্তাবের উপর উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো/ সার্ভেয়ারের মতামত গ্রহণ এবং আবেদন সংশ্লিষ্ট কৃষি খাস জমির স্কেচ ম্যাপ তৈরি করা হয় । অত:পর বন্দোবস্ত প্রস্তাব উপজেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটির সভায় উপস্থাপননেরপরতাঅনুমোদিতহলেপরেতা জেলা কমিটিতে  অনুমোদনের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়।জেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটিকর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদনের পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক কবুলিয়ত সম্পাদন এবং সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা হয় এবং ভূমিহীনদের দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়। তাছাড়ানামজারি ও জমাভাগকরণ এবং রেকর্ড সংশোধনের জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রেরণ করা হয়ে থাকে।রেকর্ড সংশোধনঅন্তে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কর্তৃক তামিল প্রতিবেদন উপজেলা ভূমি অফিসে প্রেরণ করার মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন  হয়ে থাকে।
সেবা প্রাপ্তির শর্তাবলিকৃষিখাসজমিব্যবস্থাপনাওবন্দোবস্ত নীতিমালা ১৯৯৭ এ বর্ণিত শর্তাবলি যেমন-১) ভূমিহীন হতে হবে২) কৃষি  খাস জমির জন্য আবেদন হতে হবে
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র১. আবেদনপত্র, ছবি২. আবেদনকারীর ছবি স্থানীয় চেয়ারম্যান/মেম্বার দ্বারা সত্যায়িত হতে হবে৩. ভূমিহীনের সনদ৪. স্থানীয় চেয়ারম্যানের সনদ/জাতীয় পরিচয় পত্র
প্রয়োজনীয় ফি/ট্যাক্স/আনুষঙ্গিক খরচসালামি – ১ টাকারেজিস্ট্রেশন ফি – ২৪০ টাকা
সংশ্লিষ্ট আইন/বিধি/নীতিমালা১. কৃষিখাসজমিব্যবস্থাপনাওবন্দোবস্তনীতিমালা১৯৯৭২. এসএ এ্যান্ড টি এ্যাক্ট ১৯৫০৩. ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল ১৯৯০৪. ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশ ১৯৮৪
নির্দিষ্ট সেবা পেতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী প্রতিকারকারী কর্মকর্তাজেলা প্রশাসক
সেবা প্রদান/ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অসুবিধাসমূহক)নাগরিক পর্যায়১. ভূমি বিষয়ে  যথাযথ  জ্ঞানেরঅভাব২. দখল না পাবার আশংকা
খ)সরকারি পর্যায়১. নিষ্কন্টক খাস কৃষি জমি  চিহ্নিত  করা২. মামলার সংশ্লিষ্টতা৩. প্রয়োজনীয় প্রচারের অভাব৪। দখল পুনরুদ্ধার